শেষ বিকেলে টাইগারদের ব্যাটিং বিপর্যয়

৬ উইকেট নিয়ে তাইজুলের ‘১৫০’

ক্রীড়া প্রতিবেদক | রবিবার , ১০ এপ্রিল, ২০২২ at ৬:২৫ পূর্বাহ্ণ

দ্বিতীয় দিন শেষে হতাশায় মাঠ ছেড়েছে টাইগাররা। বোলারদের ব্যর্থতায় প্রতিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকা তাদের প্রথম ইনিংসে পায় বিশাল সংগ্রহ। আর তার জবাব দিতে নেমে ব্যাটিং বিপর্যয়ে দিন শেষ করে বাংলাদেশ। টাইগারদের সামনে এখন ফলোঅন এড়ানোর লড়াই করতে হবে। পোর্ট এলিজাবেথে সিরিজের দ্বিতীয় ও টেস্টের দ্বিতীয় দিনে দক্ষিণ আফ্রিকা সব উইকেট হারিয়ে প্রথম ইনিংসে ৪৫৩ রানের পাহাড় গড়েছে। জবাবে ৫ উইকেট হারিয়ে দিনশেষে ১৩৯ রান তোলে টাইগাররা। স্বাগতিকদের চেয়ে এখনও ৩১৪ রানে পিছিয়ে সফরকারীরা। ৩০ রানে মুশফিকুর রহিম ও ৮ রানে অপরাজিত আছেন ইয়াসির রাব্বি। দক্ষিণ আফ্রিকার রান পাহাড় টপকাতে নেমে শুরুতেই উইকেট হারায় বাংলাদেশ। প্রথম ওভারে রানের খাতা খোলার আগেই বিদায় নেন প্রথম টেস্টের সেঞ্চুরিয়ান ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয়। এবার রানের খাতাও খুলতে পারেননি তিনি। জয়ের বিদায়ের পর হাল ধরেন তামিম ও শান্ত। দুজন মিলে কিছুটা স্বস্তি দেন দলকে। গড়েন ৮১ রানের জুটি। ওয়ানডে স্টাইলে ব্যাটিং করে ফিফটির দিকেও ছুটছিলেন দীর্ঘদিন পর দলে ফেরা তামিম। কিন্তু ব্যক্তিগত ৪৭ রানে মুলডারের বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন এই বাঁহাতি ওপেনার। ৫৭ বল মোকাবিলা করে তিনি বাউন্ডারি হাঁকিয়েছেন ৮টি। তামিমের পর আরেক সেট ব্যাটার শান্তও ইনিংস বড় করতে পারেননি। লেগ বিফোরেই মুলডারের দ্বিতীয় শিকার হওয়ার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ৭৪ বলে ৬ চারে ৩৩ রান। দলীয় ৮৫ রানে ৩ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
দলের বিপর্যয় কাটানোর সুযোগ ছিল অধিনায়ক মোমিনুল হকের সামনে। কিন্তু টাইগার দলপতির ব্যাটে ফের দেখা দেয় রান খরা। আর এই বাঁহাতি ব্যাটারকে (৬) লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলে ম্যাচে নিজের তৃতীয় উইকেট শিকার করলেন বিধ্বংসী প্রোটিয়া পেসার উইয়ান মুলডার। মাত্র ৫ রানেই ৩ উইকেট তুলে নেন তিনি। ৩ ওভার বাদে ডুয়ানে অলিভিয়েরের বলে সরাসরি বোল্ড হয়ে ফেরেন আরেক অভিজ্ঞ ব্যাটার লিটন দাস (১১)। এরপর বাকি সময় ফ্লাডলাইটের আলোয় প্রোটিয়া পেসারদের দাপটের মুখে কোনোমতে পার করেন মুশফিক ও রাব্বি।
এর আগে ৫ উইকেটে ২৭৮ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিন সকালে ব্যাটিংয়ে নামে স্বাগতিকরা। আর দিনের প্রথম ওভারেই রিভিউ হারায় বাংলাদেশ। ওভারের শেষ বল কাইল ভেরেইনের প্যাডে লাগলে লেগ বিফোরের আবেদন করেন বোলার ও ফিল্ডাররা। আম্পায়ার সাড়া না দিলে খালেদের জোরাজুরিতেই রিভিউ নেন অধিনায়ক মোমিনুল। কিন্তু রিপ্লেতে দেখা যায় বল স্ট্যাম্প মিস করতো। রিভিউ নষ্ট করার পর অবশ্য দিনের প্রথম ব্রেক থ্রুটা আসে খালেদের হাত ধরেই। তার গুড লেন্থের বলে সরাসরি বোল্ড হয়ে ফিরেন দক্ষিণ আফ্রিকার কাইল ভেরেইনে (২২)। কিন্তু এরপর মহারাজ ও মুলডার মিলে গড়েছেন ৮০ রানের দারুণ এক জুটি। মহারাজ মাত্র ৫০ বলে তুলে নিয়েছেন টেস্ট ক্যারিয়ারের চতুর্থ ফিফটি। ৭৭ বলে মুলডারের ব্যাট থেকে আসে ৩৩ রান। দ্বিতীয় সেশনেও তান্ডব চালিয়েছেন মহারাজ। ঝড়ের গতিতে রান তোলার পাশাপাশি সেঞ্চুরির দিকেও ছুটছিলেন তিনি। তবে সেঞ্চুরি থেকে ১৬ রান দূরত্বে তাকে থামিয়ে দেন তাইজুল। তার বলে সুইপ খেলতে গেলে ব্যাট ফাঁকি দিয়ে স্ট্যাম্প ভেঙে দেয় বল। ৯৫ বলে ৯ চার ও ৩ ছক্কায় ৮৪ রান করেন মহারাজ। তাকে বিদায় করে ম্যাচে নিজের পঞ্চম উইকেটের দেখা পান তাইজুল। এই নিয়ে সাদা পোশাকে ১০ বার পাঁচ বা ততোধিক উইকেট শিকার করলেন তিনি।
মহারাজ বিদায় নিলেও লিজাড উইলিয়ামসকে নিয়ে ফের প্রতিরোধ গড়েন হার্মার। দুজনে মিলে যোগ করেন ৩৫ রান। হার্মারকে থামান তাইজুল। তার ঘূর্ণিতে বিভ্রান্ত হয়ে স্ট্যাম্পিংয়ের ফাঁদে পড়েন হার্মার (২৯)। অনেকটা সময় রিপ্লে দেখে আউটের সিদ্ধান্ত দেন আম্পায়ার। সেই সঙ্গে টেস্ট ক্যারিয়ারের ১৫০ তম উইকেটের দেখা পান তাইজুল। পরের ওভারে লিজাডকে (১৩) ফিরিয়ে প্রোটিয়াদের ইনিংস গুঁটিয়ে দেন মিরাজ। বল হাতে তাইজুল ৬টি, খালেদ ৩টি ও মিরাজ ১টি উইকেট নেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবোয়ালখালীতে বিএনপির ইফতার মাহফিলে পুলিশের বাধা
পরবর্তী নিবন্ধকুয়েট, চুয়েট ও রুয়েটের সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা ৬ আগস্ট