পূর্ব বিরোধের জেরে সাতকানিয়ায় চট্টগ্রাম ব্রিকস-২ নামক একটি ইটভাটার শ্রমিকদের থাকার ঘরে নুর হোসেন নামে এক মাঝিকে মারধর করার সময় তাঁকে বাঁচাতে আসা জাহাঙ্গীর আলম নামের এক শ্রমিককে গুলি করার অভিযোগ উঠেছে অন্য দুই ইটভাটার মাঝির বিরুদ্ধে।
অভিযুক্তরা হলেন- পাশ্ববর্তী আরবিএল ব্রিকফিল্ডের মাঝি আমান উল্লাহ প্রকাশ বাদশা ও ডিবিএম ব্রিকফিল্ডের মাঝি জামাল।
সোমবার (১৫ জানুয়ারি) দিবাগত রাত ২টার দিকে উপজেলার কেঁওচিয়া ইউনিয়নের তেমুহনী নয়াখালের মুখ এলাকায় চট্টগ্রাম ব্রিকস-২ নামক ইটভাটার শ্রমিকদের থাকার ঘরে এ ঘটনা ঘটে।
গুলিবিদ্ধ শ্রমিকের নাম জাহাঙ্গীর আলম (৪০)। তিনি কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলার কোনাখালী ইউনিয়নের জাকির হোসেনের পুত্র।
খবর পেয়ে সাতকানিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাজহারুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে উপস্থিত আহত জাহাঙ্গীরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা নেয়।
চট্টগ্রাম ব্রিকস-২ এর মাঝি নুর হোসেন দৈনিক আজাদীকে বলেন, ডিবিএম ব্রিকফিল্ডের মাঝি জামাল এবং আরবিএল ব্রিকফিল্ডের মাঝি আমান উল্লাহ প্রকাশ বাদশার সাথে আমার পূর্বশত্রুতা ছিল। দিবাগত রাত আনুমানিক ২টায় ঘুমন্ত অবস্থায় আমার উপর হামলা করে মুখ বেঁধে ঘুমের মধ্যেই মারধর শুরু করে।
আমার চিৎকারে শ্রমিক জাহাঙ্গীর আলম বাঁচাতে আসলে তাকেও মারধর করা হয়। ওই সময় আমাদের চিৎকারে সবাই জেগে গেলে হামলাকারীরা জাহাঙ্গীরকে গুলি করে পালিয়ে যায়। পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে আহত জাহাঙ্গীরকে দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আরবিএল ব্রিকফিল্ডের মাঝি আমান উল্লাহ প্রকাশ বাদশা বলেন, আমি নূর হোসেন বা অন্য কাউকে মারিও নাই গুলিও করি নাই। নূর হোসেন বিগত সময়ে প্রতারণার জন্য নাটক সাজিয়েছে। মূলত তার কাজ হল কারো ইটভাটায় কাজ করতে এসে টাকা পয়সা নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার পরিস্থিতি তৈরি করা।
নূর হোসেনের বাড়ি আমার বাড়ির পাশে। সে একজন প্রতারক। আমি তার কাছ থেকে টাকা পাচ্ছি। মূলত টাকা না দিতে সে এ ঘটনা ঘটিয়েছে এবং আমাদের নাম দিয়ে মিথ্যাচার করছে।
জানতে চাইলে কেঁওচিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ওসমান আলী দৈনিক আজাদীকে বলেন, আমার ইটভাটায় গতকাল দিবাগত রাত ২টার সময় কিছু দুষ্কৃতিকারী পূর্ব শত্রুতার জের ধরে অটোব্রিকস মিলের মাঝি নুর হোসেনের উপর আক্রমণ শুরু করে। তখন তাকে বাঁচাতে আসলে শ্রমিক জাহাঙ্গীরকে গুলি করে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় আমি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছি।
সাতকানিয়া থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রিটন সরকার দৈনিক আজাদীকে বলেন ঘটনার বিষয়ে তদন্ত চলমান রয়েছে। এখনো পর্যন্ত কেউ কোন ধরনের মামলা দায়ের করেনি। মামলা দায়ের হলে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
