‘ভালোবাসার মানুষটির প্রতি ভালোবাসা যেমন তীব্রতর থাকে, তেমনি অভিমানের তীব্রতাও থাকে বেশি। অবুঝ মন তখন অনুভূতি শূন্য হয়ে পড়ে। মানুষ কী করতে কী করে, তার ঠিক থাকে না।’
নাট্যকার শেক্সপিয়রের উক্তি এটি। আইনজীবী রিংকু দাশ যেন শেক্সপিয়রের সেই উক্তিটিকেই সত্যে পরিণত করলেন জীবনের বিনিময়ে। স্বামীর সঙ্গে অভিমান করে ২২ ফেব্রুয়ারি রাতের কোনো এক সময়ে নিজ রুমের সিলিংয়ের সাথে কাপড় পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি। তার এ সিদ্ধান্তে বাক্রুদ্ধ স্বামী কর আইনজীবী রাজন দাশ। কিছুতেই মনকে প্রবোধ দিতে পারছেন না, একটা মাত্র রাত বাড়ি না ফেরায় ভালোবাসার মানুষটি এমন কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে পারে। তিন বছরের শিশুকন্যা পরমা দাশের জন্যও কি সে নিজেকে সামলাতে পারত না?
এ মৃত্যুকে কেন্দ্র করে পরস্পরের বিরুদ্ধে উভয় পরিবারের কারো কোনো অভিযোগ নেই। তবে পুলিশ তদন্ত চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নগরীর কোতোয়ালী থানাধীন আলকরণ ২ নম্বর গলির বাসিন্দা রিংকু দাশ। অন্যদিকে স্বামী রাজন দাশের বাড়ি সাতকানিয়ার চরতি ইউনিয়নে দুরদুরী গ্রামে। রিংকু ডবলমুরিং থানাধীন পাঠানটুলির নাজিরপুল এলাকার ভাড়া বাসায় স্বামী, কন্যা ও শাশুড়ির সাথে থাকতেন।
ডবলমুরিং থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন আজাদীকে বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ভাড়া বাসা থেকে কর আইনজীবী রিংকু দাশের মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়েছে। এ বিষয়ে পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে স্বামীর সাথে অভিমান করে পারিবারিক কলহের জেরে আত্মহত্যা করেছেন বলে রিংকু ও রাজনের পরিবারের লোকজন জানিয়েছে। এরপরও হত্যা না আত্মহত্যা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
স্বামী রাজন দাশ জানান, সে আর আমি কমার্স কলেজে ব্যাচমেট ছিলাম। একই সাথে সিএ করেছি। দীর্ঘদিনের প্রেম শেষে চার বছর আগে বিয়ে করি। বাসায় আমার মা থাকত বলে তার সাথে ঝগড়া বিবাদ হতো। এখন কেন, কী কারণে আত্মহত্যার মতো সিদ্ধান্ত নিল বুঝতে পারছি না।
তিনি আরো বলেন, ২১ ফেব্রুয়ারি রাতে আমি সাতকানিয়ায় গ্রামের বাড়ি যাই। রিংকু মেয়েকে নিয়ে বাসায় ছিল। ওই দিন রাতে কেন বাসায় আসিনি তা নিয়ে গতকাল (২২ ফেব্রুয়ারি) রাতে ঝগড়া হয়। পরে রাত ৮টা থেকে মোবাইলে কল দিয়ে গেলেও তার ফোন ব্যস্ত পাই। সকালে খবর পেয়েছি সে আত্মহত্যা করেছে। পরে পুলিশ এসে তার মরদেহ উদ্ধার করে।