শেষ হলো ১২ কৃষকের স্বপ্ন

সীতাকুণ্ডে টমেটো গাছে লেট ব্লাইট রোগ

লিটন কুমার চৌধুরী, সীতাকুণ্ড | মঙ্গলবার , ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ at ৭:২৩ পূর্বাহ্ণ

কৃষক নাজিম উদ্দিন ৪০ শতাংশ জমিতে টমেটো চাষ করেন। ফলন ভালো হলেও কিন্তু গত সপ্তাহে তার টমেটো খেতের কয়েকটি গাছের কাণ্ডে কালো ও লালচে রং দেখা দেয়। এখন তার উৎপাদিত সব টমেটো ও টমেটোগাছ ঝলসে গেছে। এ কারণে আর্থিকভাবে চরম লোকসানের মুখে পড়েছেন তিনি। তবে শুধু নাজিম উদ্দিন নন, সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারী ইউনিয়নের ইমামনগর গ্রামে এমন পরিস্থিতির শিকার হয়েছেন আরও ১১ জন কৃষক। যাদের প্রত্যেকের বিক্রির উপযোগী টমেটো নষ্ট হয়ে গেছে।

তবে সীতাকুণ্ড কৃষি বিভাগ জানান, বর্তমানে কুয়াশাচ্ছন্ন বৈরী আবহাওয়ায় টমেটো গাছের পাতা ও কাণ্ড কালো পচা সমস্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে, যাকে লেট ব্লাইট বা নাবী ধসা রোগ বলে। এ রোগ দেখা দেয়ার কৃষকদের কিছু পরামর্শ দেন তারা।

সরেজমিনে দেখা যায়, প্রায় টমেটো গাছ মারা গেছে। গাছের পাতাগুলো কালো হয়ে ঝলসে গেছে, কাণ্ডগুলো নুইয়ে পড়েছে। বড় বড় টমেটো ঝরে আইলে পড়ে আছে। অধিকাংশ টমেটো পচে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা সার ও কীটনাশক দিয়েও সমাধান মিলছে না। অনেকেই ঋণ নিয়ে টমেটো চাষ করেছিলেন। এখন গাছ মরে যাওয়াতে তারা সবাই দিশেহারা। কৃষক সুলতান মোস্তাকিম বলেন, এতে দুই কানি জমি বর্গাসহ টমেটোর চারা, কীটনাশক, সার ও দিনমজুর মিলে লাখ টাকার মতো খরচ হয়েছে। গাছগুলো শুকিয়ে নষ্ট হওয়ায় ক্ষেত থেকে খরচের টাকাই ওঠার সম্ভাবনা নেই। কীটনাশক ব্যবহার করেও হচ্ছে না কোনো লাভ। ইমামনগর গ্রামের আরেক কৃষক মো. সোহেল ২৮ শতক জমিতে টমেটো চাষ করেছেন। তার খেতেও একই রোগ দেখা দিয়েছে। পুরো টমেটো খেতের গাছ ঝলসে গিয়ে পচে গেছে। একই এলাকার ১৬০ শতক জমিতে টমেটো চাষ করেছেন ছয়জন কৃষক। এ ছাড়া আরও অনেক কৃষক টমেটো চাষ করেছেন। তাদের প্রত্যেকের খেতের টমেটো বিক্রি কিংবা খাওয়ার অনুপযোগী হয়ে গিয়েছে। এতে চরম হতাশ হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। একই এলাকার কৃষক রুবেল, রাশেদ, নূর মিয়া বলেন, তারা এ বছর জমি বর্গা, বীজ, কীটনাশক, সার, চাষ, দিনমজুরসহ কানি প্রতি ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকার মতো খরচ করে টমেটো আবাদ করেছেন। অথচ ভাইরাসের কারণে টমেটো পাকার আগেই গাছ মরে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এখন জমি থেকে টমেটো বিক্রি করে খরচের টাকাই উঠবে না বলে লোকসানের দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তারা।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ হাবিবুল্লাহ বলেন, ঘন কুয়াশা এবং একই জমিতে বারবার টমেটো চাষ ও অতিরিক্ত মাত্রায় ইউরিয়া সার প্রয়োগের কারণে টমেটো গাছ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এ জন্য আমরা কৃষকদের কিছু পরামর্শ দিয়েছি। তিনি বলেন, ইমামনগরের টমেটোগাছে ধরা পড়া রোগটির নাম লেট ব্লাইট বা নাবী ধসা রোগ। এ রোগে আক্রান্ত হলে কয়েক দিনের মধ্যে ফসল নষ্ট হয়ে যায়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধরাজা চার্লস ক্যান্সারে আক্রান্ত
পরবর্তী নিবন্ধকক্সবাজারে পাড়া-মহল্লায় বাড়ছে কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাত