সাময়িক বরখাস্ত চসিকের উপ-সহকারী প্রকৌশলী

তদন্তে ঘুষ নেয়ার প্রমাণ

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ২২ আগস্ট, ২০২৪ at ৬:০৩ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) উন্নয়ন কাজের বিপরীতে ঠিকাদার থেকে ৬১ লাখ টাকা ‘ঘুষ’ নেয়ার অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় সংস্থাটির এক উপসহকারী প্রকৌশলীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তার নাম গাজী জয়নাল আবেদিন। গত রোববার তাকে বরখাস্ত করা হলেও গতকাল বুধবার বিষয়টি জানাজানি হয়।

এর আগে ঘুষ নেয়ার অভিযোগে গঠিত চসিকের তদন্ত কমিটি ঘুষ নেওয়ায় জয়নাল আবেদিনের ‘গুরুদণ্ড’ পাওয়া উচিত সুপারিশ করে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। প্রতিবেদনে একই ঘটনায় নির্বাহী প্রকৌশলী (অতিরিক্ত দায়িত্ব) রিফাতুল করিম চৌধুরীকে ‘সতর্ক’ করার সুপারিশ করা হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম আজাদীকে বলেন, একজনকে সাময়িক বরখাস্ত করেছি এবং আরেকজনকে শো’কজ করব।

চসিক সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালের ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের সড়ক উন্নয়ন কাজের দরপত্র আহ্বান করা হয়। ৩ কোটি ২১ লাখ ২৭ হাজার ৯১৯ টাকার এ উন্নয়ন কাজ করে নাওয়াল কনস্ট্রাকশন এবং মাবাবা কনস্ট্রাকশন কোম্পানি। প্রতিষ্ঠানটির মালিক আয়নুল হাসানের অভিযোগ, দরপত্র থেকে শুরু করে বাস্তবায়ন পর্যন্ত বিভিন্ন পর্যায়ে তার কাছ থেকে ৬১ লাখ টাকা ঘুষ নেয়া হয়। এর মধ্যে জয়নাল আবেদিন নিজ হাতে নগদ নিয়েছেন ৪২ লাখ টাকা এবং তার স্ত্রীর ব্যাংক হিসাবে জমা দেওয়া হয় সাড়ে ১০ লাখ টাকা। এছাড়া বাকি টাকা অন্যদের দিতে হয়েছে।

অভিযোগটি সামনে আসার পর গত ১২ জুন রিফাতুল করিম চৌধুরী এবং জয়নাল আবেদিনকে ওএসডি করে চসিক। একইদিন অভিযোগ তদন্তে চসিকের পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা কমান্ডার লতিফুল হক কাজমীকে আহ্বায়ক, আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিমকে সদস্য সচিব ও আইন কর্মকর্তা মো. জসিম উদ্দিনকে সদস্য করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। সম্প্রতি কমিটি তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়।

প্রতিবেদনে দুটি সুপারিশ করা হয়। এতে বলা হয়, গাজী জয়নাল আবেদীনের বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে এবং এরূপ কার্যকলাপ দ্বারা তিনি গুরুতর অসদাচরণে লিপ্ত হয়েছেন। এ জন্য তার গুরুদণ্ড পাওয়া উচিত বলে তদন্ত কমিটি অভিমত ব্যক্ত করে। তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে।

এছাড়া দ্বিতীয় সুপারিশে বলা হয়, রিফাতুল করিম চৌধুরীর বিরুদ্ধে ঘুষের কোনো অভিযোগ প্রমাণিত না হলেও কর্পোরেশনের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা হিসেবে অন্যান্যদের মধ্যে সংঘটিত লেনদেনের স্থানে তার উপস্থিতি পেশাগত আচরণ বহির্ভূত। এরূপ অপেশাদার কার্যকলাপের জন্য তাকে সতর্ক করা যেতে পারে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআর কখনো যেন স্বৈরাচারের প্রেতাত্মারা ফিরে না আসে
পরবর্তী নিবন্ধসেনা পরিচয়ে প্রতারকদের বিষয়ে সতর্ক থাকার আহ্বান আইএসপিআরের