করোনার দ্বিতীয় ঢেউ ধীরে ধীরে প্রবল হতে শুরু করেছে। করোনার মহামারী শুরু হওয়ার পর সম্মুখ সারির যোদ্ধা হিসেবে সিএমপির সদস্যরা আক্রান্ত হয়েছিলেন অনেকেই। সিএমপির গোয়েন্দা বিভাগের ডিসি মিজানুর রহমানসহ ৫ সদস্য করোনায় প্রাণ হারিয়েছিলেন। এবার করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময়কালে অতীতের কথা মাথায় রেখে গতকাল ২৮ নভেম্বর শনিবার নতুন করে ২৬ দফা নির্দেশনা দিয়েছে সিএমপি সদর দপ্তর। সিএমপির প্রত্যেক সদস্যকে এ নির্দেশনাবলী পালনের নির্দেশ দিয়েছেন সিএমপি কমিশনার সালেহ্ মোহাম্মদ তানভীর।
করোনা প্রতিরোধে সিএমপির থানা ও ফাঁড়িতে কর্মরত সদস্যদের করণীয় ২৬টি নির্দেশনা হলো -১. প্রত্যেক ফোর্সকে করোনা বিষয়ে সচেতন করে তুলতে হবে। ২. মাস্ক ব্যতীত কেউ ডিউটি করবে না। ফোর্সের মাস্ক না থাকলে মাস্ক সরবরাহ করতে হবে।৩. প্রত্যেক গাড়িতে স্যানিটাইজার থাকবে।৪. থানার সামনে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা রাখতে হবে। ফোর্স ডিউটি থেকে এসে হাত ধুয়ে তারপর থানায় প্রবেশ করবে। পোশাক সম্ভব হলে ধুয়ে ফেলবে নতুবা রোদে শুকাতে দেবে। একই পোশাক পরপর দুইদিন পরবে না। ৫. প্রত্যেক থানায় খাওয়ার জন্য গরম পানির ব্যবস্থা থাকতে হবে। ৬. থানার মেসে প্রতি বেলায় লেবু প্রদান করতে হবে। খাওয়া শেষে এক গ্লাস গরম পানি পান করবে। ৭. প্রতিদিন ফোর্সের তাপমাত্রা মাপতে হবে এবং একটি চার্ট তৈরি করতে হবে। ৮. করোনায় আক্রান্ত হতে পারে এরূপ কাউকে সন্দেহ হলে সাথে সাথে টেস্ট পরবর্তী আইসোলেশনে রাখতে হবে। ৯. কেউ করোনা আক্রান্ত হলে নিয়মিত তার খোঁজ খবর নিতে হবে। কেন আক্রান্ত হলো তা বের করে পরবর্তীতে যেন সবাই সতর্ক থাকে সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্রিফিং করতে হবে।১০. থানায় ফোর্সের ঘনত্ব হালকা করার জন্য বিকল্প আবাসন ব্যবস্থা খুঁজে বের করতে হবে। এক্ষেত্রে অবশ্যই কমিশনার মহোদয়ের অনুমতি নিতে হবে।১১. ডিউটি শেষে অপ্রয়োজনে বাইরে যাবে না। বাইরে যেতে হলে থানার অফিসার ইনচার্জের অনুমতি গ্রহণ করবে এবং রেজিস্ট্রারে স্বাক্ষর করবে। ১২. থানার ডিসইনফেকশন গেটকে সচল করতে হবে। থানার পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করতে হবে। পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করতে প্রত্যেক শনিবার ব্যাপক কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে। ১৩. যে সকল ফোর্স বাসায় বসবাস করছে তাদেরকে ব্রিফিং করতে হবে এবং সতর্ক থাকার জন্য পরামর্শ প্রদান করতে হবে।১৪. ‘মাস্ক নাই, সার্ভিস নাই’ স্লোগানে সকলকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। থানায় আগত দর্শনার্থীদের হাত ধুয়ে থানায় প্রবেশ করতে হবে। দর্শনার্থীদের সর্বোচ্চ সার্ভিস ডেলিভারি কক্ষ পর্যন্ত বসানো যাবে। ভিতরে নেওয়া নিরুৎসাহিত করতে হবে।১৫. ছুটি থেকে আসার পর পুলিশ সদস্যদের কেন্দ্রীয় নির্দেশনা মোতাবেক কোয়ারেন্টাইনে থাকা নিশ্চিত করতে হবে।১৬. সকল ফোর্স ভীড় এড়িয়ে চলবে এবং উিউটির সময় সদা সতর্ক থাকবে।১৭. বাইরের হোটেল/ দোকানে খাওয়া দাওয়া করা, সামাজিক অনুষ্ঠানে গমন, গণপরিবহন ব্যবহারের ক্ষেত্রে সকলকে নিরুৎসাহিত করতে হবে।১৮. থানায় বা কোথাও বসার ক্ষেত্রে, অভ্যন্তরীন সভার ক্ষেত্রে সব জায়গায় সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে হবে।১৯. ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ভিটামিন ‘সি’, ভিটামিন ‘ডি’ গ্রহণের জন্য সকলকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে।২০. প্রতিদিন ফোর্স সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সাড়ে ১১টার মধ্যে বিশ মিনিট রোদে থেকে এ বিষয়ে সকলকে প্রয়োজনীয় ব্রিফিং প্রদান করতে হবে।২১. যাদের ডায়াবেটিস বা উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে তাদের বিষয়ে অধিকতর সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। ২২. পঞ্চাশ বছরের ওপরে যে সকল ফোর্সের বয়স তাদেরকে ডিউটি প্রদানের ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
২৩. এককভাবে নিয়মিত ৩০ মিনিট ব্যায়াম করার ক্ষেত্রে বিশেষ জোর দিতে হবে।
২৪. করোনা বিষয়ে যে পুলিশের পর্যাপ্ত চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে সেই বিষয়ে সকলকে আশ্বস্ত করতে হবে এবং তাদের আস্থা অর্জন করতে হবে।
২৫. সংশ্লিষ্ট বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার, এডিসি, এসি ও ওসি করোনা প্রতিরোধে নিজের থানা, ফাঁড়ির সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।
২৬. থানার প্রবেশ মুখে জীবানুনাশক ফ্লোর ম্যাট থাকবে হবে।