মাঠজুড়ে সবুজ পাতার মধ্যে হালকা বেগুনি আর সাদা রঙের ফুল কৃষকের মনে দোলা দিচ্ছে রঙিন স্বপ্ন। যতদূর চোখ যায়, মাঠের পর মাঠ শিম আর শিম। মীরসরাই উপজেলার মাঠে মাঠে এখন চলছে শিম তোলা ও পরিচর্যার কাজ। ইতিমধ্যে শিম চাষ করেই অনেকের ভাগ্য পরিবর্তন হয়ে গেছে। এবছরও ভাল দামেই বিক্রি হচ্ছে সকল সবজি।
মৌসুমের শুরুতে বৃষ্টির জন্য এবার শীতের সবজি অনেকটা দেরীতেই আসছে। তবুও ৭০ টাকা কেজি এখনো স্থানীয় বাজারে। পাইকারি দর ৫০ টাকার উপরে। তাই সকল খুচরা–পাইকারী বিক্রেতাই এখন লাভবান। চলতি মৌসুমে চট্টগ্রাম জেলায় চার হাজার হেক্টর জমিতে শিম আবাদ হয়েছে।
মীরসরাই উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এবার শিমের আবাদ হয়েছে প্রায় ৭০০ হেক্টর জমিতে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে অন্তঃত ১০ হাজার টন। আশা করা যাচ্ছে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়াবে এবার। ইতিমধ্যে কিছু কিছু শিম বাজারে উঠতে শুরু করেছে আর ভাল দাম পেয়ে লাভবান কৃষকরা। মার্চ পর্যন্ত শিম বহাল থাকবে এই অঞ্চলে। শীতের শুরুর আগে বৈরী আবহাওয়ার দরুন উত্তরবঙ্গসহ সর্বত্র মৌসুমি সবজি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় এবার দাম এখনো কমেনি।
মীরসরাই উপজেলার মহামায়া সেচ প্রকল্প বেষ্টিত এলাকায়ও বেড়েছে মৌসুমী সবজির চাষ। পলি মাটির ঢালার কৃষকরা বাণিজ্যিকভিত্তিতেই এখন শিমচাষ করছেন। গত দশ বছর বছর ধরে এই জনপদে শিম আবাদ বেড়েছে কয়েকগুন।
দুর্গাপুর গ্রামের শিমচাষি আফজাল জানান, তার এলাকায় বর্ষার পানি নেমে যাওয়ার পর জমিতে আগাম জাতের শিম লাগানো হয়। ইতোমধ্যে জমি থেকে তিনবার শিম তুলে বিক্রি করেছেন। যেভাবে গাছে ফুল আসছে তাতে ভালো ফলন পাওয়া যাবে। আগামী ফেব্রুয়ারি–মার্চ মাস পর্যন্ত জমি থেকে শিম তোলা যাবে।
উপজেলার ওয়াহেদপুর গ্রামের একাধিক চাষি জানান, এসব জমি ধান চাষের উপযুক্ত নয়। তাই তাদের মতো অনেকেই শিমচাষ বিকল্প হিসেবে বেঁছে নিয়েছেন। আগাম জাতের শিমচাষ করে ভাগ্য ফিরেছে উপজেলার অনেক কৃষকের। অটো ও রূপবান নামে দুই রকমের শিমের বেশ ভালো চাহিদা রয়েছে।
মীরসরাই উপজেলা কৃষি সুপারভাইজার নুরুল আলম জানান, মৌসুমী এই সবজি সর্বাধিক অর্থকরি ও লাভজনক। বিনিয়োগও সবচেয়ে কম। তাই শিমচাষে সকলকেই এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।