দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে যে নতুন সরকার গঠন করেছে আওয়ামী লীগ, সেই সরকারের পদত্যাগসহ সাত দফা দাবি জানিয়েছে বাম গণতান্ত্রিক জোট। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় পুরানা পল্টনের মুক্তিভবনে (সিপিবি অফিস) মৈত্রী মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি তুলে ধরেন জোটের সমন্বয়ক রুহিন হোসেন প্রিন্স। খবর বিডিনিউজের।
দাবিগুলো হলো– ১. নতুন সরকারকে পদত্যাগ করে নির্বাচনকালীন নির্দলীয়, নিরপেক্ষ তদারকি সরকারের অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন দিতে হবে। সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন পদ্ধতি প্রবর্তনসহ নির্বাচন ব্যবস্থার আমূল সংস্কার করতে হবে। ২. দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ভূমিকা গ্রহণ, সিন্ডিকেট ভাঙা, রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে বিকল্প বাজার ব্যবস্থা চালু এবং গ্রাম শহরে রেশনিং ব্যবস্থা, ন্যায্যমূলো দোকান চালু করতে হবে। ৩. শ্রমিক কর্মচারীদের জন্য ‘বাঁচার মতো’ জাতীয় ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ, কৃষি ফসলের ন্যায্য মূল্যসহ উৎপাদক ও ক্রেতা সমবায় গড়ে তুলতে হবে। ৪. সবশেষ নির্বাচনে প্রার্থীদের হলফনামায় যে সম্পদ দেখানো হয়েছে তার প্রকৃত উৎস খুঁজে বের করা এবং এই সম্পদের বাইরে আরও সম্পদ আছে কিনা তা তদন্ত করে ওই তথ্য জনগণের কাছে প্রকাশ্যভাবে তুলে ধরতে দুদক, এনবিআরকে ব্যবস্থা নিতে হবে। ৫. লুটপাট দুর্নীতি বন্ধ, খেলাপি ঋণ উদ্ধার, পাচার করা টাকা ফেরত আনতে কার্যকর ব্যবস্থা এবং এর সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। ৬. দেশের জাতীয় সম্পদ লুণ্ঠন ও ভূ–রাজনীতিতে বাংলাদেশকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহারের সুযোগ খুঁজছে ‘সাম্রাজ্যবাদী আধিপত্যবাদী’ শক্তি, এ বিষয়ে দেশবাসীকে সতর্ক থাকতে হবে। ৭. সব ধরনের নিপীড়ন বন্ধ, গ্রেপ্তার হওয়া সব রাজবন্দিদের নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে এবং কালো আইন বাতিল করতে হবে।
দাবি আদায়ে আগামী ২৭ জানুয়ারি দেশব্যাপী বিক্ষোভ সমাবেশ এবং ২৮ জানুয়ারি থেকে ২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দেশব্যাপী সভা–সমাবেশ, মতবিনিময় সভা আয়োজনেরও ঘোষণা করা হয় সংবাদ সম্মেলনে। কর্মসূচির মধ্যে দুদক, এনবিআরের সামনে অবস্থান, বিক্ষোভসহ নানা কর্মসূচি থাকবে।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, অবাধ সুষ্ঠু অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের গণদাবি ও জনমত উপেক্ষা করে গত ৭ জনুয়ারি দেশে নির্বাচনের নামে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার একদলীয়, একতরফা, নতুন ধরনের এক প্রহসনের নির্বাচন সম্পন্ন করেছে। অতীতে দেখা গেছে প্রহসনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত করার জন্য জনগণকে ভয় ভীতি দেখিয়ে বলা হত, ‘ভোট কেন্দ্রে যাওয়ার দরকার নাই’। ভোট কেন্দ্রে না গেলেও ভোট হয়ে যেত, এটা সবার জানা। এবারের চিত্র ছিল সম্পূর্ণ বিপরীত।