দৃষ্টিনন্দন ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের অপার সম্ভাবনাময় স্থান রাঙামাটির কাউখালী উপজেলার ঘাগড়া–কাউখালী সংযোগ সড়ক। এই সড়কটির দুপাশে সারি সারি সবুজ বৃক্ষের সমারোহ দেখে যেকোন পর্যটক বিমোহিত হয়ে পড়বেন। পাহাড়ের মাঝখান দিয়ে তৈরি করা এই সড়কটি এ এলাকার মানুষের চিকিৎসা, শিক্ষা ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের পাশাপাশি রাঙামাটিসহ দেশের বিভিন্নস্থান থেকে ঘুরতে আসা পর্যটকদের জন্য দর্শনীয় স্থান হিসেবে পরিচিতি লাভ করবে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) কাউখালী উপজেলা অফিস সূত্রে জানা গেছে, ঘাগড়া–কাউখালী সংযোগ সড়কটি হচ্ছে ৯.৬ কি;মি। এর মধ্যে গত ২০২২–২৩ অর্থ বছরে এই সড়কের ৫ কি.মি. রাস্তা সংস্কার করা হয়। এই সড়কের সংস্কারের মোট বাজেট ছিল ২ কোট ৮০ লক্ষ টাকা।
এদিকে, কাউখালী সড়কের যাত্রী সৌরভ তালুকদার বলেন, সড়কটি মেরামত হওয়ায় আগের চেয়ে অনেক ভালো হয়েছে। এখন যাতায়াতের ক্ষেত্রে কোনো দুর্ভোগ পোহাতে হয় না। সড়কটি নতুনভাবে সংস্কার হওয়ার ফলে এই এলাকায় যারা কৃষিকাজ করেন এবং ফলজ ও বনজ বাগান করেন তাদের পরিবহন খরচও অনেকাংশে কমে গেছে।
কাউখালী উপজেলার স্থানীয় সাংবাদিক মেহেদী হাসান সোহাগ বলেন, সড়কটি দিয়ে রাঙামাটি–কাউখালী স্বল্প সময়ে আসার জন্য খুবই সহজ মাধ্যম। তিনি বলেন, ঘাগড়া চেলাছড়া সড়কটি ভবিষ্যতে পর্যটকদের জন্য একটি আকর্ষণীয় স্থান হিসেবে পরিচিতি লাভ করতে পারে। এর পাশাপাশি এটি রাঙামাটির টুরিজ্যম প্রসারের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছি।
রাঙামাটির ঘাগড়ার কাঠ ব্যবসায়ী মো. কবির বলেন, ২০১৮–১৯ সালের দিকে এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করতে আমাদের খুবই কষ্ট হতো। বর্তমানে এই সড়কটি দিয়ে মালামাল নিয়ে আমরা কম সময়ের মধ্যে চলে যেতে পারি। আমরা ঘাগড়া–কাউখালী খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে চলে যেতে পারছি।
ঘাগড়া–কাউখালী– চেলাছড়া সড়কের সিএনজি চালক মো. আসু জানান, রাঙামাটি–রানীরহাট সড়ক দিয়ে কাউখালী যেতে সময় লাগে প্রায় এক থেকে দেড় ঘণ্টা। আর এই সড়ক দিয়ে কাউখালী যেতে সময় লাগে ৪০ মিনিটের মতো। এই সড়কটি আগে থেকে অনেক সুন্দরও হয়েছে।
ঘাগড়া–কাউখালী সড়কের চেলাছড়া এলাকার বাসিন্দা শ্রমিক উষাখই মারমা বলেন, এই সড়কটি যখন ভাঙা ছিল তখন আমাদের চলাফেরা করতে খুবই কষ্ট হতো। বর্তমানে এই সড়কটি আবারো নতুন করে তৈরি করায় আমরা উপকৃত হয়েছি। তিনি বলেন, আগে কেউ অসুস্থ হলে পায়ে হেঁটে হাসপাতালে নিয়ে যেতো হত। কিন্তু এখন মুহূর্তের মধ্যে গাড়িতে করে হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারছি।
এলজিইডি কাউখালী উপজেলা প্রকৌশলী বলেন, এটি হচ্ছে কাউখালী উপজেলার এটি বিকল্প সড়ক। এই সড়কটি দিয়ে যাতায়াত করলে কমপক্ষে আধাঘণ্টা সময় কম লাগে। এই সড়কটিতে ৫ কি.মি. নতুন সংস্কার করা হয়েছে। সড়কটি দৃষ্টিনন্দন হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে রাঙামাটি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী আহমদ শফি বলেন, আমরা এই সড়কটি ২ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে সংস্কার করেছি। এখানে অনেকগুলো ড্রেন, প্রতিরক্ষা দেয়াল করা হয়েছে।
এটি টুরিজ্যমের বিকাশে বিশাল ভূমিকা রাখবে। এটি ব্যবহার করে কাউখালী যেতে প্রায় ৩০ মিনিটি সময় কম লাগে। তিনি বলেন, এই সড়কটি দিয়ে স্থানীয় মানুষের পাশাপাশি বাইকারদেরও যাতায়াত বেড়েছে অনেক।