আমাকে যে পথ দেখিয়েছে, আমি তার পথে চলি না। উল্টো চলাতেই আনন্দ আমার। যেদিক থেকে ঝড় ধেয়ে আসে, আমি ঠিক সেদিকেই বুক পেতে দিই, পালাতে গেলেই মনে হয় মুখ থুবড়ে পড়বো।
অপারেশন টেবিলে দেহাবশ করার বিশেষজ্ঞ দেখে তাকে আমার দেবদূত মনে হয়। ঘুম আনার দেবতা। আমাদের চিরঘুম কেন এরকম নির্বিঘ্ন হয় না।
কেন আমাদের পাঁজরের ভেতর বিষের থলে, কেন আমাদের লুকানো নখে মিশরীয় রাজকুমারীর দু’ধারি ছুরি, কেন আমাদের হাসিতে আবরাহা রাজার দম্ভ, যখন আমরা স্বচক্ষেই দেখি শিয়রে যমদূত ময়ূরপালকের চামরে সান্ত্বনার হাওয়া দিচ্ছে!
আমি কি সেই মধুর সময় পেরিয়ে আসিনি, যখন মায়ের স্তনে মুখ রেখে ভাবার অবকাশ ছিল না, কোথা থেকে এ-দুগ্ধনহর বয়ে চলেছে আমার জন্য, আর পিতার বুকে মাথা রেখে ঘুমুতে গিয়ে ভাবতে পারিনি, এ কোন মহান ফেরেশতার মোলায়েম বুকে মাথা পেতে রেখেছি আমি অনাদিকাল!
সময় আমাকে ঢেউ ভাঙতে ভাঙতে মোহনার দিকে ধেয়ে নিয়ে যাচ্ছে। সমুদ্র ডাকছে ইশারায়, যখন জলের অন্তিম রেখায় হৃদয়ের সমস্ত আবির ঢেলে দিয়ে পাণ্ডুর সূর্য প্রশান্তির আনন্দে হেলে পড়ছে।