নির্বাচনকে সামনে রেখে চট্টগ্রামের পৌরসভাগুলো সরব। সম্ভাব্য মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের ব্যানার-পোস্টারে ছেয়ে গেছে পৌর এলাকা। নির্বাচন ঘনিয়ে আসছে আর আওয়ামী লীগের প্রার্থীর সংখ্যাও বাড়ছে। পৌরসভাগুলোতে সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থী নিয়ে আওয়ামী লীগের তৃণমূলে রীতিমত প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। তবে এখনো মাঠে নেই বিএনপি। গত দুদিনে পটিয়া ও সীতাকুণ্ড পৌর এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সীতাকুণ্ড পৌরসভায় মেয়র পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর সংখ্যা রেকর্ড ছাড়িয়েছে। এখানে সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থীর সংখ্যা ১৬ জন। বিএনপি থেকে শোনা যাচ্ছে ২ জনের নামে। তারা ভেতরে ভেতরে প্রস্তুতি নিয়ে তাকিয়ে আছেন কেন্দ্রের দিকে।
পটিয়ায় আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীর সংখ্যা ৫ জন। বিএনপির মেয়র প্রার্থীর সংখ্যা ৩ জন এবং জাতীয় পার্টির প্রার্থীর সংখ্যা ১ জন। সীতাকুণ্ড ও পটিয়ার পাশাপাশি চট্টগ্রামের অন্যান্য পৌরসভায় আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য মেয়র এবং কাউন্সিলর প্রার্থীরা সক্রিয় হয়ে উঠেছেন। পুরোদমে প্রস্তুতি নিয়ে মাঠে নেমেছেন তারা। নির্বাচনের আগেই অনেকটা উৎসব মুখর হয়ে উঠেছে পৌরসভাগুলো। দিন যত গড়াচ্ছে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থীর সংখ্যা বাড়ছে। সেই সাথে বাড়ছে গ্রুপিংও। এদিকে বিএনপির সংশ্লিষ্ট মেয়র প্রার্থীরা ভেতরে ভেতরে প্রস্তুতি নিয়ে রাখলেও প্রকাশ্যে মাঠে নেই। কেন্দ্র থেকে গ্রিন সিগন্যাল পেলেই মাঠে নামবেন বলে জানিয়েছেন পটিয়া ও সীতাকুণ্ড পৌরসভায় বিএনপির সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থীরা।
আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে চট্টগ্রামে প্রতিটি পৌরসভায় আওয়ামী লীগ নিজেই নিজের প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠেছে। পৌরসভাগুলোতে তাদের সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থীর সংখ্যা ৩ জন থেকে সর্বোচ্চ ১৬ জনে পর্যন্ত দাঁড়িয়েছে। চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আতাউর রহমান আজাদীকে জানান, ২৮ ডিসেম্বর থেকে পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম দফায় ২৮ ডিসেম্বর সীতাকুণ্ড পৌরসভায় নির্বাচন হবে। দ্বিতীয় দফার তফসিলে অন্য পৌরসভাগুলোতে নির্বাচন হবে। পৌরসভা নির্বাচনের জন্য আমরা প্রস্তুতি নিয়েছি। সংশ্লিষ্ট পৌরসভাগুলোর ভোট কেন্দ্রের তালিকা এবং ভোটার তালিকাও চূড়ান্ত করা আছে।
গতকাল পটিয়া পৌরসভা এলাকায় দেখা যায়, এখানে নির্বাচনী আমেজ শুরু হয়েছে। বিরাজ করছে উৎসব মুখর পরিবেশ। এখানে বর্তমান মেয়র অধ্যাপক হারুনুর রশিদসহ ৫ জন নির্বাচন করতে চান। বিএনপি থেকে মেয়র পদে নির্বাচন করতে চান ৩ জন। বাঁশখালীতে আওয়ামী লীগের ১০ জন এবং বিএনপির ৩ জন; রাউজানে আওয়ামী লীগ থেকে ৩ জন মেয়র প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে। বিএনপি থেকে এখনো কারো নাম শোনা যায়নি। রাঙ্গুনিয়ায় আওয়ামী লীগের ৫ জন, বিএনপির ২ জন; সন্দ্বীপে আওয়ামী লীগের ৬ জন, বিএনপির ৩ জন; চন্দনাইশে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীর সংখ্যা ৬ জন, বিএনপির ৩ জন, এলডিপির ৩ জন, ইসলামী ফ্রান্টের ৩ জন ও জাতীয় পার্টির ১ জনের নাম শোনা যাচ্ছে। সাতকানিয়ায় আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীর সংখ্যা ৬ জন, বিএনপির ৪ জন; মীরসরাইয়ে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী ৫ জন, বিএনপির ৩ জন; বারৈয়ারহাটে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীর সংখ্যা ৫ জন ও বিএনপির ৪ জনের নাম শোনা যাচ্ছে।
চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আতাউর রহমান জানান, ২৮ ডিসেম্বরের পরের ধাপে পটিয়া, চন্দনাইশ, সাতকানিয়া, বাঁশখালী, সন্দ্বীপ, রাঙ্গুনিয়া, রাউজান, মীরসরাই ও বারৈয়ারহাট পৌরসভায় নির্বাচন হবে। অবশিষ্ট পাঁচ পৌরসভার মধ্যে ফটিকছড়ি পৌরসভার মেয়াদ পূর্ণ হবে ২০২২ সালে। নাজিরহাট পৌরসভার মেয়াদ পূর্ণ হবে ২০২৩ সালে। বোয়ালখালী পৌরসভায় ২০১৯ সালে মেয়াদ পূর্ণ হলেও মামলার কারণে এখনো পর্যন্ত নির্বাচন করা সম্ভব হয়নি।
২০১২ সালে হাটহাজারী পৌরসভা গঠিত হলেও সীমানা বিরোধ নিয়ে মামলার কারণে নির্বাচন হচ্ছে না। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পৌর প্রশাসকের দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া নবগঠিত দোহাজারী পৌরসভায় নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ হয়নি।