শাহাদাতে কারবালা মাহফিল পরিচালনা পর্ষদের আয়োজনে জমিয়তুল ফালাহ মসজিদে আহলে বায়তে রাসূল (দ.) স্মরণে দশদিনব্যাপী ৩৯ তম আন্তর্জাতিক শাহাদাতে কারবালা মাহফিলের গতকাল মঙ্গলবার দ্বিতীয় দিনে দেশি–বিদেশি আলোচকরা বলেছেন, প্রিয় নবী রাহমাতুল্লিল আলামিন হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহচর্যধন্য উম্মতশ্রেষ্ঠ সাহাবায়ে কেরাম পূত–পবিত্র নিষ্কলুষ চরিত্রের অধিকারী, দ্বীনের প্রতীক এবং সত্যের মাপকাঠি। তাঁদের শান মর্যাদা সমুন্নত করেছেন স্বয়ং আল্লাহপাক ও প্রিয় নবী (দ.)। তাই তাঁদের নিয়ে কোনো প্রকার কটূক্তি করা যাবে না। তাঁদেরকে স্মরণ, অনুসরণ ও ভালোবাসা প্রদর্শন করা ফরজ। যারা সাহাবায়ে কেরামের শানে কটূক্তি করে তারা অবশ্যই পথভ্রষ্ট ও গোমরাহিতে নিমজ্জিত। তাঁদের ব্যাপারে ঈমানদার জনতাকে সজাগ থাকতে হবে।
মাহফিলে সভাপতিত্ব্ব করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. ইফতেখার উদ্দীন চৌধুরী। প্রধান অতিথি ছিলেন সংসদ সদস্য মহিউদ্দিন বাচ্চু। তিনি বলেন, নির্যাতিত নিপীড়িত বঞ্চিত অধিকারহারা বিপন্ন মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে তাদেরকে সাহস ও শক্তি জোগানোই হযরত ইমাম হোসাইন (রা.) সহ শাহাদাতে কারবালার দর্শন ও শিক্ষা। জমিয়তুল ফালাহর এই আন্তর্জাতিক শাহাদাতে কারবালা মাহফিল চট্টগ্রামের ইসলামী সংস্কৃতিই ধারণ করে আসছে। এজন্য আমরা আজ গর্ববোধ করি। বিদেশি আলোচক ছিলেন, ভারতের কাসওয়াসা দরবার শরীফের সাজ্জাদানশীন আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ নুরানী আশরাফ আশরাফি আস–সিমনানী। তিনি বলেন, কারবালার চেতনায় বিশ্বে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠা সমস্ত অপশক্তির বিরুদ্ধে শান্তিকামী মানুষকে গর্জে উঠতে হবে। ত্যাগবিহীন প্রেম আল্লাহ ও রাসূলের (দ.) পথে পানিবিহীন সমুদ্রের মতো বলে তিনি উল্লেখ করেন। মাহফিলে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন, মাহফিল পরিচালনা পর্ষদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও চেয়ারম্যান এবং পিএইচপি ফ্যামিলির চেয়ারম্যান সূফি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, ইমাম হোসাইন (রা.) ও আহলে বায়তে রাসূল (দ.) সত্য, ন্যায় ও ইনসাফের প্রতীক। ইনসাফভিত্তিক গণমুখী সমাজ প্রতিষ্ঠার পথে এ মহাত্মারাই আমাদের প্রেরণা। জমিয়তুল ফালাহ মসজিদে শাহাদাতে কারবালা মাহফিল খতিবে বাঙাল অধ্যক্ষ আল্লামা জালালুদ্দিন আলকাদেরীর (রহ.) অনন্য কীর্তি ও সীমাহীন ত্যাগের ফল। এ ধরনের মহত্তম ব্যতিক্রমী ইসলামী সুন্নিয়তের সংস্কৃতি তাঁর দেখাদেখি আজ সারা দেশে এমনকি সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে। এ মাহফিল তাঁর জন্য সদকায়ে জারিয়া। সাহাবায়ে কেরামের মর্যাদা ও ফজিলত নিয়ে আলোচনা করেন, জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদ্রাসার সাবেক অধ্যক্ষ আল্লামা মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ অছিয়র রহমান আলকাদেরী। তিনি বলেন, সাহাবায়ে কেরামকে অন্তর দিয়ে মহব্বত করা এবং তাদের অনুসরণ করাই ঈমানের দাবি। তাঁদের শান মর্যাদায় আঘাত হানলে ঈমানহারা হতে হবে। হযরত আলী (রা.) এর মর্যাদা নিয়ে আলোচনা করেন জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদ্রাসার ফকিহ আল্লামা আবুল হাসান মুহাম্মদ ওমাইর রিজভি। তিনি বলেন, হযরত আলী (রা.) অনন্য সম্মান ও মর্যাদার অধিকারী। তাঁর শান মর্যাদা সমুন্নত করেছেন স্বয়ং প্রিয় নবী (দ.)।
মাহফিলে অতিথি ছিলেন কাউন্সিলর চৌধুরী মুহাম্মদ হাসান মাহমুদ হাসনী, গাউসিয়া কমিটির চেয়ারম্যান পেয়ার মোহাম্মদ, শাহ্ মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন আলকাদেরী, দিদারুল আলম চৌধুরী, গাউসিয়া কমিটির মহাসচিব শাহজাদ ইবনে দিদার। কোরআন মজিদ থেকে তেলাওয়াত করেন ক্বারী শাইখ আহমাদ বিন ইউসুফ আল আজহারী। নাতে রাসুল (দ.) পেশ করেন শায়ের মোহাম্মদ তানভীর। মাহফিলে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন গাউছিয়া কমিটির চেয়ারম্যান পেয়ার মোহাম্মদ, পিএইচপি ফ্যামিলির পরিচালক ও মাহফিলের প্রধান সমন্বয়ক আলী হোসেন সোহাগ, জমিয়তুল ফালাহ মসজিদের খতিব মওলানা আবু তালেব মো. আলাউদ্দিন, খোরশেদুর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ারুল হক, সিরাজুল মোস্তফা, প্রফেসর কামাল উদ্দিন আহমদ, দিলশাদ আহমেদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা দিদারুল আলম, কবির চৌধুরী, মোহম্মদ সাইফুদ্দিন, জাফর আহমদ সওদাগর, আবদুল হাই মাসুম, শাহাজাদা শফিউল আজম, হাফেজ সালামত উল্লাহ, এস এম সফি, ক্যাপ্টেন এনামুল হক, মনসুর শিকদার, মাহবুবুল আলম, খোরশেদ আলী চৌধুরী, মৌলানা নুর মোহম্মদ সিদ্দিকী, হাফেজ মাওলানা আহমদুল হক, হাফেজ জালালুদ্দীন, মাইনুদ্দিন মিঠু, মিলন মেহেদী, মো. সাহাবুদ্দিন, শরফুদ্দীন জঙ্গী, অধ্যাপক অহিদুল আলম প্রমুখ। সালাত সালাম শেষে দেশ ও বিশ্ববাসীর শান্তি সমৃদ্ধি কামনায় মোনাজাত করা হয়। মাহফিলের ৬ষ্ঠ দিন থেকে পর্দা সহকারে মহিলাদের জন্য আলোচনা শোনার ব্যবস্থা থাকবে। মাহফিল সরাসরি সম্প্রচার হচ্ছে : sufitvonline, www.shahadat-e-karbala.com। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।