সিটি কর্পোরেশনকে বন্ধুত্বের হাতে টেনে তুলল রাইজিং স্টার

ক্রীড়া প্রতিবেদক | মঙ্গলবার , ২১ মে, ২০২৪ at ৯:০২ পূর্বাহ্ণ

কথায় আছে বিপদে বন্ধুর পরিচয়। ঠিক তেমনই একজন অকৃত্রিম বন্ধর পরিচয় দিল রাইজিং স্টার ক্লাব। প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগের অবনমনের সাগরে যখন হাবুডুবু খাচ্ছিল সিটি কর্পোরেশন একাদশ তখন অকৃত্রিম বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিল রাইজিং স্টার ক্লাব। শেষ পর্যন্ত সিটি কর্পোরেশন একাদশকে অবনমনের হাত থেকে রক্ষা করল রাইজিং স্টার ক্লাব। লিগের উত্তেজনা উপরের অংশটা শেষ হয়ে গেলেও নিচের অংশে বজায় ছিল গতকাল পর্যন্ত। কারন গতকাল সিটি কর্পোরেশন এবং রাইজিং স্টার ক্লাবের মধ্যকার ম্যাচে সিটি কর্পোরেশন হারলেই নেমে যাবে প্রথাম বিভাগে। গতকালের ম্যাচটি অবশ্য মোহামেডানের জন্যও ছিল গুরুত্বপূর্ণ। শেষ পর্যন্ত মোহামেডানকে নেমে যেতে হলো প্রথম বিভাগে। আর বন্ধুত্বের পরশে টিকে গেল সিটি কর্পোরেশন। কদিন ধরে স্টেডিয়াম পাড়ায় গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিল সিটি কর্পোরেশন টিকে যাবে প্রিমিয়ারে। সে গুঞ্জনই শেষ পর্যন্ত সত্যি হলো। রাইজিং স্টার ক্লাবকে ৮৯ রানের বিমাল ব্যবধানে হারিয়ে প্রিমিয়ারে টিকে গেল সিটি কর্পোরেশন একাদশ।

গতকালের ম্যাচে অদ্ভুত কিছু ঘঠনা ঘটেছে। যার প্রথমটি হলো এবারের লিগে এই প্রখর রোদে কোন দলই টসে জিতে আগে ফিল্ডিং নেয়নি। গতকাল রাইজিং স্টার নিয়েছে। টসে হেরে ব্যাট করতে নামা সিটি কর্পোরেশন একাদশ ৫৩ রানে ৩ উইকেট হারায়। চতুর্থ উইকেটে নাঈম এবং আরিফ রেজা মিলে যোগ করেন ১০৮ রান। ৬৮ বলে ৭৫ রান করে আরিফ রেজা ফিরলে ভাঙ্গে এজুটি। এখানেও রাইজিং স্টার দারুণ ভুন্সিয়ানার পরিচয় দিয়েছে। পুরো লিগে নতুন বলে বল করেছেন তাদের স্পিনার মুনতাসির। কিন্তু গতকাল তাকে ৪০ ওভারের আগে বোলিংয়েও আনা হয়নি। দলের একজন মাত্র কোটার খেলোয়াড় ছিলেন। তিনি হৃদয় ইসলাম। তিনি আগের প্রতিটা ম্যাচে রাইজিং স্টারের বোলিং এর প্রধান অস্ত্র ছিলেন। কিন্তু গতকাল তার হাতে বল উঠেনি। তিন নাম্বারে ব্যাট করতে নামা আরাফাত খান মিঠুন আঘাত পেয়ে মাঠ ছেড়েছিলেন। আরিফ রেজার আউটের পর তিনি আবার ফিরেন মাঠে। ফিরে নাঈমের সাথে ৪০ রানের জুটি গড়েন। ৫৭ বলে ৪৩ রান করে ফিরেন মিঠুন। তওসিফকে নিয়ে ষষ্ঠ উইকেটে ৪৬ রান যোগ করেন নাঈম। ১০৯ বলে একটি চার এবং ৪টি ছক্কার সাহায্যে ৭১ রান করে ফিরেন নাঈম। পরবর্তীতে তওসিফের ১৩ এবং বাবুর ৯ রানের সুবাধে ২৭০ রান সংগ্রহ করে সিটি কর্পোরেশন একাদশ। যা এবারের লিগে তাদের সর্বোচ্চ দলীয় স্কোর। আগের দশ ম্যাচের ছয়টিতে দুইশ রানের নিচে অল আউট হয়েছে সিটি কর্পোরেশন। সে দলটি কিনা আলাদিনের চেরাগের স্পর্শে করে ফেলল ২৭০ রানের বিশাল ইনিংস। রাইজিং স্টার ক্লাবের পক্ষে ২টি করে উইকেট নিয়েছেন সজিবুল এবং প্রিয়ন্তু। একটি করে উইকেট নিয়েছেন আরাফাত, রাজিব এবং রিফাত।

২৭১ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে সত্যিই বড্ড তাড়াহুড়ো করেছেন রাইজিং স্টারের ব্যাটাররা। ১৪ রানে প্রথম উইকেট হারানো রাইজিং স্টার ৫৬ রানে হারায় ৪ উইকেট। পঞ্চম উইকেটে রিফাত এবং রাজিব মিলে যোগ করেন ৯৩ রান। তখন মনের অজান্তেই যেন সিটি কর্পোরেশন একাদশের কর্মকর্তাদের কপালে চিন্তার ভাজ পড়ে যাচ্ছিল। তবে এজুটি ভাঙতেই যেন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে সিটি কর্পোরেশন একাদশের কর্মকর্তারা। ৩৪ রান করা রাজিবকে ফিরিয়ে এজুটি ভাঙ্গেন সোহেল। এমন ম্যাচেও সেঞ্চুরি করতে না পারলে আর করব কবে, সে মন্ত্রে দিক্ষিত হয়েই যেন এগুচ্ছিলেন রিফাত। কিন্তু তার মনোবাসনা পুরন হয়নি। ৮০ রান করে ফিরেছেন ৯০ বল খেলে। এর পরপরই ১৮১ রানে অল আউট হয় রাইজিং স্টার ক্লাব। শেষ দিকে ১১ রান করেন সাজিবুল। সিটি কর্পোরেশন একাদশের পক্ষে ৪টি উইকেট নিয়েছেন সোহেল। ২টি করে উইকেট য়িেছেন সাজ্জাদ, নান্না এবং আরিফ রেজা।

আজকের ম্যাচে মুখোমুখি হবে পাইরেটস অব চিটাগাং এবং ইস্পাহানী এস সি। খেলাটি শুরু হবে সকাল ৯টায়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধরেগু ইভেন্টের সেমিফাইনালে বাংলাদেশ
পরবর্তী নিবন্ধযুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে প্রথম খেলতে নামছে বাংলাদেশ