খাগড়াছড়িতে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের জায়গা দখল করে এলজিইডির প্রকৌশলী তৃপ্তি শংকর চাকমার বিরুদ্ধে ভবন নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। তিনি বর্তমানে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) খাগড়াছড়ি জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে কর্মরত। সড়কের জায়গা দখল করা তিনতলা সেই পাকা ভবনে ‘বাঁশঝাড়’ নামে একটি রেস্টুরেন্ট চালু করেছেন তিনি। ইতোমধ্যে ভবনটি অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার জন্য চিঠি দিয়েছে খাগড়াছড়ি সড়ক বিভাগ। যার একটি কপি এই প্রতিবেদকের হাতেও আসে।
সরেজমিনে দেখা যায়, খাগড়াছড়ি–চট্টগ্রামের সড়কের হাতির কবরের বিপরীতে সড়কের পাকা ভবন নির্মাণ করেছেন প্রকৌশলী তৃপ্তি শংকর চাকমা। তবে তার স্ত্রী কেমি চাকমাকে ভবনের মালিক হিসেবে দেখানো হয়েছে। তিনতলা ভবনের নিচতলায় স্টোর রুম এবং শৌচাগার স্থাপন করা হয়েছে। ভবনের দ্বিতীয় তলায় রয়েছে লাইভ কিচেন ও রেস্টুরেন্ট। উপর তলায় ছাদ ঢালাই করা হলেও তার নির্মাণ কাজ পুরোপুরি শেষ হয়নি।
খাগড়াছড়ি–চট্টগ্রাম মহাসড়ক ঘেঁষে নির্মিত এই ভবনটি সড়কের জায়গা দখল করে নির্মাণ করা হয়েছে দাবি করে সড়ক ও জনপথ বিভাগ জানায়, ভবনটি অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার জন্য চলতি বছরের ৯ এপ্রিল চিঠি দেয়া হয়েছে।
খাগড়াছড়ি সড়ক বিভাগের উপ–বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. তৌহিদুল বারী স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, সওজ হাটহাজারী–ফটিকছড়ি–মানিকছড়ি–মাটিরাঙা–খাগড়াছড়ি সড়কের ৮৮তম কিমি স্থানে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের হুকুম দখলকৃত জায়গা অবৈধভাবে জবর দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। যা সম্পূর্ণ বেআইনি ও সরকারি সম্পত্তি দখলের শামিল। মহাসড়ক আইন ২০২১ এর ৯নং ধারা ১২নং দফা অনুযায়ী সরকারের পূর্বানুমোদন ব্যতীত মহাসড়কের নিয়ন্ত্রণ রাখার মধ্যে কোনো অবকাঠামো নির্মাণ, হাট–বাজার বসানো বা ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে মহাসড়কের কোনো অংশ ব্যবহার করা যাবে না। করলে তা দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। মহাসড়ক আইন ২০২১ অনুসারে তার স্থাপনাটি অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। এমতাবস্থায়, এই পত্র প্রাপ্তির পর তাৎক্ষণিকভাবে তাকে নিজ দায়িত্বে স্থাপনাসহ অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার জন্য বলা হল। অন্যথায় তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
খাগড়াছড়ি সদর সড়ক শাখা–১ এর তালিকাতেও উল্লেখ রয়েছে– রেস্টুরেন্টের ভবন নির্মাণের জন্য সড়কের অন্তত ১৮০ ফুট জায়গা দখল করে নেয়া হয়েছে। এই বিষয়ে জানতে চাইলে এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী তৃপ্তি শংকর চাকমা সড়ক বিভাগের দেয়া চিঠি পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, এটি সড়কের জায়গা নয়। এটি আমাদের রের্কডকৃত জায়গা। এই বিষয়ে আমি তাদের (সওজ) সঙ্গে কথা বলব।
খাগড়াছড়ি সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ–বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. তৌহিদুল বারী বলেন, চেঙ্গী স্কয়ার থেকে জিরো মাইল পর্যন্ত যতগুলো অবৈধ স্থাপনা রয়েছে তার ম্যাপ হালনাগাদের কার্যক্রম চলছে। হালনাগাদ শেষে উচ্ছেদসহ আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।