কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের চকরিয়ার ফুলছড়ি বনবিটের সংরক্ষিত বনভূমিতে শ্যালো মেশিন বসিয়ে ভূ–গর্ভস্থ বালু উত্তোলন করছে একদল বালুখেকো। এতে পাহাড় ধ্বসের পাশাপাশি নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ। অপরদিকে অবৈধভাবে উত্তোলিত সেই বালু পরিবহন করতে গিয়ে লণ্ডভণ্ড করে ফেলা হয়েছে খুটাখালী ছড়ার তীরবর্তী একমাত্র সড়কটিও। এতে যানবাহন ও মানুষের চলাচলের ক্ষেত্রে চরম দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে।
সরেজমিন দেখা যায়, চকরিয়া উপজেলার খুটাখালী ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ফুলছড়ি বনবিটের সংরক্ষিত বনভূমিতে গর্ত করে শক্তিশালী শ্যালো মেশিন বসিয়ে অন্তত ৭–৮ স্থানে বালু উত্তোলন করছে একটি সংঘবদ্ধ চক্র। এতে আশেপাশের পাহাড় ধ্বসে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে ভেঙে পড়ছে অনেক বড় বড় গাছ।
স্থানীয় লোকজন জানায়, স্থানীয় কিছু দুর্বৃত্ত দিন–রাত শ্যালো মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন অব্যাহত রেখেছে। দিনে বন্ধ থাকলেও রাতভর ডাম্পার ট্রাকে করে বালু বিক্রি চলছে। এসব এলাকার বসতবাড়িও ধ্বসে পড়ার শঙ্কায় রয়েছেন স্থানীয় লোকজন। এছাড়া ওই এলাকার সড়কও চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। তারা অভিযোগ করে আরো বলেন, এসব বালু উত্তোলন কাজে স্থানীয় বন বিভাগের লোকজনের সহায়তা রয়েছে। ফুলছড়ি রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন আহমেদ বলেন, সংরক্ষিত বনভূমি এলাকা থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকবার অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। সম্প্রতি অভিযান পরিচালনা করে স্থানীয় পিয়াইজ্জাকাটা এলাকার কবির আহমদের ছেলে মো. মনির, তার ভাই মো. হেলাল ও জয়নগর এলাকার বশির ড্রাইভারের ছেলে মো. ইকবালের বিরুদ্ধে বন আইনে মামলা দেওয়া হয়েছে।
রেঞ্জ কর্মকর্তা আরও জানান, বালুদস্যুদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়ায় তাদের ভাই লিটন, ইব্রাহিমসহ অপরাপর দুর্বৃত্তরা আরো বেপরোয়া হয়ে বালু উত্তোলন করে যাচ্ছে। এই অবস্থায় বন বিভাগের জনবল কম থাকায় বারবার অভিযান পরিচালনা করা সম্ভব হয় না। এছাড়া বালুখেকোরা কয়েকবার বনবিভাগের লোকজনকে গাড়ি চাপা দেওয়ার চেষ্টা চালিয়েছে। যোগ করেন রেঞ্জ কর্মকর্তা।
কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন সরকার বলেন, সংরক্ষিত বনের এক কিলোমিটার এলাকায় কোন ধরনের বালু উত্তোলন আইনগতভাবে নিষিদ্ধ। এ কারণে এসব এলাকায় জেলা প্রশাসন কর্তৃক ইজারা দিলেও বনবিভাগের আপত্তির মুখে বর্তমানে ইজারা বন্ধ রয়েছে। তিনি আরও বলেন, এরপরও কিছু দুর্বৃত্ত অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে। তাদের বিরুদ্ধে বন বিভাগ আইনগত ব্যবস্থা নেবে। পাশাপাশি স্থানীয় লোকজনকে বালু উত্তোলনে নিরুৎসাহিত করতে সচেতনতামূলক প্রচারণা চালানো হবে।