শেরে বাংলা এ.কে ফজলুল হক ছিলেন একজন নিঃস্বার্থ রাজনীতিবিদ। আমৃত্যু তিনি গণমানুষের মুক্তির লক্ষ্যে কাজ করে গেছেন। এই মহান ব্যক্তিত্ব জন্মেছিলেন ১৮৭৩ সালের ১৬ অক্টোবর।
ফজলুল হকের জন্ম ঝালোকাঠি জেলার সাটুরিয়া গ্রামে। তাঁর প্রকৃত নাম আবুল কাশেম ফজলুল হক। নির্ভীক ও অকুতোভয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে তিনি ‘শেরে বাংলা’ উপাধিতে ভূষিত হন। তাঁর বাবা মোহাম্মদ ওয়াজেদ আলী ছিলেন খ্যাতনামা উকিল। ফজলুল হকের শিক্ষা, কর্ম ও রাজনৈতিক জীবন – সবই ছিল বর্ণাঢ্য। ১৮৯৫ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণিতে এম.এ এবং ১৮৯৭ সালে ডিস্টিংশন সহ বি.এল পাস করে আইন ব্যবসা শুরু করেন। এরপর কিছুকাল অধ্যাপনা, কিছুকাল ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেসি করে ১৯১১ সালে আবার ফিরে যান আইন ব্যবসায়। তখন থেকেই শুরু হয় রাজনীতিতে নিরবচ্ছিন্ন পদচারণা। রাজনৈতিক জীবনে তিনি বঙ্গীয় ব্যবস্থাপক সভার সদস্য, ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সেক্রেটারি, নিখিল ভারত মুসলিম লীগের প্রেসিডেন্ট, মুসলিম লীগ ও কৃষক-প্রজা পার্টির কোয়ালিশন সরকারের মুখ্যমন্ত্রী সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। মুসলিম লীগ নেতা মুহম্মদ আলী জিন্নাহ্র সাথে মতবিরোধ হলে ১৯৪১ সালে কোয়ালিশন মন্ত্রি সভা থেকে ফজলুল হক সরে দাঁড়ান।
মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালে তিনি ঋণ সালিসী বোর্ড গঠন করেন এবং কৃষকের উচ্চ ঋণ মওকুফ করেন। প্রজাস্বত্ব আইন পাস, জমিদারি প্রথা উচ্ছেদ সহ বিভিন্ন প্রজাহিতৈষী কাজের মাধ্যমে ফজলুল হক শোষিত-বঞ্চিত মানুষদের একজন হয়ে ওঠেন। ১৯৬২ সালের ২৭ এপ্রিল ঢাকায় এই মনীষীর জীবনাবসান ঘটে।