করোনাকালে উন্নয়ন প্রকল্পের বরাদ্দ কমিয়ে ফেলায় চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) সাতটি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন নিয়ে সঙ্কট তৈরি হবে। গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিভিন্ন সংস্থার আগামী অর্থবছরের বরাদ্দ থেকে সরকার ১ হাজার কোটি টাকা কেটে নিয়েছে। সিডিএর কাছ থেকে কাটা পড়েছে ৩শ কোটি টাকা। সিডিএর বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য দেওয়া ১৭৫৮ কোটি টাকা থেকে ৩০০ কোটি টাকা কেটে নেওয়ায় উন্নয়ন প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন কঠিন হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, চট্টগ্রামে সিডিএর সাতটি বড় প্রকল্প চলছে। এগুলোর কোনোটি শেষ পর্যায়ে, কোনোটি মাঝ পর্যায়ে আছে। কোনোটির কাজ শুরু হয়েছে গত বছর। এর মধ্যে ৫ হাজার ৬শ কোটি টাকার জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্প, প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকার চট্টগ্রাম সিটি আউটার রিং রোড প্রকল্প, ৩ হাজার ২শ কোটি টাকার লালখান বাজার- বিমানবন্দর পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, ২ হাজার ২শ কোটি টাকার কালুরঘাট-শাহ আমানত সেতু সড়ক কাম বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প, ৩শ ২৪ কোটি টাকার ফৌজদারহাট-বায়েজিদ লিংক রোড নির্মাণ প্রকল্প, ২শ ২০ কোটি টাকার বাকলিয়া এঙেস রোড প্রকল্প এবং ৩২ কোটি টাকার মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়ন প্রকল্প রয়েছে। সরকারি উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর জন্য সব অর্থ একই সাথে না দিয়ে প্রতি অর্থবছরে আলাদা করে বরাদ্দ দেওয়া হয়। সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর চাহিদার ভিত্তিতে মন্ত্রণালয় থেকে যাচাই বাছাই করে অর্থ বরাদ্দ নিশ্চিত করা হয়। উপরোক্ত সাত প্রকল্পের জন্য আগামী অর্থবছরের জন্য প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকার চাহিদাপত্র দেয় সিডিএ। মন্ত্রণালয় থেকে করোনাকালসহ সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরে ১৭৫৮ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। সেই টাকা দিয়ে উক্ত সাতটি প্রকল্পের কাজ আগামী জুলাই পর্যন্ত সচল থাকবে। চাহিদা মোতাবেক অর্থ না পেলেও বরাদ্দপাপ্ত টাকা নিজেদের প্রকল্পগুলোর মধ্যে বণ্টন করে কাজ চালিয়ে নেওয়ার আশা করা হচ্ছিল। সিডিএ থেকে ৩শ কোটি টাকা কেটে নেওয়ার ফলে আগামী অর্থবছরে সাতটি বড় প্রকল্পের কাজ চালানোর জন্য সিডিএ পাবে ১৪৫৮ কোটি টাকা। এই টাকায় জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পসহ গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের কাজ চালু রাখা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিডিএর একাধিক কর্মকর্তা জানান, সবগুলো কাজই চলমান। ১৪শ কোটি টাকা সাত প্রকল্পে ভাগ করলে কাজ চালানো সম্ভব হবে না। তাদের প্রশ্ন, জলাবদ্ধতা নিরসন বা এলিভেটেড এঙপ্রেসওয়ে প্রকল্পে দুইশ কোটি টাকায় কী হবে?
সিডিএর প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস বলেন, বিশেষ দুর্যোগ চলছে। করোনা টিকা বা চিকিৎসা এই মুহূর্তে জরুরি। তাই সরকার বিষয়টিকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে প্রকল্প বরাদ্দ কমিয়েছে। এতে প্রকল্প বাস্তবায়নে সংকট তৈরি হবে। ডিসেম্বর মাসে সংশোধিত বাজেটে নতুন করে কিছু বরাদ্দ দেওয়া হয়। ওই সময় বরাদ্দ পাওয়ার চেষ্টা করব। প্রকল্পগুলো গুরুত্বপূর্ণ। এগুলোর কাজ যাতে ব্যাহত না হয় সেদিকে দৃষ্টি রাখা হবে।