সরকারি কাজে হিজরি ক্যালেন্ডারের পরিবর্তে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের ব্যবহার শুরুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সৌদি আরব। সৌদি ক্রাউন প্রিন্স ও প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মাদ বিন সালমানের নেতৃত্বে গত মঙ্গলবার মন্ত্রী পরিষদের বৈঠকে সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম সামা টিভির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, সৌদি আরবের সব দাপ্তরিক কর্মকাণ্ড ও লেনদেনের সময় পরিমা নির্ণয়ের জন্য গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে, শরিয়া বিধির সঙ্গে সম্পর্কিত বিষয়াবলির ক্ষেত্রে সময় নির্ধারণের জন্য হিজরি ক্যালেন্ডার ব্যবহার করার সুস্পষ্ট প্রয়োজনীয়তা দেখা দিলে নিয়ম শিথিল করা হবে।
এর আগে, ২০১২ সালে আরব সরকারি–বেসরকারি সব কাজ ও দাপ্তরিক লেনদেনে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল সৌদি। সে সময় হিজরি তারিখ ও আরবি ভাষার ব্যবহার কঠোরভাবে মেনে চলার জন্য সব মন্ত্রণালয় ও সংস্থাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তবে, হিজরি তারিখের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার ব্যবহারের অনুমতি ছিল। সামপ্রতিক বছরগুলোতে সৌদি আরব উল্লেখযোগ্য আর্থসামাজিক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। দেশটিতে এখন বিশাল সংখ্যক প্রবাসী কর্মীর বসবাস। মে মাসে প্রকাশিত সৌদি পরিসংখ্যান বিভাগের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশটির মোট জনসংখ্যা ৩ কোটি ২২ লাখ, যার ৪১ দশমিক ৫ শতাংশই বিদেশি। জনসংখ্যার পরিমাণ ১ কোটি ৩৪ লাখ। সেই পরিসংখ্যানে বলা হয়, সৌদি আরবে বসবাসরত মোট প্রবাসী কর্মীর ৪২ শতাংশেরও বেশি হলো এশিয়ার তিনটি দেশের নাগরিক। আর তালিকার শীর্ষে রয়েছে বাংলাদেশ। দেশটিতে ২১ লাখ বাংলাদেশি রয়েছে, যা দেশটির মোট প্রবাসীর ১৫ দশমিক ০৮ শতাংশ। পরের দুটি অবস্থানে যথাক্রমে রয়েছে ভারত ও পাকিস্তান, যার মধ্যে ১৮ দশমিক ৮ লাখ ভারতীয় ও ১৮ দশমিক ১ লাখ পাকিস্তানি রয়েছে। ১৮ লাখ প্রবাসী নিয়ে তালিকার চার নম্বরে আছে ইয়েমেন। সৌদিতে প্রায় ১৪ লাখ মিসরীয় ও ৮ লাখের বেশি সুদানের নাগরিক বাস করেন। তাছাড়া দেশটিতে ফিলিপাইনের ৭ লাখ ২৫ হাজার ও সিরিয়ার প্রায় সাড়ে ৪ লাখ প্রবাসী রয়েছে।