সাতকানিয়ায় দুর্বৃত্তের ছোড়া এসিডে দগ্ধ দোকান কর্মচারী চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে। তার নাম মো. সাদেক (২০)। গত ২৯ জুন রাতে চট্টগ্রাম–কক্সবাজার মহাসড়কের সাতকানিয়াস্থ মালেক মেম্বারের ইটভাটা এলাকায় দুর্বৃত্তের ছোড়া এসিডে দগ্ধ হয় এবং চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত সোমবার রাতে মারা যায়। সে লোহাগাড়া উপজেলার পুটিবিলা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের সড়াইয়া বলির জুম এলাকার বজলুর রহমানের ছেলে।
সাদেকের বড় ভাই মোহাম্মদ শাহজাহান জানান, আমার ভাই সাতকানিয়ার কেঁওচিয়া ইউনিয়নের নয়া পাড়া এলাকার বাসিন্দা আবু তৈয়বের কেরানীহাটস্থ মুরগির দোকানে চাকরি করতো। আবু তৈয়ব এবং তার প্রতিবেশী অ্যাডভোকেট নামিজ উদ্দিনের মধ্যে জায়গা জমি নিয়ে বিরোধ রয়েছে। গত ২৬ জুন আবু তৈয়ব তার ঘরের ছাদ ঢালাইয়ের সময় নাজিম উদ্দিনদের সাথে ঝামেলা হয়। এসময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত আমার ভাই সাদেক হয়তো মালিকের পক্ষ হয়ে কথা বলেছে। এ জন্য নাজিম আমার ভাইকে দেখে নেয়ার হুমকি দিয়েছিল।
গত বুধবার রাতে আমার ভাই সাদেক দোকান বন্ধ করে তার দোকান মালিক তৈয়বের ঘরে ফিরছিল। এসময় পূর্বে থেকে ওঁৎপেতে থাকা নাজিম ও তার সহযোগিরা আমার ভাইকে আটক করে মারধরের পর এসিড ছোড়ে মারে। এতে আমার ভাইয়ের শরীর ঝলসে যায়। আমার ভাইয়ের আত্মচিৎকারে লোকজন এগিয়ে আসলে এসিড নিক্ষেপকারীরা পালিয়ে যায়। পরে লোকজন তাকে উদ্ধার করে সাতকানিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানে দায়িত্বরত চিকিৎসক চমেক হাসপাতালে প্রেরণ করেন। চমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত সোমবার রাতে মারা যায়।
এদিকে, অভিযুক্ত অ্যাডভোকেট নাজিম উদ্দিন বলেন, গত ২৬ জুন তৈয়ব অনেকটা জোর করে আমার বাড়ির উপর পর্যন্ত ছাদ ঢালাই করেছে। এ ঘটনায় প্রতিবাদ করায় তৈয়ব এবং তার লোকজন আমার মা ও দুই ভাইকে মারধর করেছে। এ ঘটনায় আমি মামলা করেছি। এসিড নিক্ষেপের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, গত বুধবার থেকে গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত আমি কখন কোথায় ছিলাম তা প্রযুক্তির মাধ্যমে আমার মোবাইল চেক করলে এবং বিভিন্ন স্থানের সিসিটিভির ফুটেজ দেখলে প্রমাণ হয়ে যাবে। তবে আমি শুনেছি গত ২৯ জুন রাত ৯ টা ৫৯ মিনিটে রোডভিউ রেস্টুরেন্টের সামনে একটি ট্রলি (ভটভটি) উল্টে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটেছে। এসময় ট্রলি থেকে গরম পানি পড়ে তৈয়বের দোকান কর্মচারী সাদেকের শরীরের কিছু অংশ ঝলসে গিয়েছিল। ্এর বাইরে এসিড নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে কিনা জানিনা।
লোহাগাড়ার পুটিবিলা ইউপি চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, এসিডে দগ্ধ হয়ে সাদেক মারা যায়। ময়নাতদন্ত শেষে গতকাল তাকে দাফন করা হয়েছে। আমি এ ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তার পূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। সাতকানিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ তারেক মোহাম্মদ আবদুল হান্নান জানান, দোকান কর্মচারী সাদেকের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে তার পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। এঘটনায় একটি মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।