ব্যাংকগুলোর চাহিদা মেটাতে নিয়মিত ডলার বিক্রির মধ্যে আমদানি দায় মেটাতে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নে (আকু) সবশেষ অর্থ পরিশোধের পর দেশের বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২৯ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার। সাত বছর পর বাংলাদেশ ব্যাংকে রক্ষিত রিজার্ভ ৩০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নামল। আকুতে মার্চ ও এপ্রিল দুই মাসের আমদানি ব্যয়ের জন্য ১ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার পাঠানো হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মেজবাউল হক জানান, আকুর অর্থ পরিশোধের পর রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২৯ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার। বড় ধরনের এ আমদানি ব্যয় মেটানোর আগে গত ২ মে রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৩০ দশমিক ৯৮ বিলিয়ন ডলার। খবর বিডিনিউজের।
এর আগে সবশেষ ২০১৬ সালের ২২ জুন রিজার্ভ ছিল ২৯ দশমিক ৮৫ বিলিয়ন ডলার। আট দিনের মাথায় ৩০ জুন তা বেড়ে ৩০ দশমিক ১৩ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছায়। এরপর তা ক্রমান্বয়ে বেড়ে ২০২১ সালের আগস্টে রেকর্ড ৪৮ দশমিক ০৬ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছায়। করোনাভাইরাস সংক্রমণ কমে আসতে থাকলে মহামারীর মন্দা কাটিয়ে অর্থনীতিতে পুনরুদ্ধার গতি পেলে আমদানি ব্যয় বাড়তে থাকে। এরপর রিজার্ভ থেকে সেই অর্থ পরিশোধ বাড়লে বাংলাদেশ ব্যাংকে রক্ষিত দেশের বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ কমতে থাকে। ইউক্রেন–রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি আরও চাপ তৈরি করে। এতে রিজার্ভ কমে সাত বছরের সর্বনিম্ন পর্যায়ে এলো।
রোববার আন্তর্জাতিক মুদ্রা লেনদেন বন্ধ থাকায় গতকাল সোমবার আকুর অর্থ পরিশোধের নিশ্চয়তাপত্র (কনফারমেশন ভাউচার) পেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, বাংলাদেশের আমদানির বর্তমান যে ধারা তাতে এখনকার রিজার্ভের সমপরিমাণ অর্থ দিয়ে সাড়ে তিন মাসের বেশি আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব। একটি দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে অন্তত তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর মতো বিদেশি মুদ্রার মজুদ থাকলে তাকে স্বস্তিদায়ক পরিস্থিতি হিসেবে ধরে থাকেন অর্থনীতিবিদ ও বিশ্লেষকরা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, ২০১৪ সালের জুনে রিজার্ভ ছিল ২১ দশমিক ৫৫ বিলিয়ন ডলার। এরপর থেকে রপ্তানি ও রেমিটেন্সে ভর করে ধারাবাহিক ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা শুরু হয় দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে। তা পর্যায়ক্রমে বেড়ে ২০২১ সালের আগস্টে ৪৮ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যায়।