মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে বর্তমান সরকার সমুদ্রকেন্দ্রিক অর্থনীতির সম্ভাবনা কাজে লাগাতে বদ্ধপরিকর।
তিনি গতকাল বুধবার চট্টগ্রামে মেরিন ফিশারিজ একাডেমির প্যারেড গ্রাউন্ডে একাডেমির ৪২তম ব্যাচের ক্যাডেটদের ‘পাসিং আউট প্যারেড–২০২৩’ উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন। মন্ত্রী বলেন, সমুদ্রসম্পদের গুরুত্ব উপলব্ধি করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৩ সালে মেরিন ফিশারিজ একাডেমি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তিনি (বঙ্গবন্ধু) ১৯৭৪ সালে টেরিটোরিয়াল ওয়াটার্স অ্যান্ড মেরিটাইম জোনস অ্যাক্ট প্রণয়ন করেছিলেন। পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কূটনৈতিক দূরদর্শিতা ও দৃঢ় ভূমিকায় ১ লাখ ১৮ হাজার ৮শ’ ১৩ বর্গকিলোমিটার সামুদ্রিক জলসীমায় ‘আমাদের সার্বভৌম অধিকার প্রতিষ্ঠা হয়েছে। ফলে উন্মোচন হয়েছে সমুদ্রকেন্দ্রিক অর্থনীতির নতুন দিগন্ত’। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী বলেন, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সমুদ্রের মৎস্যসম্পদ অনুসন্ধান, সংরক্ষণ ও টেকসই আহরণের লক্ষ্যে নানা কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে। এ মন্ত্রণালয় থেকে প্রণয়ন করা হয়েছে সামুদ্রিক মৎস্য আইন–২০২০, সামুদ্রিক মৎস্য আহরণ নীতিমালা–২০২২ এবং সামুদ্রিক মৎস্য বিধিমালা–২০২৩।
সমুদ্রে অবৈধ, অনুল্লিখিত ও অনিয়ন্ত্রিত মৎস্য আহরণ বন্ধে ন্যাশনাল প্ল্যান অব অ্যাকশন বাস্তবায়ন করা হচ্ছে উল্লেখ করে মন্ত্রী ক্যাডেটদের উদ্দেশে বলেন, মেরিন ফিশারিজ একাডেমির নারী ক্যাডেটরা কর্মক্ষেত্রে তাদের দক্ষতা ও নৈপুণ্য দেখাতে সক্ষম হচ্ছেন।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়র দায়িত্বপ্রাপ্ত সচিব নৃপেচন্দ্র দেবনাথ, অতিরিক্ত সচিব এ টি এম মোস্তফা কামাল ও মো. আবদুল কাইয়ুম, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খ. মাহবুবুল হক, মেরিন ফিশারিজ একাডেমির অধ্যক্ষ ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ হাসান, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, বাংলাদেশ নৌবাহিনী, বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন, মৎস্য অধিদপ্তর, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর, মার্কেন্টাইল মেরিন ডিপার্টমেন্ট, সরকারি শিপিং দপ্তরসহ অন্যান্য মেরিটাইম শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাগণ পাসিং আউট প্যারেডে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। এ বছর একাডেমির ৪২তম ব্যাচে নটিক্যাল বিভাগে ৬০ জন, মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ৫৯ জন এবং মেরিন ফিশারিজ বিভাগে ১৯ জন ক্যাডেটসহ সর্বমোট ১৩৮ জন ক্যাডেট পাসড আউট হন। এ বছর ৪২তম ব্যাচের ক্যাডেটদের মধ্যে সকল বিষয়ে সর্বোচ্চ মান অর্জনকারী ক্যাডেট হিসেবে মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ক্যাডেট এইচ এম আবরার অয়ন বেস্ট অল রাউন্ডার গোল্ড মেডেল প্রাপ্ত হন। তিন বিভাগের সর্বোচ্চ মান অর্জনকারী ক্যাডেট হিসেবে নটিক্যাল সায়েন্স বিভাগ হতে ক্যাডেট এস এম মারুফ হোসেন নাবিল, মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ হতে ক্যাডেট মো. আল রিফাত এবং মেরিন ফিশারিজ বিভাগ হতে ক্যাডেট মোহাম্মদ সাজিদ হোসেন বেস্ট ইন প্রফেশনাল ট্রেনিং সিলভার মেডেল পদক প্রাপ্ত হন। এছাড়াও মহিলা ক্যাডেটদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ মহিলা ক্যাডেট হিসেবে মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ক্যাডেট সুরাইয়া আক্তার বেস্ট ফিমেইল ইন প্রফেশনাল ট্রেনিং সিলভার মেডেল পদক প্রাপ্ত হয়। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী সাফল্যের স্বীকৃতি পুরস্কার হিসেবে ক্যাডেটদের মধ্যে পদক বিতরণ করেন। এদিন দুপুরে একাডেমির পাসড আউট হওয়া ১৩৮ জন ক্যাডেটের হাতে সনদপত্র তুলে দেন মন্ত্রী।