শীতের মুগ্ধতায়…

আইরিন সুলতানা | শনিবার , ১৮ জানুয়ারি, ২০২৫ at ৫:৪৬ পূর্বাহ্ণ

শীত যেন প্রকৃতির এক শিল্পী, প্রতিটি ভোরে যিনি ক্যানভাসে আঁকেন অপার্থিব সৌন্দর্যের গল্প। শিশির ভেজা ঘাসে সূর্যের প্রথম রশ্মি, কুয়াশায় মোড়া বটগাছের নিচে খেজুর গাছের রস সংগ্রহ, আর মৃদু হিমেল হাওয়ায় মনোমুগ্ধকর সেই গন্ধ যেন হৃদয়ের গভীরে রোমান্টিকতা ঢেলে দেয়।

শীতের সকাল মানেই প্রকৃতির এক অন্যরূপ। মনে হয় যেন ভালোবাসার এক চাদরে পুরো পৃথিবী জড়িয়ে আছে। হিমেল হাওয়া, শিশিরভেজা ঘাস, আর কুয়াশার চাদরে ঢাকা প্রকৃতি শীতের প্রতিটি ভোরে এক নতুন গল্প শোনায়। আর সেই গল্পের প্রতিটি অধ্যায়ে জড়িয়ে থাকে মুগ্ধতা, ভালোবাসা আর স্মৃতির ছোঁয়া। শীতের প্রভাতে খেজুর গাছ থেকে টপ টপ করে ঝরে পড়া রসের আওয়াজে ঘুম ভাঙার অনুভূতিটাই যেন অনন্য।

খেজুরের গুড়ের মিষ্টি গন্ধে ভেজা পিঠা আর পায়েসের ধোঁয়া উঠা বাটিতে যেন শীতের সকালের রসনা পূর্ণতা পায়। নতুন চালের গরমাগরম গুড় ও নারকেল দিয়ে ভাপা পিঠা, বিন্নি চালের গুড়া দিয়ে বিনিজালি পিঠার স্বাদ, খোলা উঠানে চুলোয় পিঠা সেঁকার আনন্দ আর ধোঁয়ার সাথে মিশে থাকা হাসিআড্ডার মুহূর্তগুলো মনের গভীরে রেখে যায় অনন্ত সুখের অনুভূতি। হালকা চাদরের উষ্ণতায় বসে এক কাপ ধোঁয়া ওঠা চা যেন শীতের সকালকে এক অন্য মাত্রায় পৌঁছে দেয়। প্রিয়জনের সাথে এই মুহূর্তগুলো হয়ে ওঠে অবিস্মরণীয়, যেন প্রকৃতি নিজেই আমাদের জীবনে রোমান্টিকতার নতুন গল্প লিখে চলেছে। অতিথি পাখির কলতান আর নদীর বুকে নৌকা ভেসে চলার দৃশ্য যেন প্রেমের এক অলিখিত কবিতা। শীতের নরম রোদে নদীর ধারে বসে থাকা কিংবা বনের নির্জনতায় হাঁটতে হাঁটতে সেই বিশেষ কারো হাত ধরা, এটাই হয়তো প্রকৃতির প্রেমে পড়ার সেরা উপায়।

শীতে পাহাড় যেন তার সমস্ত রহস্যময়তা নিয়ে ধরা দেয়। মেঘে আচ্ছাদিত পাহাড়ের চূড়ায় দাঁড়িয়ে দূরে তাকালে মনে হয়, পৃথিবীটা যেন ভালোবাসার এক বিশাল মঞ্চ। আর সমুদ্র ঢেউয়ের ছন্দময় স্পর্শ আর দূর নীল দিগন্ত যেন হৃদয়ের গহীনে প্রেম জাগিয়ে তোলে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপিঠাপুলি উৎসব বাঙালির সংস্কৃতির অংশ
পরবর্তী নিবন্ধআমাদের দেশ