সবাই ভালো থাকবার অভিনয় করছে

জি এম শাহাবুদ্দীন খান | মঙ্গলবার , ১২ আগস্ট, ২০২৫ at ৬:২৪ পূর্বাহ্ণ

ইট পাথরের যান্ত্রিক জীবনে রক্ত মাংসের মানুষগুলো দিন দিন কেমন জানি হয়ে যাচ্ছে। আবেগ, অনুভূতি আর মায়া শূন্য হয়ে পড়ছে। অথচ এই মানুষগুলো বড়ই মায়ার কাঙাল। জীবনের ব্যস্ততা, বাস্তবতা আর স্বার্থের দ্বন্দ্বে মানুষে মানুষে বাড়ছে বিচ্ছিন্নতা। এসবের সাথে মানিয়ে নিতে গিয়ে মানুষ হয়ে পড়ছে ক্লান্ত। এর ফলে এক ধরনের শূন্যতা ভর করছে সবকিছুর মধ্যে। এতটুকুতেই যেন হাঁপিয়ে উঠছে মানুষ।

ঘড়ির কাঁটার সাথে সাথে জীবনের নির্ধারিত সময়টুকু যেন ফুরিয়ে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। মাঝে মাঝে নিজের কাছে নিজেকে ভীষণ অচেনা মনে হয়। চারপাশের চেনা জানা মানুষগুলো কেমন জানি অচেনা হয়ে যায়। কথায় বলে, মানুষ কিসে আটকায়। মানুষ একমাত্র মায়ায় আটকায়। সেই মায়ার বাঁধন দিন দিন যেন আলগা হয়ে যাচ্ছে। মায়াহীন এই পাথুরে সময়ে মানুষ আর আটকায়না। যত দামি গাড়ি, দামি বাড়ি আর জৌলুশপূর্ণ জীবন যাপন করেন না কেন, মায়াহীন জীবনে সবকিছু ফিকে মনে হয়। একরাজ্য ক্লান্তি এসে ভর করে। চারিদিকে এত এত স্বার্থের সংঘাতে যেন দম বন্ধ হয়ে আসে। কৃত্রিমতা ভরা এই সময়ে বুক ভরে নিঃশ্বাস ফেলার এতটুকু স্থান নেই, নেই নির্ভরতার জায়গা। অগণিত মানুষের ভীড়ে চিনতে পারি না কোনটা মানুষ, আর কোনটা মুখোশ। মানুষে মানুষে বিচ্ছিন্নতার এই কঠিন সময়ে হয়তো কালের গহব্বরে হারিয়ে গেছে সেই মায়াভরা মানুষ!

ভালো আছি, না বেঁচে আছিসে প্রশ্নটা অবান্তর। এখানে ভালো নেই কেউ। সবাই ভালো থাকবার অভিনয় করছি যার যার মতো করে। এই গল্পটা শুধু আমার নয়, এটা সবার। বাইরে থেকে আমরা মানুষের যেটা দেখছি সেটা আসল নয়, আবরণমাত্র। পৃথিবীতে মানুষ ভালো থাকার, সুখে থাকার সুনিপুণ অভিনয় করে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। এভাবে মানুষ জীবনটাকে বয়ে নিয়ে যাচ্ছে তার যাত্রাপথের।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআগের দিনের শৈশব ও আজকের শৈশব
পরবর্তী নিবন্ধবিতর্ক শুধু বক্তৃতা নয় এটি এক বুদ্ধিদীপ্ত ভাব বিনিময়