শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথমবার সিরিজ জিতল বাংলাদেশ

খালি হাতে ফিরছে না টাইগাররা

ক্রীড়া প্রতিবেদক | বৃহস্পতিবার , ১৭ জুলাই, ২০২৫ at ৬:৩২ পূর্বাহ্ণ

শ্রীলঙ্কা সফরে টেস্ট এবং ওয়ানডে সিরিজ হারার পর টিটোয়েন্টি সিরিজ নিয়েও শঙ্কায় ছিল টাইগাররা। কেননা প্রথম ম্যাচেই তারা পরাস্ত হয় স্বাগতিকদের কাছে। কিন্তু না, বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়িয়ে তাদের শেষটা ভালো করলো। তাই দেশে একেবারে খালি হাতে ফিরছে না আর টাইগাররা। গতকাল বুধবার কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে সিরিজ নির্ধারণী তৃতীয় ম্যাচে বাংলাদেশ ৮ উইকেটের বড় ব্যবধানে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কাকে পরাজিত করে। আর তাতে করে বাংলাদেশ টিটোয়েন্ট সিরিজ জিতে নেয় ২১ ব্যবধানে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এর আগে টিটোয়েন্টি সিরিজ জেতা হয়নি বাংলাদেশের। এটিই বাংলাদেশের প্রথম সিরিজ জয়। দেশের বাইরে সব মিলিয়ে পঞ্চম।

গতকাল টস জিতে প্রথম ব্যাট করা স্বাগতিক শ্রীলঙ্কা ৭ উইকেট হারিয়ে ১৩২ রানে থামে। জবাবে বাংলাদেশ ১৬.৩ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছে যায়। বাংলাদেশের ফেরার ম্যাচে ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে রাঙান শেখ মেহেদি হাসান। পরে বাকিটা সারেন তানজিদ হাসান। শুরুটা বেশ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গেই করেছিলেন পাথুম নিশাঙ্কা। শরীফুলের করা প্রথম ওভারেই তুলে নেয় ১৪ রান। তবে সে ওভারের শেষ বলেই উইকেট তুলে নেন শরীফুল। তাওহিদ হৃদয়ের ক্যাচ হয়ে ফিরেন ৬ রান করা কুশল মেন্ডিস। পরের ওভারে শেখ মেহেদীর ঘূর্ণিতে স্লিপে ক্যাচ দেন কুশল পেরেরা। ফিরেন রানের খাতা খোলার আগেই। ইনিংসের পঞ্চম এবং মেহেদী নিজের দ্বিতীয় ওভারে তুলে নেন দিনেশ চান্দিমালকে। ৩৪ রানে তৃতীয় উইকেটের পতন ঘটে লঙ্কানদের। শেখ মেহেদী নিজের পরের ওভারে দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে বোল্ড করেন চারিথ আসালাঙ্কাকে। লঙ্কান অধিনায়ক ৮ বল খেলে করতে পারেন মাত্র ৩ রান।

টানা তিন ওভারে ৩ উইকেট তুলে নেন মেহেদী। বাংলাদেশি এই অফ স্পিনার নিজের শেষ ওভারেও উইকেট পেয়েছেন। ইনিংসের ১১তম ওভারে তিনি নিজেই ক্যাচ নিয়ে ফিরিয়েছেন একপ্রান্ত ধরে লড়াই করতে থাকা ওপেনার নিশাঙ্কাকে। ৩৯ বলে ৪৬ রান করেন লঙ্কান এই ব্যাটার। ৬৬ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে তখন খাদের কিনারায় স্বাগতিকরা। এবার উইকেট শিকারের তালিকায় যোগ দিলেন শামীম পাটোয়ারী। তার বলে কামিন্দু মেন্ডিস রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়ে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে তানজিম সাকিবের দুর্দান্ত ক্যাচ হন। ১৫ বলে মেন্ডিস করেন ২১ রান। ৮৮ রানে ৬ উইকেট হারানো শ্রীলঙ্কা শেষদিকে দাসুন শানাকার ব্যাটে লড়াই করার মতো পুঁজি পায়। শানাকা ২৫ বলে ৪টি চার এবং ২টি ছক্কায় ৩৫ রান করে অপরাজিত থাকেন। আর তাতেই শ্রীলঙ্কার স্কোর গিয়ে দাঁড়ায় ১৩২ রানে। শেখ মেহেদী ১১ রানের বিনিময়ে নেন ৪টি উইকেট। একটি করে উইকেট শরিফুল, মোস্তাফিজুর রহমান আর শামীম পাটোয়ারীর।

জবাব দিতে নেমে প্রথম বলেই পারভেজ হোসেন ইমনের উইকেট হারায় বাংলাদেশ। টানা দ্বিতীয় ম্যাচে শূন্য রানে আউট হন তিনি। ১৫ ম্যাচের ক্যারিয়ারে এটি তার পঞ্চম শূন্য, এর তিনটিই প্রথম বলে। পরের ওভারে রিভিউ নিয়ে নিজের উইকেট বাঁচান লিটন। পরে তানজিদের সঙ্গে গড়েন ৫০ বলে ৭৪ রানের জুটি। এক পর্যায়ে মনে হচ্ছিল এই জুটিতেই জিতে যাবে বাংলাদেশ। নবম ওভারে কামিন্দুর বলে বড় শটের খোঁজে ক্যাচ আউট হন ২৬ বলে ৩২ রান করা লিটন। পরে ২৭ বলে ক্যারিয়ারের পঞ্চম ফিফটি পূর্ণ করেন তানজিদ। হৃদয়ের সঙ্গে অবিচ্ছিন্ন তৃতীয় উইকেট জুটিতে তিনি যোগ করেন ৪৮ বলে ৫৯ রান। ১টি করে চারছক্কায় ২৫ বলে ২৭ রানে অপরাজিত থাকেন হৃদয়। তানজিদ অপরাজিত থাকেন ৪৭ বলে ৭৩ রান করে। ৬টি ছক্কা এবং ১টি চার ছিল তার ইনিংসে। ম্যান অব দ্যা ম্যাচ হন শেখ মেহেদি হাসান আর ম্যান অব দ্যা সিরিজ অধিনায়ক লিটন কুমার দাস।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচার দাবিতে চক্ষু হাসপাতালের অপথালমোলজি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
পরবর্তী নিবন্ধইসির ওয়েবসাইট থেকে নৌকা বাদ