দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর মুক্তি চেয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়ার অভিযোগে ফের গ্রেপ্তার হওয়া সেই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ নুরুল কবিরকে পদ থেকে পুনরায় সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। গতকাল শনিবার মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভায় তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন গভর্নিং বডির সভাপতি সীতাকুণ্ড পৌরসভার মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা
বদিউল আলম।
জানা যায়, সীতাকুণ্ড পৌরসদরের যুবাইদিয়া মহিলা মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা নুরুল কবির গত ২০২০ সালের ১ মে যুদ্ধাপরাধের মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর মুক্তি দাবি করে নিজ ফেসবুকে পোস্ট দেন। এ ঘটনায় রাজনৈতিক উত্তেজনা সৃষ্টি হলে বারৈয়াঢালা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুল ইসলামকে বাদী করে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। ওই বছরের ৪ মে রাতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়েরের পর পুলিশ তাকে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে। এ ঘটনার পর সমালোচনার ঝড় উঠলে ওই সময় মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির এক বৈঠকে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
এ বিষয়ে গতকাল মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, সরকার বিরোধী আন্দোলনে সম্পৃক্তার জন্য মাদ্রাসা অধ্যক্ষ নুরুল কবিরের বিরুদ্ধে চারটি মামলা দায়ের হয় এবং তিনি গ্রেপ্তার হন। জামিন পেয়ে তিনি মৌখিকভাবে মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির কাছে অঙ্গীকার করেন তিনি আর কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে থাকবেন না। কিন্তু এরপরও তিনি রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড, সরকার ও রাষ্ট্রবিরোধী উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকেননি বিধায় তার বিরুদ্ধে তথ্য প্রযুক্তি আইনে মামলা দায়ের হয়। তার এসব কর্মকাণ্ড মাদ্রাসাটির সুনাম ক্ষুণ্ন করছে। মামলায় তিনি গ্রেপ্তার হলে দীর্ঘ সাত মাস পর আদালত থেকে জামিন নিয়ে আসেন। জামিন পেয়ে তিনি পুনরায় যুবাইদিয়া মহিলা মাদ্রাসায় যোগদান করেন। চলতি বছরের ১০ মার্চ ওই মামলায় চট্টগ্রাম আদালতে হাজিরা দিতে গেলে তিনি ফের গ্রেপ্তার হন। এরপর থেকে তিনি মাদ্রাসায় অনুপস্থিত থাকেন। ফলে তাকে গভর্নিং বডির সভায় সর্বসম্মতিক্রমে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে যুবাইদিয়া মাদ্রাসা গভর্নিং বডির সভাপতি পৌর মেয়র মুক্তিযোদ্ধা বদিউল আলম বলেন, তার বিরুদ্ধে আগের চারটি মামলায় তিনি জামিনে থাকলেও সে মামলাগুলো তদন্তাধীন রয়েছে। আদালত তাঁর জামিন নামঞ্জুর করে পুনরায় গ্রেপ্তার করেন। এর পর থেকে মাদ্রাসায় অনুপস্থিত। পরে জানতে পারি তিনি জেল হাজতে রয়েছেন। তাই তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এখন থেকে তিনি আর মাদ্রাসার কোনো কর্মকাণ্ড করতে পারবেন না। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। মাদ্রাসার শিক্ষক জয়নাল আবেদিনকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।