সাজা শেষ দুই মাস আগে, তিনি এখনো কারাগারে

স্বামীর মুক্তির জন্য আবেদন করেছেন স্ত্রী

হাবীবুর রহমান | মঙ্গলবার , ৩ অক্টোবর, ২০২৩ at ৪:১৩ পূর্বাহ্ণ

দুই মাস আগে সাজা শেষ হয়েছে, অথচ আব্দুল মাবুদ নামে এক ব্যক্তি এখনো কারাগারে হাজতবাস করছেন। মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও কারাগারে বন্দি থাকার ঘটনাটি ঘটেছে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে। মাবুদ নগরীর ডবলমুরিং থানাধীন পূর্ব মাদারবাড়ি এলাকার বাসিন্দা।

এ ঘটনায় আব্দুল মাবুদের স্ত্রী সুলতানা রাজিয়া জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বরাবর স্বামীর মুক্তি চেয়ে চিঠি দিয়েছেন। চিঠির একটি অনুলিপি কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার বরাবর পাঠানো হয়েছে। সুলতানা রাজিয়া চিঠিতে উল্লেখ করেন, তার স্বামী আব্দুল মাবুদ ২০১৯ সালের ২৮ নভেম্বর দুদকের একটি মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে এখনো জেলে আটক আছেন। গতকাল পর্যন্ত তার হাজতবাস ৩ বছর ৯ মাস ২৮ দিন অতিবাহিত হয়েছে। অথচ গত ২৫ জুলাই চট্টগ্রামের বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালত আব্দুল মাবুদকে দণ্ডবিধির ৪০৯ ধারায় ৩ বছর, ২ লাখ টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে ১ মাস, ৪২০ ধারায় ৬ মাস, ৫ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে ১ মাস, ৪৬৭ ধারায় ৬ মাস, ৫ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে ১ মাস, ৪৬৮ ধারায় ৬ মাস, ৫ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে ১ মাস, ৪৭১ ধারায় ৬ মাস, ৫ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে ১ মাস, ৪৭৭ ধারায় ৬ মাস, ৫ হাজার টাকা ও অনাদায়ে ১ মাস সশ্রম কারাদণ্ড এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫() ধারায় ৬ মাস, ৫ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে ১ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন। ঘোষিত রায়ে বলা হয়, সাজাগুলো একইসাথে চলবে। সে অনুযায়ী আব্দুল মাবুদের হাজতবাস দুই মাস আগে শেষ হয়েছে।

সুলতানা রাজিয়া বলেন, আব্দুল মাবুদকে আদালতের দেওয়া কারাদণ্ড দুই মাস আগে শেষ হয়েছে। বেশি সময় ধরে স্বামীর হাজতবাসের বিষয়টি কারাগারে গিয়ে জানিয়েছি। কিন্তু কেউ কথা শুনছেন না। তাই বাধ্য হয়ে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে চিঠি দিয়েছি। আব্দুল মাবুদের মুক্তি চেয়ে আবেদন করেছি। একটি অনুলিপি কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার বরাবরও পাঠিয়েছি। আমি আমার স্বামীর মুক্তি চাই।

সুলতানা রাজিয়ার আইনজীবী ও অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর মো. শাহেদুল আজম শাকিল বলেন, আমার মক্কেল প্রকৃত ভুক্তভোগী। আমি হিসাব করে দেখেছি, আব্দুল মাবুদ অতিরিক্ত সাজা ভোগ করছেন। দুই মাস আগে তার সাজা শেষ হয়েছে। বিষয়টি আমার মক্কেল কারাগারে গিয়ে জানিয়েছেন। কিন্তু দায়িত্বরতরা তার কথা শুনেননি। সেবা প্রার্থীকে সহযোগিতা করার কথা থাকলেও তা তারা করেননি।

তিনি বলেন, আশা করছি কর্তৃপক্ষ আব্দুল মাবুদকে দ্রুত মুক্তি দেবে। আব্দুল মাবুদ একজন ব্যান্ডশিল্পী জানিয়ে তিনি বলেন, যে মামলায় সাজা হয়েছে সেই মামলার প্রত্যক্ষ আসামি তিনি নন। তিনি পরোক্ষ আসামি। আত্মসাৎকৃত টাকা আব্দুল মাবুদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে উত্তোলন করেন প্রত্যক্ষ আসামিরা।

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মো. মঞ্জুর হোসেন আজাদীকে বলেন, একজন বন্দি একদিন বেশি সাজা ভোগ করুক, তা আমরা চাই না। আমরা বন্দিদের দেখভাল করি জেল কোড অনুযায়ী। আব্দুল মাবুদের বিষয়টি আমাদের নজরে রয়েছে। এখন পর্যন্ত যা প্রত্যক্ষ করেছি তা হলো জেল কোড অনুযায়ী আব্দুল মাবুদের সাজা এখনো শেষ হয়নি। তাই তাকে মুক্তি দেওয়া হয়নি। বিষয়টি যাচাইবাছাই করে দেখা হচ্ছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধশেষে মারা গেলেন ছুরিকাঘাতকারীই
পরবর্তী নিবন্ধশ্বশুরের কাটা মাথার খোঁজে পুত্রবধূকে নিয়ে তল্লাশি