মৃত ব্যক্তির স্বাক্ষর জাল করে দশ বছর ধরে কোটি কোটি টাকার সার উত্তোলন এবং পাচারকারীদের বিচার দাবি করা হয়েছে। গতকাল সারের সেই মৃত ডিলারের মালিকের পুত্র মোহাম্মদ ইসহাক মিয়া দুর্নীতি দমন কমিশন, জেলা প্রশাসনক এবং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বরাবরে পত্র দিয়েছেন। গতকাল রোববার পত্রটি সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোতে জমা দিয়ে তিন ব্যক্তিকে এই ঘটনার জন্য দায়ী করা হয়েছে।
সূত্র জানিয়েছে, ফটিকছড়ির বক্তপুর ইউনিয়নের সার ডিলার হিসেবে তালিকাভুক্ত ছিলেন পটিয়ার ভাটিখাইন গ্রামের মৃত কালা মিয়ার পুত্র আলহাজ্ব আবদুল ছবুর। বাংলাদেশ ক্যামিকেল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশনের (বিসিআইসি) তালিকাভুক্ত সার ডিলার হিসেবে তিনি রাষ্ট্রায়াত্ত সার কারখানাগুলো থেকে প্রতি মাসে সার উত্তোলন করে ফটিকছড়ির কৃষকদের নিকট বিক্রি করতেন। গত ২০১১ সালের ১৮ মার্চ আলহাজ্ব আবদুল ছবুর মারা যান। কিন্তু তিনি যে মাসে মারা গেছেন ওই মাস থেকে শুরু করে গত দশ বছর ধরে প্রতি মাসেই তার স্বাক্ষর জাল করে সার উত্তোলন করা হয়েছে। সার উত্তোলন করে তা এলাকায় বিক্রির ব্যাপারে সরকারি বিভিন্ন পর্যায়ের দেখভালের নিয়ম থাকলেও সব কাগজপত্রই গত দশ বছর ধরে স্বাক্ষরিত হয়েছে। আলহাজ্ব আবদুল ছবুর মারা গেলেও তার নামের লাইসেন্সে তার স্বাক্ষর জাল করে তাকে দিয়ে অপরের স্বাক্ষর সত্যায়িত করিয়ে নানা কৌশলে কোটি কোটি টাকার সার উত্তোলন করা হয়েছে। এসব সারের একটি বড় অংশ মায়ানমারে পাচারের অভিযোগও রয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে মরহুম আলহাজ্ব আবদুল ছবুরের পুত্র ইসহাক মিয়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক বরাবরে গতকাল একটি পত্র দিয়েছেন। যাতে আবু শাহাদাত, মোহাম্মদ আজগর বৈদ্য এবং মনির আহমদ নামের তিন ব্যক্তির নামোল্লেখ করে তাদেরকে এই ঘটনার জন্য দায়ী করেন তিনি। ইসহাক মিয়া লিখিতভাবে অভিযোগ করেছেন, তিনি আবু শাহাদাতের কাছে গেলে মৃত ব্যক্তির লাইসেন্স বাতিল হয়ে যায় বলে তাকে বিভ্রান্ত করেন। তিনি অন্য ব্যবসায় আত্মনিয়োগ করেন। অথচ তার পিতার লাইসেন্সের বিপরীতে প্রতি বছরই কোটি কোটি টাকার সারের ব্যবসা হয়েছে। তিনি চট্টগ্রামের সার ও বীজ মনিটরিং কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক, দুর্নীতি দমন কমিশনের উপ পরিচালক, ফটিকছড়ির উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, ফটিকছড়ির কৃষি কর্মকর্তাকেও পত্র দিয়েছেন।
তিনি তার পিতার স্বাক্ষর জাল করে কোটি কোটি টাকার সার উত্তোলন এবং তা বিদেশে পাচার করে দেশের ক্ষতিসাধন করার সাথে জড়িত তিন ব্যক্তির বিচার দাবি করেছেন।