শিশু কার কাছ থেকে শেখে? শিশু তার চারপাশ থেকে শেখে। মা বাবা ভাইবোন পাড়াপড়শী। শিশু যখন ঘরের বাইরে একা একা যেতে পারে না তখন পরিবারের মানুষ তার শিক্ষা গুরু। মা বাবা তাকে সবার চেয়ে বেশি সময় দেয় বলে শুরুর শিক্ষাটা সে পায়। প্রথমে সে মা বাবাকে অনুকরণ করবে। যেহেতু ভালোমন্দ বিচারের ক্ষমতা তার জন্মায়নি সেহেতু এ ব্যাপারে তার নিজের কোনো ভূমিকা নেই, কেবল অনুকরণ করে যাওয়া ছাড়া।
কিন্তু সে দেখেছে তার মা বাবা রাগ হলে যে কথা গুলো বলে। তাই, তারও রাগ রাগ হলে সে ঐসব কথাগুলো বলে।
শিশু তার পিতা মাতাকে গভীরভাবে অনুকরণ করে। তাই মা বাবা যদি চায় তাদের ছেলেমেয়ে বিধিসম্মতভাবে গড়ে উঠুক তাহলে ছেলেমেয়েদের সামনে তাঁদের ভালো কাজের, ভালো ব্যবহারের দৃষ্টান্ত তুলে ধরতে হবে।
শিশুর মনে বিরূপ প্রভাব ফেলে এমন কাজগুলো শিশুর সামনে করা যাবে না।
পিতামাতারা তাদের সন্তানদের জন্য কামনা করেন সুখের শৈশব। কিন্তু সুখের শৈশব বলতে আমরা কী বুঝি? আমরা ছেলেমেয়েদের সুন্দর সুন্দর পোশাক পরাই। তাদের দেখি হাসিখুশি।
মানুষের প্রতি শ্রদ্ধা, সততা, মাতৃভূমি রক্ষার্থে মনোভাব এই গুণাবলী নিয়ে কেউ জন্মায় না। তা অর্জিত হতে পারে একমাত্র সুশিক্ষার মাধ্যমেই। শিশু বিকাশ লাভ করে নিজে নিজে, সে আমাদের চেষ্টা প্রচেষ্টার ওপর নির্ভরশীল হয়। একদিন নতুন প্রজন্ম গড়ে তুলবে এই শিশুরা সুন্দর এক পৃথিবী। যেখানে সব শিশু প্রাণ খুলে হাসতে পারবে। নির্ভয়ে সত্যকে প্রকাশ করতে পারবে। শিশুকে একদম মারধর করবেন না বা অযথা ভয় দেখাবেন না। শাস্তি দিন এভাবে কোনও অন্যায় করলে একটা চেয়ারে চুপচাপ বসিয়ে রাখুন এককোণে। তবে বাচ্চারা খুব তাড়াতাড়ি ভুলে যায়। তাই ওকে বার বার বলুন তুমি অন্যায় করেছ বলে এভাবে বসিয়ে রাখা হয়েছে। তোমাকে যদিও আমি খুব ভালোবাসি কিন্তু অন্যায় করেছ বলে আদর করছি না ‘এখানে বসিয়ে রেখেছি। এতে শিশু বুঝবে সে অন্যায় করেছে এবং ধীরে ধীরে সচেতন হয়ে উঠতে পারে। শিশুরা হয়তো সে মুহূর্তে পড়তে ইচ্ছে করছে না। কিন্তু আপনি জোর করে, ধমকে খেলনা কেড়ে নিয়ে তাকে পড়তে বসালেন। এরকম কখনওই করবেন না। এতে শিশু জেদি ও অবাধ্য হয়ে পড়বে যা তার পরবর্তী জীবনকে যথেষ্ট প্রভাবিত করবে। শিশুকে বুঝিয়ে বলতে হবে, তবে ভবিষ্যতে পড়াশোনাকে আর সে ভয় পাবে না।