ঐকমত্য কমিশনের সব প্রস্তাবে যদি একমতই হতে হয়, তাহলে সংলাপে ডাকার কারণ কী, সেই প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, ‘এখন যদি জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সব প্রস্তাবে আমাদেরকে ১০০ শতাংশ একমত হতে বলে, তাহলে আলোচনার জন্য ডাকা হলো কেন।’ গতকাল জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠকের পর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ব্রিফিংয়ে এসে এ প্রশ্ন তোলেন তিনি। খবর বিডিনিউজের।
সালাহউদ্দিন বলেন, “রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ক্ষেত্রে গোপন ব্যালটের মাধ্যমে স্বাধীনভাবে এমপিরা ভোট দেবে, সেই বিষয়ে একমত হয়েছি। তো ঐকমত্য তো পোষণ হচ্ছে। যে সব বিষয়ে দলগুলো একমত হবে, সেই বিষয়গুলো একত্রিত করে জুলাই সনদ বা জাতীয় সনদ সই হওয়ার কথা। তো এখন এখানে যদি আমাদেরকে বাধ্য করা হয় যে, এই সমস্ত বিষয়ে একমত হতেই হবে, সেটা তো সঠিক হল না।’ সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ কমিটি, দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট পার্লামেন্ট ও নিম্ন কক্ষের বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে কয়েকটি বিষয়ে সংযোজন–সংশোধন করে আজ উপস্থাপন করা হয়েছে। এ বিষয়ে আমাদের বক্তব্য আগের মতই। আমরা সাংবিধানিক বিভিন্ন সংস্থা, কমিশন ও সংবিধিবদ্ধ কয়েকটি সংস্থার নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে আমাদের মতামত আগেই দিয়েছি।’
জুলাই সনদ নিয়ে ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে কিছু হতাশা প্রকাশ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, রাজনৈতিক দলগুলো ঐক্যমতে আসতে পারছে না। ফলে জুলাই সনদও তারা দিতে পারছে না।
এ বিষয়ে বিএনপির অবস্থান জানতে চাইলে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘এখন পর্যন্ত জুলাই সনদ বলি বা জাতীয় সনদ বলি, সই হওয়ার জন্য সবচেয়ে বেশি আন্তরিকতা আমরাই দেখিয়েছি। আমরা জাতীয় মূলনীতির ক্ষেত্রে আমরা আমাদের অবস্থান জানিয়েছি। আমরা ৭০ অনুচ্ছেদের ব্যাপারে আমাদের অবস্থান জানিয়ে সেখানে একমত হয়েছি এবং সেটা জাতীয় সনদে অন্তর্ভুক্ত হবে। সবাই সেটা একমত হয়েছি। এরপর পার্লামেন্টের স্থায়ী কমিটিগুলোতে বিরোধীদলের কাছে সভাপতিত্ব দেয়ার ক্ষেত্রে আমরা একমত হয়েছি। আমরা প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদের ক্ষেত্রে যেটা জীবদশায় বা সারাজীবনে কোনো ব্যক্তি ১০ বছরের বেশি প্রধানমন্ত্রী আসনে বহাল থাকবেন না, সে বিষয়ে আমরা একমত হয়েছি। তবে ওখানে আমাদের একটা শর্ত ছিল যে, এনসিসির মতো বা সাংবিধানিক নিয়োগ কমিটির মতো কোনো বিষয় এখানে থাকলে আগের প্রস্তাব অনুসারে যেতে হবে আমাদেরকে।’
এদিন বেলা ১১টায় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর বৈঠক শুরু হয়। শেষ হয় বিকাল সোয়া ৫টার দিকে।