বাঁশখালীর প্রধান সড়ক সম্প্রসারণে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে এলাকা পরিদর্শনে আসছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এবিএম আমিন উল্লাহ নুরী। তিনি আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি বাঁশখালী পরিদর্শন করবেন বলে জানান এমপি মুজিবুর রহমান। সম্প্রতি উপজেলা পরিষদের বিভিন্ন অফিস পরিদর্শন এবং উপজেলা আইনশৃঙ্খলা সভায় বক্তব্যকালে এ তথ্য জানান এমপি। এ সময় তিনি বলেন, বাঁশখালীর প্রধান সড়ক চারলেইন বাস্তবায়ন দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা। তার আগে জনগণের দুর্ভোগ যাতে সামান্য হলেও কমে তার জন্য জরুরি ভিত্তিতে দুই লেইন করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
জানা যায়, বাঁশখালীতে অবস্থিত এসএস পাওয়ার প্ল্যান্টে যাতায়াতের শীলকূপ–গন্ডামারা সড়কের কাজ দীর্ঘ সময়েও শেষ না হওয়ায় এবং উপজেলার অভ্যন্তরীণ সড়কগুলো সংস্কার না হওয়াতে ভোগান্তিতে পড়ছে জনগণ। উপজেলার পুঁইছড়ি প্রেম বাজার থেকে ছনুয়া সড়ক, মনছুরিয়া বাজার থেকে বাঁশখালী ইকোপার্ক সড়ক, পৌরসভার দারোগাবাজার হয়ে মনকিচর জালিয়াখালী বাজার সড়ক, থানার উত্তর পাশ হয়ে আস্করিয়া পাড়া–কাহারঘোনা মিনজীরিতলা সড়ক, পৌরসভার মিয়ারবাজার থেকে হারুন বাজার–সরল বাজার সড়ক, চেচুরিয়া বাজার হাবিবের দোকান থেকে কাথরিয়া চুনতি বাজার সড়ক, বৈলছড়ি খানবাহাদুর বাজার থেকে কাথারিয়া বাজার সড়ক, কালীপুর ছলিহার বাপের পুল এলাকা থেকে বাহারছড়া বশিরউল্লাহ বাজার হয়ে সমুদ্র সৈকতগামী সড়ক, কালীপুর গুনাগরী খাসমহল থেকে বাহারছড়া উপকূলীয় কলেজ ও পশ্চিম বাঁশখালী উচ্চ বিদ্যালয় সড়ক, পুকুরিয়ার চাঁনপুর থেকে চা বাগান ও সাতকানিয়াগামী সড়কগুলো অনেকটা চলাচল অযোগ্য হয়ে পড়েছে। যা জরুরি ভিত্তিতে সংস্কার করা প্রয়োজন।
উপজেলার শীলকূপ ইউনিয়ন ও গন্ডামারা ইউনিয়নের পশ্চিম গন্ডামারার সাথে বাঁশখালী প্রধান সড়কের একমাত্র সংযোগ সড়ক এসএস পাওয়ার প্ল্যান্টের সড়ক। এই সড়ক দিয়ে দুই ইউনিয়নের শত শত গাড়ির পাশাপাশি হাজারো জনগণ চলাচল করে। পৌনে ৪ কোটি টাকা বরাদ্দে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল দপ্তর এলজিইডি চট্টগ্রামের আওতায় রয়েল ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড কনস্ট্রাকশন নামে একটি প্রতিষ্ঠান কাজটি শুরুর একবছর অতিক্রম হলেও কাজের কোনো অগ্রগতি নেই বলে দাবি স্থানীয়দের। ধুলোর কারণে চলাফেরা করতে ভোগান্তিতে পথচারীরা। সড়কের কোনো কোনো অংশে কার্পেটিং তুলে ফেললেও ঠিকমতো বালু ও পাথরের মিশ্রণ ঢেলে রোলিং না করায় খানাখন্দে পরিণত হয়েছে। এ সড়কে যাতায়াতকারী বাঁশখালী সরকারি বঙ্গবন্ধু উচ্চ বিদ্যালয়, মনকিচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও প্রায় দেড় হাজার শিক্ষার্থী। শিক্ষার্থীরা জানান, হেঁটে যাতায়ত করতে গিয়ে ধূলাবালির কারণে বিভিন্ন ধরনের রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। জনস্বার্থে সড়কটির দ্রুত সংস্কার জরুরি।
ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান রয়েল ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড কনস্ট্রাকশনের সাইট ইঞ্জিনিয়ার মো. মাহাবুব বলেন, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে সড়কের কাজ ব্যাপকভাবে শুরু করা হবে। খুব শিগগির সড়কের কাজ সম্পন্ন করা হবে বলে জানান তিনি।
শীলকূপ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কায়েশ সরওয়ার সুমন বলেন, সড়কটি টাইমবাজার হয়ে গন্ডামারা পর্যন্ত দীর্ঘ ৫ কিলোমিটার দূরত্বের। এটি বিশাল জনগোষ্ঠির যোগাযোগের মাধ্যম। এ সড়ক দিয়ে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা চরম দুর্ভোগে যাতায়ত করে। সড়কের কার্পেট খুলে ফেলায় নির্মাণ কাজের ধীরগতির কারণে চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে জনগণকে। তারা মাঝেমধ্যে আসে কাজ শুরু করে আবার চলে যায়। এখনো পর্যন্ত সড়কের এক–তৃতীয়াংশ কাজই শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।
বাঁশখালী উপজেলা প্রকৌশলী কাজী ফাহাদ বিন মাহমুদ বলেন, বাঁশখালীর প্রধান সড়কের সাথে সংযুক্ত ও অভ্যন্তরীণ অনেক সড়কের সংস্কার কাজ চলমান রয়েছে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে উন্নয়ন কাজ কিছুদিন বন্ধ থাকলেও তা পুনরায় শুরু হচ্ছে। আশা রাখি সকলের সহযোগিতায় কাজগুলো যথাসময়ে শেষ করতে পারব।