আর কলেজ থেকে ফেরা হলো না রাউজান সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. সাব্বির উদ্দিনের (১৭)। সিএনজি টেক্সি থেকে নেমে রাঙামাটি–রাউজান সড়কের গহিরা কুন্ডেশ্বরী এলাকায় সড়ক পার হতে গিয়ে শহরমুখী একটি যাত্রীবাহী বাসের ধাক্কায় গুরুতর আহত হয় সাব্বির। তাকে দ্রুত উদ্ধার করে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানেই মৃত্যু হয় তার। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে ঘটে এ দুর্ঘটনা।
নিহত সাব্বির রাউজান টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী এবং উপজেলার রাউজান সদর ইউনিয়নের জারুলতলা গ্রামের মো. নাজিম উদ্দিনের তৃতীয় পুত্র।
জানা যায়, সাব্বিরের মৃত্যুর খবর শুনে টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকে। তারা তিনঘণ্টারও বেশি সময় বিক্ষোভ প্রদর্শন করে গাড়ির চালককে দ্রুত গ্রেপ্তার করে শাস্তির দাবি জানায়। এসময় সড়কের উভয় দিকে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে। এসময় পুলিশ ও সেনাবাহিনী শিক্ষার্থীদের সড়ক ছেড়ে দেয়ার অনুরোধ করেন। পরে তারা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পালিয়ে যাওয়া ঘাতক বাসচালককে গ্রেপ্তার করাসহ কলেজের সামনের রাস্তায় পারাপারের ফুটওভার ব্রিজ অথবা জেব্রাক্রসিং করার দাবি জানায়। আইন–শৃঙ্খলা বাহিনী তাদের দাবি পূরণের আশ্বাস দিলে আড়াইটার দিকে সড়কের অবরোধ তুলে নেয় শিক্ষার্থীরা।
এদিকে সন্ধ্যায় নিহত শিক্ষার্থীর লাশ ময়নাতদন্ত শেষে বাড়িতে আনা হলে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। শোকাহত বাবা নাজিম উদ্দিন বিলাপ করতে করতে বলেন, সকালে প্রতিদিনের মত বাড়ি থেকে বাপ–বেটা ঘর থেকে এক সাথে বের হয়েছিলেন। জলিলনগর এসে ছেলেকে কলেজের উদ্দেশ্যে সিএনজিতে উঠিয়ে দিয়েছিলেন। এদিন যে ছেলের শেষ কলেজ যাত্রা হবে আমি জানতাম না। আর কোনো দিন আমার সাব্বিরকে সাথে নিয়ে বাড়ি আসা হবে না।
রাউজান হাইওয়ে পুলিশের উপ–পরিদর্শক (এসআই) সিরাজুল ইসলাম ঘটনা প্রসঙ্গে বলেন, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যায়। বাসটি আটক হলেও চালক পালিয়ে গেছে। শোকাহত শিক্ষার্থীরা এসময় প্রতিবাদী হয়ে সড়ক অবরোধ করে। পরে তাদের দাবি শুনতে সেনাবাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত হন। তারা শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণের আশ্বাস দিলে সড়ক অবরোধ তুলে নেয়।