সজাগ থাকতে হবে, এই ধরনের ঘটনা যেন আর না ঘটে

নাবিকদের বরণ অনুষ্ঠানে হাছান মাহমুদ

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ১৫ মে, ২০২৪ at ৬:৫৮ পূর্বাহ্ণ

সোমালিয়ার জলদস্যুদের কবল থেকে মুক্ত হওয়া বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর নাবিকদের গতকাল বরণ করেছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। বন্দরের নিউমুরিং কন্টেনার টার্মিনালের (এনসিটি) এক নম্বর জেটিতে বরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে অনলাইনে যুক্ত হয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আজ পুরো দেশের এবং জাতির জন্য আনন্দের দিন। আল্লাহর কাছে অশেষ শুকরিয়া, নাবিকরা সবাই সুস্থভাবে ফিরেছেন। এটি আমাদের অনেক বড় পাওয়া। তবে ভবিষ্যতে যেন এই ধরনের আর কোনো ঘটনা না ঘটে, বাংলাদেশি আর কোনো জাহাজ যাতে জলদস্যুদের কবলে না পড়ে, সেই ব্যাপারে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। যেসব জায়গা ঝুঁকির, সেখানে আর্মড গার্ড থাকতে হবে। ঝুঁকিপূর্ণ জায়গা পাড়ি দিয়ে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যাপারটি মাথায় রাখার জন্য তিনি জাহাজ মালিকদের প্রতি আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়াল অ্যাডমিরাল এম সোহায়েল। বন্দর সচিব মোহাম্মদ ওমর ফারুকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে নাবিকদের বরণ করেন সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী। এ সময় কেএসআরএমের ডিএমডি শাহরিয়ার জাহান রাহাত ও এসআর শিপিংয়ের সিইও মেহেরুল করিম বক্তব্য রাখেন।

হাছান মাহমুদ বলেন, আমার খুব ইচ্ছে ছিল আজকে চট্টগ্রামে থেকে আমাদের সাহসী নাবিকদের বরণ করার। কিন্তু ঢাকায় জরুরি রাষ্ট্রীয় কাজ থাকায় আমি চট্টগ্রামে আসতে পারিনি। তবে ডিজিটাল বাংলাদেশে আমি ডিজিটালি যুক্ত হয়ে আমাদের নাবিকদের বরণ করছি, অভিনন্দন জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, এমভি আবদুল্লাহ জিম্মি হওয়ার পর থেকে প্রতি মুহূর্তে আমরা খবর রাখছিলাম। কয়েক দফা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান যারা সেখানে নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত, তারা বল প্রয়োগের কথা বলছিল। হয়ত সেটা আমরা করতে পারতাম। কিন্তু সবাই অক্ষত থাকত কিনা সেটা নিয়ে সংশয় ছিল।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মালিক কর্তৃপক্ষের অসীম ধৈর্য ছিল। তারা লক্ষ্য রেখেছিল, লোক ক্ষয় যাতে না হয়। সবাইকে অভিনন্দন। সাহসের জন্য নাবিকদের ধন্যবাদ। আপনাদের সেখানে ঈদের নামাজ আদায় করতে দেখে আমাদের খুব শান্তি লেগেছে। সবাই উদ্বেগে ছিল। সবকিছু সুন্দরভাবে হয়েছে, সেজন্য ধন্যবাদ। তিনি নাবিকদের সুস্থতা, কর্মজীবনে সফলতা ও দীর্ঘায়ু কামনা করেন।

অনুষ্ঠানে সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, শুকরিয়া জানাই; কারণ ফিরে এসেছেন আমাদের দেশের সন্তানেরা। দুই মাস সবাই উৎকণ্ঠায় ছিল। সরকারের সাহসিকতা, দূরদর্শী সিদ্ধান্ত ও দক্ষতার কারণে নাবিকরা সুস্থভাবে ফিরে এসেছেন। এক ঝাঁক পায়রা যেন জীবনে ফিরেছে। আমি উচ্ছ্বসিত, আনন্দিত ও খুশি। সবার সুস্থতা কামনা করি। তিনি বলেন, এই নগরের মানুষ আমাকে ভোট দিয়েছেন। নগরপিতা হিসেবে আজ মনে হচ্ছে আমার সন্তানেরা ফিরে এসেছে।

চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম সোহায়েল বলেন, সোমালিয়ার জলদস্যুরা পৃথিবীর কুখ্যাত জলদস্যু। এরা অত্যন্ত দুর্ধর্ষ। এরা ভয়ানক। আমাদের নাবিকরা অকুতোভয়। সরকারের পক্ষ থেকে দৃঢ় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় পররাষ্ট্র ও নৌ মন্ত্রণালয়, নৌবাহিনী এবং অন্য সংস্থাগুলো একসাথে কাজ করেছে। রাষ্ট্রের একটি টিমওয়ার্কের মাধ্যমে আজকের এই সফলতা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসুস্থভাবে ২৩ নাবিকের দেশে ফেরা বাংলাদেশেরই জয়
পরবর্তী নিবন্ধমনে ভয় থাকলেও বাইরে স্ট্রং ছিলাম