চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আওতাধীন সাতটি ইউনিটে পাল্টা কমিটি ঘোষণা করেছেন সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক আলী আব্বাস। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে কমিটি ঘোষণা করেন তিনি।
ইউনিটগুলো হচ্ছে বাঁশখালী উপজেলা ও পৌরসভা, বোয়ালখালী উপজেলা ও পৌরসভা, চন্দনাইশ উপজেলা ও পৌরসভা এবং লোহাগাড়া উপজেলা। গত ৩১ ডিসেম্বর এ সাতটি ইউনিটসহ নয়টি ইউনিটে দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান ও সদস্য সচিব মোস্তাক আহমেদ খাঁনের যৌথ স্বাক্ষরে কমিটি ঘোষণা করা হয়েছিল। কমিটি ঘোষণার পর তৃণমূলের ত্যাগীদের মূল্যায়ন করা হয়নি দাবি করে বোয়ালখালী পৌরসভার আহ্বায়ক পদত্যাগের ঘোষণা দেন। এছাড়া বাঁশখালীতে পদবঞ্চিতরা বিক্ষোভ করেছিল।
এদিকে গতকাল সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আলী আব্বাস বলেন, ২০১৯ সালের ৩ অক্টোবর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত পত্রের নির্দেশনা অনুসারে আহ্বায়ক কমিটির ৩ জনের যৌথ স্বাক্ষরে ইউনিট কমিটি করা হবে। কিন্তু আমার স্বাক্ষর না নিয়ে দলের সাবেক অধিকাংশ ছাত্রনেতাকে বাদ দিয়ে কমিটি ঘোষণা করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আলী আব্বাস দাবি করেন, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশনা ছিল জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির ৬৫ সদস্যকে নিয়ে তাদের মতামত সাপেক্ষে দলের যেকোন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ, উপজেলা ও পৌরসভা কমিটি গঠনের ব্যাপারে মতামত গ্রহণ, প্রয়োজনবোধে প্রত্যক্ষ ভোটের ব্যবস্থা করা। কিন্তু এ নির্দেশনা মানা হয়নি।
লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ করা হয়, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি জাফরুল ইসলাম চৌধুরীর নির্দেশে বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, আবু সুফিয়ান, মোস্তাক আহমদ অনৈতিক সুবিধা আদায়ের মাধ্যমে দলের স্বার্থকে বিসর্জন দিয়েছেন। তাই ইতোমধ্যে ৫টি ইউনিটের আহ্বায়ক ও সচিবগণ পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছে।
এ বিষয়ে দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান দৈনিক আজাদীকে বলেন, দুজনের স্বাক্ষরে কমিটি ঘোষণার বিষয়ে কেন্দ্র থেকে আমাদের মৌখিকভাবে নির্দেশনা দিয়েছিল। তাছাড়া আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব স্বাক্ষর করলে সেখানে যুগ্ম আহ্বায়ককে করতে হবে কেন? এখন যুগ্ম আহ্বায়কের স্বাক্ষরে যে কমিটি দিল সেখানে তো তিনজনের নাই।
আবু সুফিয়ান বলেন, যে ৯টি কমিটি ঘোষণা করেছি সেগুলোর বিষয়ে তারও (আলী আব্বাস) সম্মতি ছিল। কর্ণফুলী ও আনোয়ারা উপজেলায় তার ইচ্ছেমত কমিটি দেয়ার আবদার করেন। সেটা না করায় তিনি স্বাক্ষর করেননি।
পাল্টা কমিটিতে কারা আছেন : বাঁশখালী উপজেলায় আহ্বায়ক মো. ইব্রাহিম খলিল, সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মহিউদ্দীন সিকদার; বাঁশখালী পৌরসভায় আহ্বায়ক কামরুল ইসলাম হোসাইনী, সদস্য সচিব শাহাদাত হোসেন আজগর; বোয়ালখালী উপজেলায় আহ্বায়ক শওকত আলম, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ইকবাল পাশা, সদস্য সচিব হামিদুল হক মন্নান চেয়ারম্যান; বোয়ালখালী পৌরসভায় আহ্বায়ক মেয়র হাজী আবুল কালাম আবু, সদস্য সচিব মোহাম্মদ আলী; লোহাগাড়া উপজেলায় আহ্বায়ক সাজ্জাদুর রহমান, সদস্য সচিব সালাহ উদ্দীন চৌধুরী সোহেল; চন্দনাইশ উপজেলায় আহ্বায়ক সালাউদ্দীন চৌধুরী, সদস্য সচিব শাহানাজ বেগম (মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান); চন্দনাইশ পৌরসভায় আহ্বায়ক সিরাজুল ইসলাম সওদাগর, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ইউনুছ বাবুল, সদস্য সচিব মোরশেদুল আলম মিন্টু।
এদিকে গতকাল সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন যথাক্রমে অধ্যাপক শেখ মো. মহিউদ্দীন, ইদ্রিচ মিয়া, অ্যাডভোকেট ফোরকান, আব্দুল গফ্ফার চৌধুরী, বদরুল খায়ের চৌধুরী, আসহাব উদ্দীন চৌধুরী, এম মনজুর উদ্দীন চৌধুরী, কামরুল ইসলাম হোসাইনী, মুজিবুর রহমান চেয়ারম্যান, আজিজুল হক চেয়ারম্যান, লেয়াকত আলী চেয়ারম্যান, এডভোকেট নুরুল ইসলাম, মেয়র হাজী আবুল কালাম আবু, সিরাজুল ইসলাম, হাজী রফিক, নবাব মিয়া, হামিদুল হক মান্নান চেয়ারম্যান, মোক্তার আহমদ, জিয়া উদ্দীন চৌধুরী আশফাক, সাজ্জাদ হোসেন, এস এম সলিম উদ্দীন খোকন চৌধুরী, জসিম উদ্দীন আব্দুল্লাহ, জসিম উদ্দীন, শওকত আলম প্রমুখ।