বিজয় মিছিল শেষে কেন্দ্রীয় বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, সবাইকে ধৈর্য ধারণ করতে হবে এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষা করতে হবে। কোনো প্রতিশোধ বা প্রতিহিংসা নয়। সবাই মিলে আমাদের দেশটিকে গড়তে হবে।
নেতা কর্মীদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, কোনো রাজনৈতিক নেতার উপর কোনো ধরণের হামলা নয়। মসজিদ, মন্দির, মাদ্রাসা, গীর্জা বা উপাসনালয়ের উপর যেনো সুযোগ সন্ধানীরা কোন হামলা করতে না পারে সেদিকে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।
তিনি বলেন, আমাদের দলের প্রত্যেক নেতা কর্মীর উপর দায়িত্ব থাকবে যাতে ভিন্ন ধর্মের বা ভিন্ন মতের এবং রাষ্ট্রীয় কোন সম্পদ কেউ যাতে ধ্বংস না করে। কোন ভিন্নমতের বা প্রতিপক্ষের বাড়ি, গাড়ি ভাঙচুর না করে, হামলা না করে। অন্য কেউ যাতে এসব করতে না পারে সেদিকে
সকলকে সজাগ থাকার জন্যও তিনি নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, এখন দেশকে বাঁচাতে হবে। এই যুদ্ধটা ছিল দেশ বাঁচানোর, মানুষ বাঁচানোর। কাজেই আমরা যেহেতু এই যুদ্ধে বিজয়ী হয়েছি। এখন সবাইকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে আমাদের প্রত্যাশিত সুন্দর বাংলাদেশ গড়তে হবে। তিনি বলেন, আমাদের অনেক নেতাকর্মী কারাগারে আছেন। এদের সবাইকে মুক্তি দিতে হবে। আমাদের নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া অসুস্থ উনাকেও অবিলম্বে মুক্তি দিয়ে সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। যারা শহীদ হয়েছেন তাদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে এবং যারা আহত আছে তাদেরকে দ্রুত সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। যে সমস্ত ছাত্র এবং শিক্ষক কারাবন্দি আছেন তাদেরকে মুক্ত দিতে হবে।
ডা. শাহাদাত হোসেন মানুষের মৌলিক অধিকার, গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষার স্বার্থে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। তিনি গতকাল ৫ আগস্ট বিজয় মিছিল শেষে এসব কথা বলেন।
নগর বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব আবুল হাসান বক্কর বলেন, স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পতনের মাধ্যমে ছাত্র জনতার বিজয় হয়েছে। এই স্বৈরাচার সরকার দীর্ঘ ১৭ বছর জনগণের উপর দমন নিপীড়ন নির্যাতন চালিয়েছিল। আজ স্বৈরাচার শেখ হাসিনার কবল থেকে বাংলাদেশ মুক্ত হয়েছে। আগামীতে নির্দলীয় সরকারের মাধ্যমে সকল দলের ও মতের ভিত্তিতে একটি গণতান্ত্রিক সরকার গঠিত হবে। সকল নেতাকর্মীদের ধৈর্য ধারণ করার আহ্বান জানিয়ে তিনি যে কোন ধরনের ধ্বংসাত্মক কাজ থেকে বিরত থাকার জন্য দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি আহবান জানান।
এ সময় নগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক কি ইয়াসিন চৌধুরীর লিটন, চন্দ্র মির্জা, আব্দুল মান্নান, গাজী মোহাম্মদ সিরাজুল্লাহ কামরুল ইসলাম সহ বিএনপি যুবদল ছাত্রদলের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
দক্ষিণ জেলা বিএনপি : অপরদিকে বিজয় মিছিল শেষে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আলহাজ্ব আবু সুফিয়ান বলেছেন, এ বিজয় দেশের সাধারণ ছাত্রছাত্রী ও জনতার বিজয়। দেশের গণতন্ত্রকামী, নির্যাতিত নিষ্পেষিত মানুষের বিজয়। ফ্যাসিস্ট সরকারের কবল থেকে মুক্তি পাওয়ায় দেশবাসীকে অভিনন্দন জানাই। নিরীহ, কোমলমতি,সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এই বিজয় আমরা সবাই সমুন্নত রাখবো।
শাহাদাত বরণকারী সকল ছাত্রছাত্রী এবং সাধারণ মানুষের রুহের মাগফেরাত কামনা করে তিনি অতি দ্রুত নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে সকল হত্যাকান্ডের সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানান। তিনি সকলকে শান্ত এবং সতর্ক থাকার আহবান জানিয়ে বলেন, কোনো দুষ্কৃতকারী যেন দেশে কোনো ধরনের অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে না পারে সেদিকে সজাগ থাকতে হবে। ছাত্রসমাজ, শিক্ষক সহ সকল শ্রেণি পেশার মানুষ এবং রাজনৈতিক দলসমূহ যারা এই আন্দোলনকে সফল করে তোলার জন্য যে অনন্য ভূমিকা রেখেছেন, তাদের সকলের প্রতি তিনি কৃতজ্ঞতা জানান।
তিনি বলেন, অবৈধ ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের মধ্য দিয়ে দেশে শান্তি শৃঙ্খলা ফিরে আসবে। মানুষ তার ভোটাধিকার, বাকস্বাধীনতা ফিরে পাবে। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হবে। বিগত ১৭ বছর দেশের মানুষের উপর একটি ফ্যাসিস্ট কর্তৃত্ববাদী সরকার জগদ্দল পাথরের মতো চেপে বসেছিল। জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় আমরা রাজপথে লড়াই সংগ্রাম চালিয়ে গেছি। আজকে সরকারের পতনের মধ্য দিয়ে দেশের মানুষ পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্ত হয়েছে। অতি শীঘ্রই গণতন্ত্রের আপোসহীন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া মুক্ত হবেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বীরের বেশে দেশে ফিরে আসবেন বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
বিজয় মিছিলটি বহদ্দারহাট মোড় থেকে শুরু করে চকবাজার, আন্দরকিল্লা হয়ে কোতোয়ালি মোড় এসে শেষ হয়।
এসময় নগর বিএনপির সদস্য মাহবুবুল আলম, আনোয়ার হোসেন লিপু, এড. সিরাজুল ইসলাম, চান্দগাঁও থানা বিএনপির আহবায়ক গিয়াস উদ্দিন ভুইয়া, হাজী ইলিয়াস শেকু, মুহাম্মদ হাসান লিটন, ম. হামিদ, গোলজার হোসেন, এম আবু বক্কর রাজু, সালামত আলী, মো. আলমগীর, জাহের মাসুদ, সাজিদ হাসান রনি, নাছির উদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন বলে এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।