শিশু-বিশ্ব : তিন গুণীর সম্মাননা

গৌতম কানুনগো | শুক্রবার , ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ at ৭:১৯ পূর্বাহ্ণ

অধ্যাপক ডাঃ প্রণব কুমার চৌধুরী প্রতিষ্ঠিত ‘শিশুবিশ্ব’ নামক সংস্থাটি শিশুস্বাস্থ্য, শিশুশিক্ষা এবং শিশুসাহিত্য সংস্কৃতি বিষয়ে চট্টগ্রামে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। গত ২০ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে এ সংস্থার উদ্যোগে তিন গুণিজনকে সম্মাননা প্রদান করা হয়। তাঁরা হলেনশিশুস্বাস্থ্য সেবায় অসামান্য অবদানের জন্য ২০১৯ সালে স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল প্রফেসর ডাঃ নুরুন্নাহার ফাতেমা বেগম, শিশু শিক্ষায় অবদানের জন্য ২০১৭ সালে একুশে পদকে ভূষিত অধ্যাপক আবুল মোমেন এবং সংস্কৃতিতে অবদানের জন্য ২০২২ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার প্রাপ্ত যাত্রাশিল্পী মিলন কান্তি দে। এখানে উল্লেখ্য ডা. প্রণব কুমার চৌধুরীর মারেনুবালা চৌধুরী, বাবাসন্তোষ কুমার চৌধুরী, দাদুযোগেন্দ্র নাথ দাশ, দিদিমারসবালা দাশ, ঠাকুরদাভারতচন্দ্র চৌধুরী এবং ঠাকুরদিননীবালা চৌধুরীর নামে তিন গুণীজনকে সম্মাননা দেয়া হয়। ঘড়ির কাঁটা ঠিক ৪.৫৯ মিনিট এমন সময় মাইক্রোফোনের সামনে উপস্থিত হন আবৃত্তিশিল্পী আয়েশা হক শিমু। তিনি সকলকে স্বাগত জানিয়ে অনুষ্ঠান শুরু করেন। উঠোন সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সদস্যদের পরিবেশনায় “ছন্দে আনন্দে রবীন্দ্র নজরুল” বৃন্দ আবৃত্তির মাধ্যমে অনুষ্ঠানের শুভসূচনা হয়। সভাপতির ছিলেন শিশুবিশ্বের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অধ্যাপক ডা. প্রণব কুমার চৌধুরী। স্বাগত বক্তব্য দেন শিশুবিশ্বের নির্বাহী পরিচালক, বাংলা একাডেমির ফেলো, কবি রাশেদ রউফ। তিনি বলেনশিশুদের নিয়ে যাঁরা কাজ করছে মূলতঃ তাঁদেরকে মূল্যায়ন করাই শিশুবিশ্বের উদ্দেশ্য। তিনগুণীজনকে সম্মাননা দিতে পেরে শিশুবিশ্ব সম্মানিত হয়েছে। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন কথাসাহিত্যিক বিশ্বজিৎ চৌধুরী, কবি ও সাংবাদিক ওমর কায়সার, বিশিষ্ট শিক্ষা সংগঠক এবং বায়েজিদ মডেল স্কুল এন্ড কলেজের সভাপতি মোঃ মাজহারুল হক, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ হোসনে আরা এবং প্রাবন্ধিক অধ্যাপক কাঞ্চনা চক্রবর্ত্তী। ওমর কায়সার বলেনশিশু বিশ্বের কর্মকান্ড যেন আগামীতে অব্যাহত থাকে, মাঝপথে যেন থেমে না যায়। মোঃ মাজহারুল হক বলেনসমাজকে আলোকিত করতে হলে “শিশুবিশ্বের মতো আরো সংগঠন দরকার। ডাঃ হোসনে আরা বলেনগুণীজনদের সম্মাননা দিলে আগামী প্রজন্ম অনেক কিছু জানতে পারবে। এরপর একে একে অনুভূতি ব্যক্ত করেন তিন গুণীজন। অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে মিলন কান্তি দে বলেনশিশুবিশ্ব ক্রমান্বয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেযা সত্যিই প্রশংসার দাবীদার, তিনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতার উদ্বৃতি দেন, তিনি বলেনরবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা সাহিত্যের আলোকবর্তিকা, আমাদের সমাজে ডাঃ প্রণব কুমার চৌধুরীর মতো মহৎ মানুষের দরকার। আমাদের যাত্রাশিল্পে বর্তমানে অবক্ষয় শুরু হয়ে গেছে। তিনি প্রয়াত যাত্রাশিল্পী অমলেন্দু বিশ্বাস এবং মঞ্জুশ্রী মুখার্জীর নাম বিশেষভাবে উল্লেখ করেন।

অধ্যাপক আবুল মোমেন বলেনআজকালকার দিনে আমরা চিকিৎসকদের সামাজিক কাজকর্মে খুব একটা দেখি না, তাঁরা শুধু চেম্বার নিয়ে ব্যস্ত থাকেন, তিনি Basic Needs Formal এবং Informal নোবেল বিজয়ী অমর্ত্য সেন এবং বিল গেইটসের কথা উল্লেখ করেন। ব্রিগেডিয়ার জেনারেল অধ্যাপক ডাঃ নুরুন্নাহার ফাতেমা বেগম অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তাকে (ডাঃ প্রণব কুমার চৌধুরী) ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান। তিনি বলেন, সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে চট্টগ্রামের সাথে অন্যান্য অঞ্চলের তুলনা হয় না। শিশুদেরকে সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের মাধ্যমে গড়ে তুলতে পারলে তারা কখনো বিপথে যাবে না। “মা” কে নিয়ে ডাঃ প্রণব কুমার চৌধুরীর রচিত কবিতা বৃন্দ আবৃত্তির মাধ্যমে পরিবেশন করেন “উঠোন সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের” সদস্যরা। অনুষ্ঠানের সভাপতি তিনগুণীজনকে উত্তরীয় পরিয়ে দেন এবং তাঁদের হাতে সম্মাননা স্মারক ও নগদ অর্থ প্রদান করেন। সমাপনী বক্তব্যে সভাপতি ডাঃ প্রণব কুমার চৌধুরী বলেনআমাদের দেশের স্বাস্থ্য কাঠামো আমরা যথাযথভাবে এখনো চালু করতে পারিনি। তিন গুণীজনকে তিনি অভিনন্দন জানান। বর্ণিল অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য “শিশুবিশ্ব”কে জানাই ধন্যবাদ। জয় হউক “শিশুবিশ্বের”।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআগ্রাবাদ বাদামতলী মোড়ে ফুটওভার ব্রিজ করা হোক
পরবর্তী নিবন্ধশিশুর সামাজিকীকরণের মুখ্য ভূমিকা পরিবারের