শিল্পাচার্য জয়নুল : উপমহাদেশের কিংবদন্তি চিত্রশিল্পী

| মঙ্গলবার , ২৮ মে, ২০২৪ at ৬:৫৫ পূর্বাহ্ণ

জয়নুল আবেদীন (১৯১৪১৯৭৬)। শিল্পাচার্য। উপমহাদেশের কিংবদন্তি চিত্রশিল্পী। চিত্রশিল্প বিষয়ক শিক্ষার প্রসারে আমৃত্যু প্রচেষ্টার জন্য তিনি শিল্পাচার্য উপাধি লাভ করেন। জয়নুল আবেদীনের জন্ম ১৯১৪ খ্রিষ্টাব্দের ২৯শে ডিসেম্বর ময়মনসিংহে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। বাংলাদেশে চিত্রশিল্পকে প্রাতিষ্ঠানিক ও আধুনিক শিল্পকলায় প্রতিষ্ঠিত করার ক্ষেত্রে তাঁর ভূমিকা অনন্য। ছেলেবেলা থেকেই শিল্পকলার প্রতি তার গভীর আগ্রহ ছিল। মাত্র ষোল বছর বয়সে বাড়ি থেকে পালিয়ে তিনি বন্ধুদের সাথে কলকাতায় গিয়েছিলেন শুধু গভর্নমেন্ট স্কুল অব আর্টস দেখার জন্য। কলকাতা গভর্নমেন্ট স্কুল অব আর্টস ঘুরে আসার পর সাধারণ পড়াশোনায় জয়নুল আবেদিনের মন বসছিল না। তাই ১৯৩৩ খ্রিষ্টাব্দে ম্যাট্রিক পরীক্ষার আগেই স্কুলের পড়ালেখা বাদ দিয়ে কলকাতায় চলে যান এবং মায়ের সমর্থনে গভর্নমেন্ট স্কুল অব আর্টসএ ভর্তি হন। জয়নুল আবেদিন ১৯৩৩ থেকে ১৯৩৮ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত কলকাতার সরকারি আর্ট স্কুলে পড়েন। ১৯৩৮ খ্রিষ্টাব্দে কলকাতার গভর্নমেন্ট স্কুল অব আর্টসের ড্রইং অ্যান্ড পেইন্টিং বিভাগ থেকে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। ছাত্রাবস্থায় সর্বভারতীয় এক চিত্রপ্রদর্শনীতে শিল্পীর আঁকা ছয়টি জলরং শ্রেষ্ঠ চিত্র হিসেবে স্বর্ণপদক পেয়েছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ভয়াবহতায় সারা বাংলা জুড়ে যে দুর্ভিক্ষ আর মহামারি ছড়িয়ে পড়ে তা তিনি নিপুণভাবে ফুটিয়ে তোলেন তাঁর ছবির মাধ্যমে। এসব ছবি তাঁকে নিয়ে য়ায় খ্যাতির এক অনন্য উচ্চতায়। ঢাকায় তাঁরই নেতৃত্বে এবং কামরুল হাসান, শফিউদ্দিন আহমদ, আনোয়ারুল হক, শফিকউল আমিন, খাজা শফিক আহমদ প্রমুখ শিল্পী বন্ধুর সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠিত হয় ঢাকা আর্ট স্কুল। বর্তমানে এটিই বাংলাদেশ চারু ও কারুকলা ইনস্টিটিউট। সোনারগাঁয় লোকশিল্প জাদুঘর এবং জয়নুল আবেদীন সংগ্রহশালা প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। তাঁর আঁকা উল্লেখযোগ্য চিত্রকর্মের মধ্যে রয়েছে: দুর্ভিক্ষ চিত্রমালা, সংগ্রাম, গাঁয়ের বধূ, আদিবাসী রমনী, মনপুরা৭০ প্রভৃতি। ১৯৭৬ খ্রিস্টাব্দের ২৮ই মে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএই দিনে
পরবর্তী নিবন্ধচাটগাঁইয়া পোয়া মেডিত পইল্লে লোয়া