সড়ক দুর্ঘটনা কোনো দৈব বিষয় নয়। এর পিছনে নানান কারণ কাজ করে যেগুলো প্রতিরোধ করা সম্ভব। সড়ক ডিজাইনে ত্রুটি, ফিটনেসবিহীন যান চলাচল, চালকের অদক্ষতাসহ বিভিন্ন কারণেই রোড ক্র্যাশ হতে পারে।
সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিতে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) প্রকৌশলীদের দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে আয়োজিত কর্মশালায় একথা বলেন প্রধান প্রকৌশলী শাহিন–উল ইসলাম চৌধুরী। কর্মশালার উদ্বোধনী অনু্ষ্ঠানে তিনি বলেন, নগরীর সড়কগুলোকে নিরাপদ করতে চসিক, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ), পুলিশ সকলকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। তিনি আশা করেন, এই কর্মশালা চসিক প্রকৌশলীদের ভবিষ্যতে নিরাপদ সড়ক নির্মাণে সহায়তা করবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার নগরীর লালদিঘীতে চসিক লাইব্রেরি ভবনের হলরুমে চসিক প্রকৌশলীদের জন্য ‘কোলাবোরেটিভ ডিজাইন লার্নিং–অন গ্রাউন্ড টেস্ট’ শীর্ষক দিনব্যাপী কর্মশালার আয়োজন করে ওয়ার্ল্ড রিসোর্সেস ইনস্টিটিউট (ডব্লিউআরআই)। সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রকৌশলীদের দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে আয়োজিত কর্মশালা সিরিজের এটা তৃতীয় কর্মশালা।
সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিতে বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুসরণ করে সমপ্রতি নগরীর ‘কাপ্তাই রাস্তার মাথা’ ইন্টারসেকশনের ডিজাইন করেছে ডব্লিউআরআই। ডিজাইনটির কার্যকারিতা যাচাই করার জন্য আগামী ৭ দিন তা অস্থায়ীভাবে বাস্তবায়ন করা হবে। এই পুরো প্রক্রিয়া সম্পর্কে চসিক প্রকৌশলীদের সার্বিক ধারণা প্রদান করতে কর্মশালাটি আয়োজন করা হয়।
নগরীতে রোড ক্র্যাশে মৃত্যু প্রতিরোধে ব্লুমবার্গ ফিলানথ্রপিস ইনিশিয়েটিভ ফর গ্লোবাল রোড সেফটি’র (বিআইজিআরএস) সাথে কাজ শুরু করেছে চসিক। বিআইজিআরএসের অংশীদার হিসাবে, প্রতিষ্ঠানটি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ভৌগলিক এবং স্থানীয় প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নিয়ে নিরাপদ সড়ক ডিজাইন ও নির্মাণে শহরগুলিকে সহায়তা করে থাকে।
অনুষ্ঠানে সিএমপি অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মাসুদ আহমেদ ও ডেপুটি কমিশনার (ট্রাফিক উত্তর) জয়নুল আবেদীন বিশেষ অতিথি ছিলেন। কর্মশালার শুরুতে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন মাস্টারপ্ল্যান প্রস্তুতি প্রকল্পের উপ–দলনেতা ড. মোহাম্মদ নুরুল হাসান নগরীতে নিরাপদ সড়ক ব্যবস্থা নিয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
কর্মশালায় ডব্লিউআরআইর পরামর্শক স্থপতি ফারজানা ইসলাম তমা অংশগ্রহণকারী প্রকৌশলীদের সামনে ‘কাপ্তাই রাস্তার মাথা’ ইন্টারসেকশনের ডিজাইন প্রক্রিয়া তুলে করেন। তিনি বলেন, ‘সড়কের যেকোনো ডিজাইন স্থায়ীভাবে বাস্তবায়নের পূর্বে পরীক্ষামূলকভাবে এর কার্যকারিতা যাচাই করা উচিৎ। এর ফলে ডিজাইনের কোনো ত্রুটি থাকলে তা সমাধান করা যায়। ‘কাপ্তাই রাস্তার মাথা’র ক্ষেত্রেও আগে পরীক্ষামূলকভাবে ৭ দিন ডিজাইনটি যাচাই করা হবে। এটি সফল হলে চসিক তা স্থায়ীভাবে বাস্তবায়ন করবে।’এরপর অংশগ্রহণকারী প্রকৌশলীরা কর্মশালার আলোচনার ভিত্তিতে একটি ইন্টারসেকশন ডিজাইন করেন।
পরে তারা সরেজমিনে ‘কাপ্তাই রাস্তার মাথা’ ইন্টারসেকশনটি পরিদর্শন করেন। এসময় তারা সেখানে ইন্টারসেকশনের নতুন ডিজাইনের ট্রায়াল উদ্বোধন করেন। কর্মশালায় চসিকের ২৬ জন, সিডিএ’র ২ জন ও সড়ক বিভাগের একজন প্রকৌশলী এবং সিএমপির ট্রাফিক বিভাগের ১০ জন কর্মকর্তা অংশগ্রহণ করেন। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।