ছাত্রজীবনে প্রয়াত লেখক হুমায়ুন আহমেদ স্যার এর প্রচুর উপন্যাস পড়েছি। রীতিমতো নেশার মতো ছিল। বিশেষ করে মনোবিজ্ঞানের ছাত্র হিসেবে মিসির আলী সিরিজের প্রায় সব বই পড়েছি। এমন দিনও গেছে বিছানায় শুয়ে শুয়ে একনাগারে একটা বই পড়ে শেষ করেছি।
যা হোক হুমায়ুন আহমেদ স্যারের উপন্যাসসমুহের শ্রেষ্ঠ চরিত্র বলা চলে মিসির আলী, যাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে চিত্রিত করা হয়েছে।
মানব মনের অন্তর্জালে প্রবেশ করার ঈর্ষণীয় ক্ষমতা ছিল মিসির আলী নামক চরিত্রটির।
একদিন একুশের বই মেলায় ঘুরতে ঘুরতে একটি বই এর প্রতি দৃষ্টি নিবন্ধ হলো। যার নাম ‘মিসির আলী যমনিবাস’। বইটি সম্ভবত জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের একজন অধ্যাপক এর লেখা। বইটি বেশ মনোযোগ সহকারে পড়লাম। পড়ে মনে হলো– এই স্যার মিসির আলী সিরিজের বইগুলোর যে ভুল ভ্রান্তি তুলে ধরেছেন তার জন্য তাকে এমন সমালোচনামূলক লেখা বই উপহার দেওয়ার জন্য ডক্টরেট ডিগ্রি দেওয়া উচিৎ। অথচ হুমায়ুন আহমেদ স্যার এর এতো বই পড়লাম, এসব ভ্রান্তিগুলো কখনও চোখে পড়েনি।
পরিশেষে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হলাম যে, যার প্রতি ভালোবাসা প্রকট, তাঁর ভুল–ভ্রান্তিগুলো কী এক অদৃশ্য কারণে প্রকৃতি আড়াল করেই রাখে। আর যার প্রতি পুঞ্জীভূত ঘৃণা ও ক্ষোভ পূর্ব থেকে জমা থাকে, তাঁর দোষত্রুটিগুলোই কেবল মানসপটে ভেসে উঠে।
আরও উপলব্ধি করলাম যে, সমালোচনা করতেও যোগ্যতা লাগে। যা আমার মতো সাধারণ পাবলিক এর নেই।