সাতকানিয়ায় চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে পিকআপ চালকের মৃত্যু

সাতকানিয়া-লোহাগাড়া প্রতিনিধি | বৃহস্পতিবার , ৩০ মে, ২০২৪ at ২:৫৯ অপরাহ্ণ

এক সপ্তাহ পূর্বে ২০ বস্তা ধান চুরি হয়েছিল চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার আমিলাইশ ইউনিয়নের সরওয়ার বাজার এলাকা থেকে। ওই একই এলাকায় নির্মাণাধীন ভবনের সামনে ২৯ মে (বুধবার) রাত আনুমানিক সাড়ে আটটার সময় ধান চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে মেরে ফেলা হয়েছে এক লেগুনা পিকআপ চালককে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে আমিলাইশ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক চৌধুরী দৈনিক আজাদীকে বলেন, ক্ষেত থেকে ধান মাড়াই করার পর শুকানোর জন্য রাস্তার পাশে রাখা হয়েছিল, তবে পূর্বে ধান চুরি হওয়ার কারণে পাহারা দিচ্ছিলো লোকজন এমন সময় পিকআপে ধানের বস্তা তুলতে দেখে এলাকাবাসী এগিয়ে আসলে পিছনে থাকা চোরের দল পালিয়ে গেলে পিকআপ চালককে গণপিটুনি দেয় উত্তেজিত জনতা এতে ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়।

গণপিটুনিতে নিহত পিকআপ চালক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন (৩২) উপজেলার ছদাহা ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড সরদার পাড়া এলাকার লম্বা কালুর বাড়ির আলি আহামদের বড় ছেলে বলে জানা গেছে।

নিহতের পিতা আলি আহামদ দৈনিক আজাদীকে বলেন, আমার ছেলে পিকআপ চালায়, কে বা কাহারা মাগরিবের পর ধান আনতে হবে বলে আমার ছেলের গাড়িটা ভাড়া করে নিয়ে যায়, এশার নামাজের পর আমিলাইশ থেকে ফোন করে বলা হয় এখানে গাড়ির পাশে লাশ পড়ে আছে।

১৭ দিন আগে আমার ছেলের জন্য বউ এনেছি এখনো মেহেদীর রঙ শুকায়নি এরই মাঝে আমার ছেলেটাকে পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে।

ছদাহা ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মুজিবুর রহমান মুজিব দৈনিক আজাদীকে বলেন, নিহত পিকআপ চালক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন আমার এলাকার আলি আহমদের পুত্র। তাঁকে এবং তাঁর পরিবারকে আমি ব্যাক্তিগত ভাবে চিনি, সে কখনো এই ধরনের কার্যকলাপের সাথে যুক্ত থাকতে পারেনা।

না জেনে হয়ত সে ভাড়ায় গিয়েছিল তাই চোরের দল পালিয়ে গেলেও সে গাড়িতে বসে ছিলো তাঁকে গণপিটুনিতে মেরে ফেলা হয়েছে। এটি একটি অমানবিক ঘটনা।

জানতে চাইলে সাতকানিয়া থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রিটন সরকার দৈনিক আজাদীকে বলেন, আমিলাইশ সরওয়ার বাজার এলাকায় পল্লী বিদ্যুৎ সাব স্টেশনের নির্মাণাধীন ভবনে স্থানীয় লোকজন ধান কেটে শুকানোর জন্য রেখেছিলেন। এক সপ্তাহ পূর্বেও সেখান থেকে ২০ বস্তা ধান চুরি হয়েছিল।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে তাঁরা পাহারা বসিয়েছিলো এমতাবস্থায় চোরের দল ৫ বস্তা ধান গাড়িতে তুলে এসময়ে পাহারায় থাকা লোকজন এগিয়ে আসলে চোরের দল পালিয়ে যায়। পরে গাড়িতে থাকা চালককে গণপিটুনি দেয় উত্তেজিত জনতা এতে ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, এমনটাও হতে পারে, হয়ত চালককে ভাড়া করে নিয়ে আশা হয়েছে এবিষয়ে সে না জানতে পারে, অথবা জড়িতও থাকতে পারে তদন্ত সাপেক্ষে এ বিষয়ে বলা যাবে। আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করছি।

গাড়ি চালকদের উদ্দেশ্য ওসি বলেন, যদি চোরের সঙ্গী হিসেবে যায় সেটা ভিন্ন কথা। সেক্ষেত্রে চুরি/ডাকাতির দায়ে আটক ও মৃত্যুবরণ করার ঘটনা ঘটে। তাই গাড়ি চালকদের প্রতি আহবান কোথাও কােন মালামাল আনার জন্য ভাড়ায় যাওয়ার পূর্বে বিশেষ করে রাতের বেলায় চালককে নিশ্চিত হতে হবে সে কি চুরির মালামাল আনতে গেছে নাকি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআরসা সন্ত্রাসীদের কাছে অস্ত্র বিক্রি করতো তারা, র‌্যাবের হাতে ধরা
পরবর্তী নিবন্ধমীরসরাইয়ে বঙ্গবন্ধু শিল্পনগরে সিলিন্ডার বিস্ফোরণে আহত ৫