চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেছেন, কোটা আন্দোলনের নামে সারা দেশে সৃষ্ট নৈরাজ্য ও নাশকতার প্রেক্ষিতে প্রত্যেক উপজেলা, পৌরসভা, ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পর্যায়ে ২০১৩ সালে গঠিত সন্ত্রাস ও নাশকতা প্রতিরোধ কমিটিকে পুনরায় সক্রিয় করে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। এটি মন্ত্রী পরিষদ বিভাগের সিদ্ধান্ত। জেলা ও মহানগর সন্ত্রাস ও নাশকতা প্রতিরোধ কমিটির সভার কার্যবিবরণীর অনুলিপি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, মন্ত্রী পরিষদ বিভাগ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার বিভাগ, সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয় ও প্রয়োজন অনুসারে অন্যান্য মন্ত্রণালয়, বিভাগ বা দপ্তরে প্রেরণ করতে হবে। এজন্য উপজেলা, পৌরসভা, ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পর্যায়ে সন্ত্রাস ও নাশকতা প্রতিরোধ কমিটির কার্যক্রম প্রতি মাসে প্রতিবেদন আকারে জেলা প্রশাসকের কাছে জমা দিতে হবে।
গতকাল রোববার সকালে নগরীর সার্কিট হাউজে অনুষ্ঠিত জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির মাসিক উন্নয়ন সমন্বয় সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, চট্টগ্রাম একটি বিভাগীয় শহর। এখানে জেলা আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোর কমিটি রয়েছে। দেশে যেদিন থেকে অস্থিতিশীল পরিস্থিাতি সৃষ্টি হতে যাচ্ছে সেদিন থেকে বিভাগীয় ও জেলা কোর কমিটির সভা করেছি। বিভাগীয় কমিশনার ও সিএমপি কমিশনারের নেতৃত্বে বিভাগীয় কোর কমিটি, ডিআইজি, জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ সুপার, বিজিবি, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী–নৌ বাহিনী, কোস্টগার্ড, র্যাব, এনএসআই, ডিজিএফআই, আনসার–ভিডিপি থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট গোয়েন্দা সংস্থা সকলে মিলে জেলা কোর কমিটি সময়োপযোগী উদ্যোগ নিয়েছিলাম। নাশকতাকারীরা কোথায় কোথায় অবস্থান নিতে পারে সে সকল বিষয়ে অবগত হয়ে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছিলাম। সকলে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার কারণে সন্ত্রাসীরা এখানে কিছুই করতে পারেনি। সামনের দিনগুলোতেও আমরা সমন্বিতভাবে কাজ করব।
সভায় পাট অধিদপ্তর, বিসিক, বিএসটিআই, বিআরটিএ, মহিলা বিষয়ক কার্যালয়, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস, কলকারখানা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন কার্যালয়, জনস্বাস্থা্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, পরিবেশ অধিদপ্তর, জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয়, বন বিভাগসহ সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কার্যক্রমের অগ্রগতি বিষয়ে গুরুত্ব আরোপসহ বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ওয়াশ ব্লক সংস্কার ও স্থাপন এবং স্কুলগুলোর ভূমি জটিলতা নিরসনের তাগিদ দেন জেলা প্রশাসক।
সভায় সিএমপির নবাগত উপ–পুলিশ কমিশনার ফেরদৌস আলী চৌধুরী বলেন, কোথাও সন্ত্রাস ও নাশকতার তথ্য পেলে আমাদেরকে জানাবেন, তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেব। জানমালের নিরাপত্তায় মহানগর পুলিশ প্রস্তুত রয়েছে।
জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কবীর আহম্মেদ বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে দুষ্কৃতকারীদের হামলা, অগ্নিসংযোগ ও নাশকতায় বিআরটিএর প্রধান কার্যালয়ের সার্ভার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সকল সেবা কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ রয়েছে। ফলে মোটরযানের বিভিন্ন ডকুমেন্ট হালনাগাদের জন্য জমা দেওয়া সরকারি ফি’র রশিদ প্রদর্শন করতে পারলে পুলিশ ওইসব মোটরযানের বিরুদ্ধে যাতে মামলা রুজু করতে না পারে সে বিষয়টি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গুরুত্ব দেওয়া হবে।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রাকিব হাসানের সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন সিভিল সার্জন ডা. মো. ইলিয়াছ চৌধুরী, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শাব্বির ইকবাল, সিনিয়র জেলা নির্বাচন অফিসার মোহাম্মদ এনামুল হক, মহানগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার মোজাফফর আহমেদ, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার একেএম সরওয়ার কামাল, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এস এম আবদুর রহমান, উপজেলা চেয়ারম্যান একেএম এহেছানুল হায়দার চৌধুরী বাবুল, আবুল কাশেম চিশতী, ফারুক চৌধুরী, কাজী মোজাম্মেল হক, মো. জাহেদুল হক, মো. এনায়েত হোসেন, মোহাম্মদ আরিফুল আলম চৌধুরী, এসএম আনোয়ার হোসেন, ইউনুস গণি চৌধুরী, মো. নাজিম উদ্দিন মুহুরী, জসিম উদ্দিন আহমেদ ও কাজী মোজাম্মেল হক, উপজেলা নির্বাহী অফিসার কে এম রফিকুল ইসলাম, এবিএম মশিউজ্জামান, মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী, অংগ্যজাই মারমা, মো. রায়হান মেহেবুব, হিমাদ্রী খীসা, মিল্টন বিশ্বাস, মো. আলাউদ্দিন ভূঁঞা, মিল্টন বিশ্বাস, মু. ইনামুল হাছান, মাসুমা জান্নাত, মো. ইশতিয়াক ইমন ও জেসমিন আক্তার, পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ–পরিচালক মো. মোজাহিদুর রহমান, জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম, পরিবার পরিকল্পনা জেলার উপ–পরিচালক মোহাম্মদ আবুল কালাম, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশ চন্দ্র দাস, জেলা পরিসংখ্যান অফিসের উপ–পরিচালক মোহাম্মদ ওয়াহিদুর রহমান, মহিলা বিষয়ক উপ–পরিচালক আতিয়া চৌধুরী, বিআরটিএর সহকারী পরিচালক রায়হানা আক্তার উর্থী, বিএসটিআই প্রতিনিধি রাজীব দাশগুপ্ত, পৌর মেয়র জমির উদ্দিন পারভেজ, বীর মুক্তিযোদ্ধা বদিউল আলম, মু. মাহাবুবুল আলম, মো. গিয়াস উদ্দিন প্রমুখ।