তৃতীয় দিনে এসে বৃষ্টির জন্য কিছুটা ধাক্কা খেয়েছে নগরের সিআরবিতে চলমান বৃক্ষমেলা। প্রথম দুইদিন জমজমাট থাকলেও গতকাল বৈরী আবহাওয়ার কারণে ক্রেতা–দর্শনার্থীর উপস্থিতি ছিল কিছুটা কম। তবে বৃষ্টি কমে এলে মেলা আবারো জমে উঠবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন ব্যবসায়ীরা।
গত ৩১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া মেলা চলবে ১৪ আগস্ট পর্যন্ত। চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগ জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় এ মেলার আয়োজন করে। ৭৩টি নার্সারি ও চারা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে মেলায়। নার্সারির স্টলে পাওয়া যাচ্ছে ফলদ, বনজ, ওষধিসহ নানা প্রজাতির গাছের চারা পাওয়া যাচ্ছে মেলায়। আছে নানা প্রজাতির ফুল গাছের চারা। লাকি বাম্বু, বনসাই, ক্যাকটাস, এডেনিয়াম, অর্কিড, থাই কাঠগোলাপসহ অন্যান্য গাছের চারাও পাওয়া যাচ্ছে। গতকাল পর্যন্ত মেলায় আসা এসব গাছ ও চারার দাম চাওয়া হয় ১০ টাকা থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা দামে।
মেলায় ‘জান্নাত শপ ডট সিটিজি’ এর স্টলে রয়েছে নানা প্রজাতির বনসাই, ক্যাকটাস এবং এডেনিয়াম এর সমাহার। এর মধ্যে ৪২ বছর বয়সী ‘ফাইকাস গ্রিন আইল্যান্ড’ নামে একটি বনসাইয়ের দাম রাখা হয় ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা। চাইনিজ বট নামে পরিচিত এ উদ্ভিদের উচ্চতা আড়াই ফুট। এছাড়া আমার তেতুল, কামিনি, ফাইকাস, বরসেরা, পাকুড়, জেড আমবট নামের বনসাই পাওয়া যাচ্ছে এ স্টলে। ১০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে বিভিন্ন দামে বিক্রি হচ্ছে এসব বনসাই। স্টলটিতে রয়েছে এরাবিকাম সোমালিয়ান গটজি, এমকে এমকে নামের এডেনিয়াম। বিভিন্ন প্রজাতির এসব এডেনিয়াম এর দাম রাখা হয় ৫০ টাকা থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত। এছাড়া ক্যাকটাস বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ৫০০ টাকায়। জান্নাত শপ ডট সিটিজি এর প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ আত–তাওয়াবুল ইসলাম আজাদীকে জানান, ১২ প্রজাতির বনসাই, ৬ প্রজাতির এডেনিয়াম ও ৩০০ প্রজাতির ক্যাকটাস এনেছেন মেলায়। মেলায় বনসাই বিক্রি হয় না জানিয়ে বলেন, পুরো বছরেই দুই–তিনটা বনসাই বিক্রি হয়ে থাকে। মেলায় বনসাই বিক্রি না হলেও ক্যাকটাস ও এডেনিয়াম নিয়ে ক্রেতাদের আগ্রহ রয়েছে জানিয়ে বলেন, প্রথম দুইদিন খুব সাড়া পেয়েছি। আজ (গতকাল) বৃষ্টি হওয়ায় লোকজন তেমন আসেনি।
নওরিন নামে এক দর্শনার্থী বলেন, মেলায় এসে ভালো লাগছে। নানা প্রজাতির গাছ সম্পর্কে জানার সুযোগ হচ্ছে। একইসঙ্গে গাছ রোপণের যে গুরুত্ব সেটাও উপলব্ধি করতে পারছি। বিকেলে সাজিদ নামে এক ক্রেতা বলেন, ফুল গাছের চারা কিনতে এসছিলাম। বৃষ্টির জন্য এসে বেকায়দায় পড়েছি। অন্য একদিন এসে পছন্দের গাছ কিনব।
আলওয়ান মধু জাদুঘর ও গবেষণা কেন্দ্রের স্টলে রয়েছে নোনাপানি সহনীয় গাছের চারা। ২০০ টাকায় কেওড়া, সুন্দরীসহ সুন্দরবন উপকূলীয় এলাকার বিভিন্ন প্রজাতির গাছ বিক্রি হয়েছে এ স্টলে। স্টলটিতে ছাদবাগানে মধু চাষের মৌমাছি বঙও বিক্রি হচ্ছিল। বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখা গেছে, শুধু বিক্রি করছেন না, বাগান ও পরিচর্যা সর্ম্পকিত বিভিন্ন তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করছেন বিক্রেতারা।