সংবিধানের দোহাই দিয়ে পার পাওয়া যাবে না : খসরু

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ১১ এপ্রিল, ২০২৩ at ৫:৫১ পূর্বাহ্ণ

আওয়ামী লীগ সংবিধানের সবকিছু লঙ্ঘন করেছে অভিযোগ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, সংবিধান লঙ্ঘন করে সংবিধানের বাইরে গিয়ে তারা নির্বাচন করতে রাজি নেই। তবে বাংলাদেশের সংবিধানের কাজ হচ্ছে বাংলাদেশের মানুষের সুরক্ষা দেওয়া। দেশের মানুষের অধিকার ও ভোটাধিকার নিশ্চিত করা। জীবনের নিরাপত্তা দেওয়া। আজকে তারা সংবিধানের সব কিছু লঙ্ঘন করেছে। মানুষের ভোটের অধিকার, মানবাধিকার, আইনের অধিকার, বাকস্বাধীনতা ও গণমাধ্যামের স্বাধীনতা তারা কেড়ে নিয়েছে। সংবিধান যা যা সুরক্ষা দিয়েছে, সবকিছু তারা লঙ্ঘন করেছে। কিন্তু ভোট চুরির বেলায় সংবিধানের দোহাই তারা দিচ্ছে। দিনের ভোট রাতে নিচ্ছে। গতকাল চকবাজার কাতালগঞ্জস্থ একটি কমিউনিটি সেন্টারে ডক্টরস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) চট্টগ্রাম শাখার উদ্যোগে চিকিৎসক সমাবেশ ও ইফতার মাহফিলের প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সংবিধানের দোহাই দিয়ে পার পাওয়া যাবে না হুঁশিয়ারি দিয়ে সাবেক এই বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাকশাল করার সময় বাংলাদেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার হনন করে ১৩ মিনিটের মাথায় গণতন্ত্রকে হত্যা করে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করে তারা সংবিধান পরিবর্তন করেছে। আবার তারাই বলছে সংবিধানের বাইরে গিয়ে ভোট করা যাবে না। যারা গণতন্ত্র কেড়ে নিয়েছে, আইনের শাসন কেড়ে নিয়েছে তারা যদি সংবিধানের দোহাই দেয় সেটা চলবে না। সংবিধানের দোহাই দিয়ে পার পাওয়া যাবে না।

আমীর খসরু বলেন, রাষ্ট্রপতি সাহাবউদ্দিন সাহেবের সময় ঐক্যবদ্ধভাবে সরকারের অধীনে নির্বাচন হয়েছিলো। তখন সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছিল না। পরবর্তীতে বেগম খালেদা জিয়া সংবিধান সংশোধন করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিয়েছিল। দুইটাই সংবিধান দুইটাই কিন্তু তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হয়েছিল। একটা নির্বাচনের আগে ও একটা নির্বাচনের পরে। আমি সরকার প্রধানকে বলবো আপনি চিন্তা করেন আগে সংবিধান সংশোধন করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দেবেন নাকি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের পরে যে সংসদ আসবে তারাই সংবিধান সংশোধন করবে। দুইটাই সম্ভব। চিন্তা করেন কি করবেন। সংবিধানের দোহাই দিয়ে পার হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিয়ে জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা ছাড়া আগামীদিনে ভোট চুরি করে ক্ষমতায় যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। ভোটচোরদের তালিকা হচ্ছে। দেশে ও বিদেশেও হচ্ছে। ভোট চোরদের রেহায় নেই।

প্রধান বক্তা ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার বলেন, দেশের কোন সেক্টরেই ঠিক নেই। সরকার ভয় পেয়ে গেছে। সারাদেশে আমাদের কর্মসূচিতে বাঁধা দেওয়ার চেষ্টা করেছে, কিন্তু তারা সফল হতে পারে নাই। সাধারণ মানুষ এখন বিএনপির সাথে রাস্তায় নেমেছে। এই সরকারের আর সময় নেই। বিএনপি এখনো চুড়ান্ত আন্দোলনের ডাক দেয়নি, যখন ডাক দিবে তখন এই আওয়ামীলীগের কি হবে আল্লাহই জানে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ডা. হারুন আল রশিদ বলেন, বর্তমান অবৈধ শেখ হাসিনা সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। এর ভেতরে কোনো ফাঁকফোকর কিছু নেই। নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতেই হবে।

ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, সংসদে প্রধানমন্ত্রী দৈনিক প্রথম আলো দেশ ও গণতন্ত্রের শত্রু বলে সমালোচনা করেছেন। এরা যখন ড. ইউনুস ও প্রথম আলোর বিরুদ্ধে বলছে তখন বুঝতে হবে তাদের পায়ের তলায় মাঠি নেই। তাই চিকিৎসকদেরকে আগামী আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।

কাদের গণি চৌধুরী বলেন, সরকার দেশের মানুষকে দাসত্বের শৃঙ্খলে বন্দি করে রেখেছে, নিরপরাধ মহিলা জেসমিনকে হত্যা করেছে। তাই এই সরকারকে আর সময় দেওয়া যাবেনা। সরকারের পতনের জন্য আগামীতে ১ দফার আন্দোলনে সবাইকে শরিক হতে হবে।

আবুল হাশেম বক্কর বলেন, ২০১৪ ও ১৮ সালের মতো নির্বাচন করার দিনেেশষ হয়ে গেছে। আমরা এখন রাজপথে মরণপণ লড়াই করছি। তরুণ চিকিৎসকরা মাঠে নামলেই সরকারের পতন হবে।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ড্যাবের সভাপতি অধ্যাপক ডা. মো. জসিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে ও জেলা ড্যাবের সাধারণ সম্পাদক ডা. বেলায়েত হোসেন ঢালীর পরিচালনায় আরও বক্তব্য রাখেন ড্যাব কেন্দ্রীয় কমিটির মহাসচিব অধ্যাপক ডা. আবদুস সালাম প্রমুখ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধঈদের আনন্দ গরিব-অসহায় পরিবারের মাঝে ছড়িয়ে দিতে চাই
পরবর্তী নিবন্ধবঙ্গবাজারের অগ্নিকাণ্ডে ‘নাশকতা পায়নি’ ডিএসসিসির তদন্ত কমিটি