ফেনীর পরশুরাম উপজেলায় ৭ বছরের এক শিশুকে হত্যার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে তার মাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে; যাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে সাত দিনের রিমান্ড চেয়েছে পুলিশ। গত মঙ্গলবার দুপুরে হত্যা ঘটনায় রাতে মামলা হলে শিশুটির মা আয়েশা আক্তার ও সৎ মা রেহানা আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গতকাল বৃহস্পতিবার আয়েশাকে গ্রেপ্তার এবং রেহানাকে বাদীর জিম্মায় দেওয়া হয়েছে বলে পরশুরাম মডেল থানার ওসি মো. শাহাদাত হোসেন খাঁন জানান। গ্রেপ্তার ৩০ বছর বয়সি আয়েশা পৌর এলাকার মো. নুর নবীর সাবেক স্ত্রী। নিহত শিশুর নাম উম্মে সালমা লামিয়া। সে তার বড় বোনসহ বাবা ও সৎ ওসি শাহাদাত হোসেন বলেন, লামিয়া হত্যায় তার বাবা নুর নবী মামলা করলে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আয়েশা ও রেহানাসহ কয়েকজনকে আটক করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আয়েশা তার মেয়েকে হত্যার পরিকল্পনার কথা স্বীকার করেছেন। তবে হত্যাকারী হেলমেট পরিহিত দুই যুবককে এখনও শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী লামিয়ার বড় বোন ১২ বছরের ফাতেমা আক্তার নিহার বরাতে ওসি বলেন, দুজন যুবক মাথায় হেলমেট পরে বাসায় প্রবেশের পর তারা হেলমেট খুলে ফেলেন। তাদের মধ্যে একজনের গায়ের রং কালো ও মোটা। আগেও তাদের এলাকায় সে দেখেছে। ওই দুজনের সঙ্গে তার মা আয়েশার পরিচয় ছিল। হত্যাকারীদের দেখলে সে চিনবে। নিহা পুলিশকে বলে, বেশ কিছুদিন আগে স্টেশন রোডের বাসার নীচ তলায় তার মায়ের সঙ্গে ওই দুই যুবক ছিলেন। পরদিন সকালে তাদের বাসা থেকে বের হয়ে যেতে দেখেছে সে।
লামিয়ার বাবা নুর নবী বলেন, বিবাহ বিচ্ছেদের পর থেকে আয়েশার সঙ্গে আমার বিরোধ চলছিল। সে আমাকে ও আমার দ্বিতীয় স্ত্রীকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিল। ঘটনার দিন না পেয়ে মেয়েকে হত্যা করিয়েছে। রিমান্ডে আয়েশা কাছ থেকে ঘটনার কারণ উদঘাটনের পাশাপাশি দ্রুত সময়ের মধ্যে হত্যায় জড়িত ওই দুই যুবককে গ্রেপ্তার করা হবে বলে জানান ওসি শাহাদাত।
পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার বাঁশপদুয়া গ্রামে হেলমেট পরা দুই যুবক নুর নবীর ভাড়া বাসায় গিয়ে নিজেদের পল্লী বিদ্যুতের কর্মী পরিচয়ে দিয়ে দরজা খুলতে বলেন। সে সময় নিহা ও লামিয়া দরজা খুলে দিলে তারা ঘরে ঢুকে কসটেপ দিয়ে লামিয়ার মুখ–হাত–পা বেঁধে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। তবে নিহা একজনের হাতে কামড় দিয়ে পাশের কক্ষে গিয়ে দরজা বন্ধ করে নিজেকে রক্ষা করে। লামিয়াকে হত্যার পর তারা চলে গেলে নিহা পাশের বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেয়। সেখানে অজ্ঞান হয়ে গেলে তাকে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙে ভর্তি করা হয়।