সাতকানিয়ার এওছিয়া ইউনিয়নে ডাকাত সন্দেহে স্থানীয় জনতার গণপিটুনিতে ২ জন নিহত হয়েছে। এ সময় ৫ জন গ্রামবাসী গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন। গতকাল সোমবার রাতে এওছিয়া ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ড ছনখোলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়ভাবে জানা যায়, রাত ১০টার দিকে ৪টি সিএনজি টেক্সি করে ছনখোলা এলাকায় একদল ডাকাত প্রবেশ করার সংবাদ স্থানীয় মসজিদের মাইকে প্রচার করা হয়। এ সময় এলাকাবাসী টেক্সিগুলোকে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে। তখন টেক্সি আরোহীরা এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়ে। এতে ৪ জন গ্রামবাসী গুলিবিদ্ধ হন। গুলিবিদ্ধরা হলেন ওবায়দুল (২২), নাসির উদ্দীন (৩৮), আব্বাস (৩৮), মামুন সওদাগর (৪৮) ও সাঈদ (২২)। গুলিবিদ্ধ আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসার পর চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
ঘটনার সময় স্থানীয় জনতার গণপিটুনিতে দুজন ঘটনাস্থলে নিহত হয়। নিহত একজনের কাছে থাকা একটি পিস্তল এবং ৮ রাউন্ড খোসা উদ্ধার করা হয়। তবে নিহতদের পরিচয় এ রিপোর্ট লেখার সময় পর্যন্ত নিশ্চিত করতে পারেনি পুলিশ।
স্থানীয় একটি সূত্রে বলা হয়, কাঞ্চনার নেজাম নামে একজন গত ৫ আগস্টের পর মধ্যপ্রাচ্য থেকে দেশে ফেরেন। অভিযোগ উঠেছে, বিদেশ থেকে ফিরেই তিনি এলাকায় চাঁদাবাজি, ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপকর্ম শুরু করেন। গতকাল রাতে নেজাম আরো কয়েকজনকে নিয়ে ছনখোলা এলাকায় যান। তারাবি নামাজ পড়ে বের হওয়া মুসল্লিরা নেজাম গ্রুপকে দেখতে পেয়ে তাদের ঘিরে ফেলে এবং মসজিদের মাইকে ঘোষণা দেয় এলাকায় ডাকাত পড়েছে। এ সময় ক্ষিপ্ত হয়ে নেজাম এলাকাবাসীর ওপর গুলি চালায়। এতে কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হলে ক্ষিপ্ত এলাকাবাসী নেজাম ও তার সাথে থাকাদের গণপিটুনি দেয়। এতে ঘটনাস্থলে নেজাম ও ছালেক নামে দুজন মারা যায়।
সাতকানিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জাহেদুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, ৪টি সিএনজি টেঙিযোগে ডাকাতির উদ্দেশ্যে একদল ডাকাত ছনখোলা এলাকায় প্রবেশ করেছে বলে স্থানীয়রা মসজিদের মাইকে ঘোষণা দেয়। পরবর্তীতে স্থানীয় জনতার গণপিটুনিতে ঘটনাস্থলে দুজনের মৃত্যু হয়। এর আগে তাদের এলোপাতাড়ি গুলিতে স্থানীয় ৪ ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হয়। এ ঘটনায় নিহতের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের পরিচয় শনাক্ত করতে পুলিশ কাজ করছে।
ঘটনার খবর পেয়ে রাতে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম শান্তু, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিল্টন বিশ্বাস ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
এদিকে বিডিনিউজ জানায়, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির (জেলা) দায়িত্বরত এসআই আলাউদ্দিন তালুকদার বলেন, আহত পাঁচজনকে প্রথমে এখানে আনা হয়েছিল। পরে তাদেরকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।