শিক্ষা-মানবিক ও বিজ্ঞান

ড.ওবায়দুল করিম | সোমবার , ১৪ আগস্ট, ২০২৩ at ৭:৩৫ পূর্বাহ্ণ

খাদ্য সংগ্রহ বা উৎপাদনের সমস্যা না থাকলে শিক্ষা বা শেখার কোন প্রয়োজনই হতনা। খাদ্য সংগ্রহকারী থেকে খাদ্য উৎপাদকে পরিণত না হলে, আজকের বিশাল শিক্ষার পরিধি ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি বা সোশিওলজি শিরোনামের বিষয়ই থাকতোনা। এর অর্থ হলো মানুষের প্রয়োজনে শিক্ষা, আর সমাজবদ্ধ মানুষের জন্য শিক্ষা।

প্রকৃতি নিয়মের অধীন। নদীর গতিপথ দক্ষিণমুখী? না সবখানে নয়। উত্তর মেরুর কাছের নদীগুলোর গতিপথ উত্তরমুখী। মাধ্যাকর্ষণ কেন্দ্রের কাছের নদী যদি উত্তর মেরুর কাছে হয়, তাহলে তার গতিপথ হবে উত্তরের দিকে। চাঁদের আকর্ষণে জোয়ারভাটা হয়, জানলেই জাহাজ নেভিগেশনে সুবিধা হয়। প্রকৃতির এসব নিয়ম জানাই হচ্ছে শিক্ষা। শিক্ষা আসলে বেঁচে থাকবার উপায়। ুঝঁৎারাধষ ড়ভ ঃযব ভরঃঃবংঃচ, এবং মানুষ ভরঃঃবংঃ বা যোগ্যতম হয়েছে শিক্ষার কারণে। প্রকৃতিকে বদলানোর আগে প্রকৃতির নিয়ম জানতে হয়। প্রাচীনকালে মানুষের সীমাবদ্ধ চাহিদা, শেখার ক্ষেত্রটাকেও রেখেছিল সীমাবদ্ধ করে। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা তখনও চালু হয়নি। সভ্যতার পত্তনের পরে যখন নয়া নয়া প্রযুক্তির উদ্ভাবন হচ্ছে এবং সে প্রযুক্তি চালানোর জন্য জ্ঞানের প্রয়োজন অনুভূত হচ্ছিলো ঠিক তখনই প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা অর্থাৎ প্রতিষ্ঠান নির্ভর শিক্ষার প্রয়োজন দেখা দিলো। সুতরাং একথা মানতে হবে, শিক্ষা শুধু প্রাতিষ্ঠানিক নয়, অপ্রাতিষ্ঠানিকও বটে। গরু ও লাঙ্গল নিয়ে জমি চাষ করবার শিক্ষা কখনোই প্রাতিষ্ঠানিক ছিলোনা। কিন্তু ধানের ফলন বাড়ানো ও দুই ফসলী থেকে তিন ফসলী করবার প্রযুক্তির শিক্ষাকে প্রাতিষ্ঠানিক হতেই হয়।

মানুষের সবচে‘ বড় সমস্যা হলো প্রকৃতি। প্রকৃতির ঝড়, ঝঞ্ছা, ভূমিকম্পের কোন কারণ না জানায়, কল্পনায় শক্তিকে পূজা করতে শুরু করে। কল্পনাকে ভিত্তি করে, প্রথমে জীবন ও জগতের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে দর্শনের চর্চা শুরু হয়, পরে দর্শনের আলোচনায় যুক্ত হয়, যুক্তিশাস্ত্র। এই শাস্ত্রের চর্চা প্রথমে অপ্রাতিষ্ঠানিক থাকলেও সভ্যতার সূচনার পরেই প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পায়।বিশেষ করে গ্রীক সভ্যতায়। তো প্রশ্ন হলো, বিজ্ঞান না মানববিদ্যা শিক্ষায় প্রথমে দৃষ্ট।

প্রথমেই উল্লেখ করা হয়েছে, মানুষ প্রকৃতির নিয়ম জেনে, প্রকৃতিকে বদলানোর সামর্থ্যই, শিক্ষা গ্রহণের বড় কারণ। প্রকৃতির নিয়ম জানাটাই শিক্ষা। আবার প্রকৃতিকে বদলানোর জন্য প্রযুক্তির ব্যবহারের জ্ঞান আহরণও শিক্ষা। এর সাথে প্রকৃতিকে বুঝতে না পারার প্রাথমিক ফল হলো দর্শনের উদ্ভব। পৃথিবীকে বদলানোর অভিপ্রায় থেকেই মূলত শিক্ষার উদ্ভব। প্রাণী জগতের অন্য কোন প্রাণী পৃথিবী বদলানোর কাজটি করতে পারেনা। শিক্ষা গ্রহণের বিষয়টি সব প্রাণীরই আছে, তবে তা শুধুমাত্র খাদ্য সংগ্রহের জন্য, খাদ্য উৎপাদনের জন্য নয়, অর্থাৎ প্রকৃতি পরিবর্তনের জন্য নয়।

মানুষ খাদ্য উৎপাদকে পরিণত হওয়ায় বা বলা যায় খাদ্য উৎপাদন ও বণ্টনের সামর্থ্য অর্জন করায় শিক্ষার প্রতিষ্ঠানগত সূচনা। সহজ কথায় মানুষ অর্থনৈতিক প্রাণী হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাওয়ায়, উৎপাদন ও বণ্টনে নিয়মনিষ্ঠ হতে হয়। সম্পত্তির মালিকানা ব্যক্তিগত পর্যায়ে হওয়াতে, কোন সম্পদশালী ব্যক্তির মৃত্যুর পরে উত্তরাধিকারী নির্বাচনের জন্য এলো পরিবার, এলো বিবাহ নামের প্রতিষ্ঠান। পরিবার ও অন্যান্য সংগঠনের সদস্যদের আচরণ শৃঙ্খলার মাঝে থাকার জন্য এলো নর্ম, মূল্যবোধ, আইনকানুন ইত্যাদি। এর জন্য দরকার চূড়ান্ত কর্তৃত্বের। রাষ্ট্র এলো, সর্বোচ্চ কর্তৃত্ব হিসেবে। মানব আচরণের নির্ণায়ক হিসেবে পাঠের বিষয় হলো নীতিশাস্ত্র।এর আগে মানুষের অর্থনীতিক প্রাণীতে রূপান্তরিত হওয়ার পরে এলো অর্থশাস্ত্র। রাষ্ট্র কেন, রাষ্ট্রের দায়িত্ব কি, রাষ্ট্র সৃষ্টির কারণ ইত্যাদির অনুসন্ধানে এলো রাষ্ট্রবিজ্ঞান। অন্যদিকে জমিতে মাপজোখের জন্য জ্যামিতি, অংকশাস্ত্র এলো। লক্ষ্য করবার বিষয় শিক্ষার বিষয়গুলোর একই সাথে আবির্ভাব হয়নি। সমাজ আর অর্থনীতির পরিবর্তনের কোন এক মুহূর্তে , সমাজ কোন বিষয়ে জ্ঞানের অভাব অনুভব করলে সে বিষয়ের শাস্ত্রীয় চর্চা শুরু হয়। এভাবেই সময়ের পরিক্রমায় শিক্ষার বিষয়গুলো উদ্ভব হতে থাকে। মোদ্দা কথায়, এমন সিদ্ধান্তে আমরা পৌঁছুতে পারি যে,মানুষ অর্থনৈতিক কার্যাবলী শুরুর সাথে সাথে শুরু হয় শিক্ষার আনুষ্ঠানিকতার এবং মানবিক ও বিজ্ঞান শিক্ষা হাত ধরাধরি করেই চলে। কোনটি আগে আবার কোনটি পরে অথবা কোনটির বেশি গুরুত্ব তার বিতর্ক গ্রেফ মূর্খামি হিসেবেই বিবেচিত হতে পারে।

মানুষ সংঘবদ্ধ না হলে সমাজ হতনা। আর সংঘবদ্ধ হওয়ার কাজটি করে পরিবার, স্কুল, কলেজ, ব্যাংক, ইনস্যুরেন্স কোম্পানী, সরকার, রাষ্ট্র ও আইনকানুন, ধর্ম, নীতি-. নৈতিকতা ইত্যাদি। এগুলোর দরকার পরিবর্তিত অবস্থায় সামাজিক চাহিদা মেটানোর জন্য। পরিবর্তন আর সামাজিক চাহিদা তৈরি হয় প্রযুক্তির উদ্ভাবন ও এর প্রয়োগের মধ্যে। প্রযুক্তির প্রয়োগ ও এর ফলে সামাজিক ব্যবস্থার পরিবর্তন নয়া জ্ঞানের বিষয় নিয়ে আসে। এই যেমন জ্বালানী শক্তির কথাই যদি ধরি, মানুষের শক্তির প্রাথমিক উৎস আগুনের আবিষ্কারের সাথে সভ্যতার উন্মেষ ঘটে।কয়লা জ্বালানীর উৎস। একে একে গ্যাস, তেল, বিদ্যুৎ, সৌর, পারমাণবিক, সমুদ্রের ঢেউ, উইন্ডমিল ইত্যাদির উদ্ভাবন না হলে সমাজ চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছুতনা। তো জ্বালানীর ব্যবহার মূলত প্রযুক্তি নির্ভর। খবংষরব ডযরঃব এর উল্লিখিত মত মূলত প্রযুক্তি নির্ভরতাকেই নির্দেশ করে। তিনি তাঁর তত্ত্বকে সূত্রবদ্ধ করেন ঈ >ঊ ী ঞ, অর্থ হলো ঈ(ঈঁষঃঁৎব) এর পরিবর্তন হয় ঊহবৎমু বা শক্তির উৎসের আবিষ্কার ও ঞবপযহড়ষড়মু বা প্রযুক্তির পরিবর্তনের সাথে সঙ্গতি রেখে। মানুষের সৃষ্ট সবকিছুই সংস্কৃতি। সমাজ আসলে সংস্কৃতির সমাহার। যে দর্শনশাস্ত্রের কথা আগে বলা হয়েছে তা ও সংস্কৃতি, কারণ শাস্ত্রটাও মানুষের সৃষ্টি। এমনকি বিজ্ঞানও সংস্কৃতি। প্রযুক্তির পরিবর্তনের সাথে সংস্কৃতি বা সমাজের পরিবর্তনের সম্পর্ক আছে। মানেটা হলো উন্নয়ন ও প্রযুক্তি একে অন্যের উপর নির্ভরশীল। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয় এক নয়।

বিজ্ঞান হলো প্রকৃতি বা সামাজিক জীবনে ঘটে যাওয়া যে কোন ঘটনার এক বা একাধিক কারণ জ্ঞাত হওয়া এবং কার্যকারণ সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করা। যে সহজ উদাহরণ সবসময়ে বলা হয় তা হলো, গাছ থেকে ফল ছিঁড়ে গেলে মাটিতে পড়া একটি ঘটনা এবং এর কারণ মাধ্যাকর্ষণ শক্তিএই দুই চলকের মধ্যে সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করাই বিজ্ঞানের কাজ। এইভাবে বিজ্ঞানের তত্ত্ব প্রতিষ্ঠা পায়। শুধু জ্ঞানের জন্য জ্ঞান নয়, প্রকৃতি ও সমাজ পরিবর্তনে এর প্রয়োগের জন্যই এই জ্ঞান। কিন্তু এই জ্ঞানের প্রয়োগ হয় কি ভাবে? প্রযুক্তি কেবলই প্রযুক্তির সাহায্যে। পাথরে, পাথরে ঘষে আগুন জ্বালাতে হয়, এই ধারণা বিজ্ঞান। পাথর হলো প্রযুক্তি। আগুনে পুড়িয়ে লোহাকে বিশেষ আকৃতি দেয়া যায়, এ হলো বিশেষায়িত জ্ঞান আর এই বিশেষায়িত জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে লাঙ্গলের ফলা হলো প্রযুক্তি। কৃষি সভ্যতার পত্তনে শুধু আগুনের ব্যবহারের জ্ঞান থাকলেই হবেনা, প্রয়োজন লাঙ্গলের। লাঙ্গল হলোপ্রযুক্তি। সুতরাং দুনিয়া আর সমাজ বদলানোর উপায় হচ্ছে, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির কোন প্রয়োজন হতনা যদি না আমরা সমাজবদ্ধ হতাম। একটা সামাজিক সম্পর্কে আছি বলেই, জীবন বদলানোর উপায় পেয়েছে , মানব সমাজ। এই সামাজিক সম্পর্ক বদলায় প্রযুক্তি বদলের সাথে সাথে, আরো বদলায় রাষ্ট্র, অর্থনীতি, মানুষের সামাজিক মনস্তাত্ত্বিক অবস্থা। ফলে এ বিষয়ের শাস্ত্র যেমন, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, অর্থনীতিও পাঠের প্রয়োজন প্রযুক্তির সাথে তাল রেখে। উৎপাদন ও বণ্টন না থাকলে, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রয়োজন অনুভূত হতনা। অর্থশাস্ত্রের গতিপ্রকৃতি না জানলে, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রকৃতি ও অবস্থাও জানা যাবেনা। আসলে মানবিক বিদ্যা ও বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষা হাত ধরাধরি করে চলে। এজন্য কোথাও বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির শিক্ষার কথা বলা হলে একথা মানতে হবে, মানবিক বিদ্যাও এখানে পরিবর্তনের বাহনে চালকের আসনে।

আমাদের সমাজে উৎপাদনের জন্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির জ্ঞান যেমন প্রয়োজন তেমনি বণ্টন ও মানবিক সম্পকের্র বিশেষায়িত জ্ঞান ও দরকার। বাণিজ্য ও অর্থব্যবস্থা সব জ্ঞানের মৌলিক উৎসমূল। বলা হয়,ুঊপড়হড়সরপং, নঁংরহবংং ধহফ পড়সসবৎপরধষ ধপঃরারঃরবং ধৎব ঃযব ষরভবনষড়ড়ফ ড়ভ ধষষ ড়ঃযবৎ ংড়পরধষ ধপঃরারঃরবংচ বা ুঅর্থনীতি, ব্যবসা এবং বাণিজ্য সব কর্মকাণ্ডের জীবনীশক্তিচ।

বাংলাদেশ ও এর অর্থনীতি দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে। এই পরিবর্তনে রপ্তানী বাণিজ্য বিশাল ভূমিকা রাখে। বাণিজ্য নিভর্র সমস্ত জ্ঞান যেমন রপ্তানীকে সচল রাখতে প্রয়োজন ঠিক তেমনি যেসব পণ্য রপ্তানী করা হয়, সেসব পণ্যের গুণগত মান বজায় রাখতে হয়। এজন্য উৎপাদনে ব্যবহৃত প্রযুক্তি শিক্ষা বিশেষভাবে প্রয়োজন।

মানুষের মৌলিক চাহিদার দ্বিতীয়টি হচ্ছে বস্ত্র। খাদ্য সংগ্রহের কালেই, গাছের পাতা, বাকল দিয়ে শরীর ঢেকে রাখার রেওয়াজ চালু হয়। যখন মানুষ উৎপাদক হলো, তখন বস্ত্রও উৎপাদনের এক ভোগ্য পণ্যে রূপান্তরিত হয়। সমাজ আর অর্থব্যবস্থা পরিবর্তনের সাথে সাথে মানুষের রুচির পরিবর্তন হয়। ফলে বস্ত্রের ডিজাইন, বস্ত্র উৎপাদনে বিশেষ ভূমিকা রাখে। পোশাক বা বস্ত্র ধর্মীয় বিধি, ভৌগলিক প্রকৃতি ও পেশার কারণে ভিন্ন ভিন্ন রূপে দেখা যায়। আবার আভিজাত্য ও রাজকীয় কারণেও পোশাকের ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়। এসব কারণে শিল্প সমাজে ফ্যাশন ও ডিজাইন এক নান্দনিক বিষয়ে পরিণত হয়। অল্প সময়ে প্রযুক্তির সহায়তায় বস্ত্র বা পোশাক উৎপাদনে ও এর রুচি নিভর্র ডিজাইনর জ্ঞান প্রয়োজন। নান্দনিকতা এক মানবিক বিদ্যা। বস্ত্রের ফ্যাশন ডিজাইনে প্রযুক্তি ও মানবের রুচিবোধ দুইই জানা প্রয়োজন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বাংলদেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে আমাদের পোশাক ও পোশাক জাতীয় পণ্য এক বিশেষ ভূমিকা পালন করে। ফলে এই সেক্টরের চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীবৃন্দ প্রযুক্তি নির্ভর শিক্ষিত জনবল যোগানের জন্য এর আগে প্রতিষ্ঠিত জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে (ঈইওঋঞ) বিশেষায়িত করবার জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নেন। এর ফলেই বস্ত্র,বস্ত্রবাণিজ্য ও ফ্যাশন ডিজাইন এর জ্ঞান সমৃদ্ধ “চট্টগ্রাম বি জি এম ই এ ইউনিভার্সিটি অফ ফ্যাশন এন্ড টেকনোলজি” এর প্রতিষ্ঠা। এই বিশ্ববিদ্যালয় যদিও বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি নির্ভর শিক্ষা প্রচারের জন্য প্রতিষ্ঠিত তথাপি প্রযুক্তি মানুষের প্রয়োজনবোধ থেকে উদ্ভূত। আর প্রয়োজনের বড় অংশই দখল করে আছে মানুষের মানবিক আচরণের দিকগুলো। ইউরোপে শিল্প বিপ্লব যা আসলে এক প্রযুক্তি বিপ্লব তা সামন্ত অর্থনীতি ভেঙে দিয়েছিলো, রাজনৈতিক ব্যবস্থায় রাজতন্ত্র বিলুপ্ত করে নিয়ে এসেছিলো গণতন্ত্র, এই উদাহরণ প্রযুক্তির সাথে মানববিদ্যার গভীর সম্পর্ক দেখায়। আর তাই বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মানবিক ও বাণিজ্য বিষয়ও সমান্তরালভাবে পাঠদান হচ্ছে। আর এই বিশেষ দিককে লক্ষ্য রেখে এই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও (ট্রাস্টি বোর্ড)সহসাই বাণিজ্য ও মানববিদ্যা নিভর্র পাঠদানের উদ্যোগ নিচ্ছেন।

মানববিদ্যাকে পেছনে রেখে, প্রযুক্তিবিদ্যা বেশিদূর এগুতে পারেনা,আবার মানববিদ্যাও প্রযুক্তিবিদ্যাকে পেছনে ফেলে সামনে যেতে পারেনা। এই দুইয়ের অগ্রগমন প্রায় সমান্তরাল। এই বিষয় উপলব্ধিতে নিয়ে শিক্ষাবিদদের শিক্ষা পরিকল্পনা করা উচিত।

লেখক : সমাজবিজ্ঞানী; উপাচার্য, চট্টগ্রাম বি জি এম ই এ ইউনিভার্সিটি অব ফ্যাশন এন্ড টেকনোলজি, চট্টগ্রাম।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবঙ্গবন্ধু ছিলেন গবেষকদের প্রেরণার উৎস
পরবর্তী নিবন্ধবহমান সময়