মাত্র কদিন হলো নেপালে ভারতকে হারিয়ে সাফ অনূর্ধ্ব–২০ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জয়ের পথে এগিয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ। বড়দের সেদিনের সে হারের প্রতিশোধ যেন নিল ভারতের অনূর্ধ্ব–১৭ ফুটবল দল। টুর্নামেন্ট সেই একই। সাফ অনূর্ধ্ব–১৭ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ। প্রতিপক্ষও সেই দু দল। ভারত আর বাংলাদেশ। দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলের শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ের যেকোন পর্যায়ে ভারতের সাথেই মূলত লড়াইটা হয় বাংলাদেশের। আগের আসরে অনূর্ধ্ব–২০ টুর্নামেন্টে ভারতকে হারাতে পারলেও এবার অনূর্ধ্ব–১৭ টুর্নামেন্টে হারাতে পারেনি। যদিও টুর্নামেন্টের প্রথম শ্যাচে দারুন লড়াই করেছিল বাংলাদেশের কিশোররা। ৯০ মিনিট পর্যন্ত ম্যাচ ছিল গোলশূন্য ড্র। ফলে দুই দলই এক পয়েন্ট পাওয়ার অপেক্ষায়। পাঁচ মিনিট ইনজুরি সময়ের খেলা চলছিল। আর সে ইনজুরি সময়ের দ্বিতীয় মিনিটের মাথায় কর্নার থেকে গোল করে উল্লাসে মাতে ভারত। শেষ পর্যন্ত ০–১ গোলের হার নিয়ে সাফ অনূর্ধ্ব–১৭ যাত্রা হয়েছে বাংলাদেশের। সপ্তাহ দেড়েক আগে ভুটানে থিম্পুর এই চাংলিমিথাংয়েই বাংলাদেশ সিনিয়র দল স্বাগতিকদের বিপক্ষে শেষ মুহূর্তে গোল হজম করে হেরেছিল। বাংলাদেশ ভারতের সঙ্গে পাল্লা দিয়েই খেলছিল। আক্রমণ–পাল্টা আক্রমণ, গোলের সুযোগ সবই তৈরি করেছে বাংলাদেশ শুধু গোল ছাড়া। ভারতও গোল আদায় করতে পারেনি। অনেকটাই নিশ্চিত হওয়া এক পয়েন্ট হাতছাড়া হয় ইনজুরি সময়ে। ভারত কর্নার থেকে বক্সের মধ্যে ক্রস করে। সুমিত শর্মা বাংলাদেশি ডিফেন্ডারদের মাঝে লাফিয়ে উঠে হেড করে ম্যাচের ডেডলক ভাঙেন। জটলার মধ্যে এক ড্রপ খেয়ে বল জালে জড়ায়। পিছিয়ে পড়ার পর বাংলাদেশের হাতে সময় ছিল মিনিট তিনেকেরও কম। এর মধ্যেও সুযোগ পেয়েছিল বাংলাদেশের কিশোররা। কাউন্টার অ্যাটাকে গোলরক্ষককে একা পেয়েও বাংলাদেশের ফরোয়ার্ড ঠিকমতো হেড নিতে পারেননি। ফলে হার নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে। এই জয়ের ফলে টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে উঠার পথ প্রশস্ত হয়ে গেল ভারতের।
ম্যাচে নিশ্চিত গোলের সুযোগ মিস বাংলাদেশই প্রথম করেছে। দ্বিতীয়ার্ধের প্রথম দশ মিনিটে সংঘবদ্ধ আক্রমণে গোলরক্ষককে একা পেয়েও বল জালে পাঠাতে ব্যর্থ হয় বাংলাদেশের এই স্ট্রাইকার। ভারতও বাংলাদেশের ডিফেন্স সেভাবে ভাঙতে পারেনি। তবে ৭৫ মিনিটে ভারতীয় ফরোয়ার্ডের নেওয়া দূরপাল্লার শট ফেরত আসে বাংলাদেশের ক্রসবারে লেগে। ফলে সে যাত্রায় বেঁচে যায় বাংলাদেশ। দ্বিতীয়ার্ধে ভারত বাংলাদেশের চেয়ে বেশি কর্নার আদায়ের পাশাপাশি আক্রমণও করেছে। কিন্তু গোল আদায় করতে পারেনি দু দলের কেউই। বাংলাদেশ এবং ভারত ম্যাচ মানেই উত্তেজনা। অনূর্ধ্ব–১৭ পর্যায়ের ম্যাচেও সেই আঁচ ছিল। ভুটানি রেফারি দ্বিতীয়ার্ধে ভারতের কোচিং স্টাফের একজনকে হলুদ কার্ড দেখান।
বাংলাদেশি টেকনিক্যাল ডিরেক্টর সাইফুল বারী টিটু জুনিয়র দলের কোচ হিসেবেই হারলেন অভিষেক ম্যাচে। গত মাসে এই স্টেডিয়ামে দুটি ফিফা প্রীতি ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ জাতীয় দল। প্রথম ম্যাচ জিতলেও দ্বিতীয় ম্যাচ হেরেছিল বাংলাদেশ শেষ দিকে গোল খেয়ে। সিনিয়রদের পথ ধরে যুবারাও ডুবলো শেষ দিকে গোল খেয়ে। বাংলাদেশের দ্বিতীয় ম্যাচ ২২ সেপ্টেম্বর।