শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সেবায় অনন্য বিজিসি ট্রাস্ট

হাবীবুর রহমান | মঙ্গলবার , ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ at ১০:৪৭ পূর্বাহ্ণ

শিক্ষা দানের পাশাপাশি স্বাস্থ্য সেবা, একই সাথে দুই কাজই করে যাচ্ছেন বিজিসি ট্রাস্ট বা বেগম গুল চেমন আরা ট্রাস্ট। বিজিসি বিদ্যানগর হিসেবেও পরিচিত দক্ষিণ চট্টগ্রামের চন্দনাইশের এই বিদ্যাপীঠ। ১৯৮২ সালে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠাতা মুক্তিযুদ্ধকালীন চট্টগ্রাম শহর মুজিবাহিনী ও মুক্তিবাহিনীর যৌথ কমান্ডার সাবেক সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা বিজিসি ট্রাস্টের বোর্ড অব ট্রাস্টির চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার আফছার উদ্দিন আহমেদ। মামাটিমানুষমাতৃভাষার প্রতি মমত্ব ও দায়িত্ববোধ থেকে তিনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠা করেন। ১০০ একর নিজস্ব ভূমির উপর আলো ছড়াতে থাকা ট্রাস্ট শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সেবামূলক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছে। এরমধ্যে রয়েছেবিজিসি বিদ্যানগরে বিজিসি ট্রাস্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ, বিজিসি ট্রাস্ট মেডিকেল কলেজ, বিজিসি একাডেমী (স্কুল এন্ড কলেজ), বেগম চেমন আরা কলেজ অব নার্সিং, মাওলানা মুহাম্মদ ইছহাক শিশু নিকেতন, বিজিসি ট্রাস্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।

শুরু থেকেই প্রতিষ্ঠানটি নিজম্ব ক্যাম্পাসে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। গ্রামীণ পরিবেশে অবস্থিত হলেও রয়েছে পর্যাপ্ত আধুনিক সুযোগসুবিধা। ক্যাম্পাস ভবনে ওয়াই ফাই সুবিধা, মাল্টিমিডিয়া ক্লাশরুম, সেমিনার হল, এবং নিরাপত্তার জন্য সার্বক্ষণিক সিসিটিভি ক্যামেরা রয়েছে। কোর্স ক্যারিকুলামের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ আধুনিক যন্ত্রপাতি সমৃদ্ধ সুপরিসর ল্যাবরেটরী রয়েছে। রয়েছে খেলার মাঠ, লেক, বিশাল শহীদ মিনার ও বঙ্গবন্ধু ফ্রিডম স্কোয়ার। বিজিসি ট্রাস্ট ২০০১ সালে অনুমোদন লাভের পর থেকে মানসম্পন্ন ও যুগোপযোগী উচ্চ শিক্ষা প্রদানের মাধ্যমে দক্ষ মানব সম্পদ উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েটরা ইতোমধ্যে দেশ বিদেশে সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন।

অনেকেই বিদেশে উচ্চ শিক্ষায় নিয়োজিত আছেন। বিশ্ববিদ্যালয়টির সহকারী রেজিস্ট্রার সালাউদ্দিন শাহরিয়ার জানান, উচ্চ শিক্ষা সুবিধা বঞ্চিত মানুষের কাছে মান সম্পন্ন শিক্ষা পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে বিজিসি ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আমাদের বৈশিষ্ট হচ্ছে, বিজিসি ট্রাস্ট ইউনিভার্সিটি গ্রামে প্রতিষ্ঠিত একমাত্র বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। চট্টগ্রাম শহর থেকে যাতায়াতের জন্য ফ্রি ট্রান্সপোর্ট রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম অটোমেশন করা হয়েছে। যার ফলে শিক্ষার্থীরা অনলাইনে লগইন করে নিজ নিজ ফলাফল, টিউশন ফি পরিশোধের তথ্য জানতে পারছে। ইন্টিগ্রেটেড ইউনিভার্সিটি ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার এর মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষার ফলাফল ছাড়াও লাইব্রেরী, মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনাসহ সার্বিক কার্যক্রম উক্ত সফটওয়্যারের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে। আমাদের প্রত্যাশা থাকে, মান সম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করণের মাধ্যমে এ বিশ্ববিদ্যালয় তার অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জনে সক্ষম হবে এবং চট্টগ্রামে শিক্ষার প্রসারে অবদান রেখে যাবে।

বিজিসি ট্রাস্টে মোট তিনটি অনুষদ রয়েছেব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ, বিজ্ঞান অনুষদ ও কলা অনুষদ। তিন অনুষদের অধীনে বিবিএ, এমবিএ, বিএ (অনার্স) ইন ইংলিশ, এমএ ইন ইংলিশ, বি ফার্ম (অনার্স), বিএসসি (অনার্স) ইন কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, এলএলবি (অনার্স), বিএসএস (অনার্স) জার্নালিজম এন্ড মিডিয়া স্টাডিজ ও মাস্টার্স অব পাবলিক হেলথ কোর্স। বিশ্ববিদ্যালয়টির বিশেষ বৈশিষ্ট হচ্ছেঅন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় টিউশন ফি কম। মাসিক কিস্তি পরিশোধের মাধ্যমে টিউশন ফি প্রদানের সুবিধা রয়েছে। এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষার মেধার ফলাফলের ভিত্তিতে বৃত্তি প্রদান ও মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য ১০০% পর্যন্ত টিউশন ফি মওকুফ সুবিধা রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের রয়েছে ২০ হাজারেরও অধিক বই ও দেশীবিদেশী জার্নাল সমৃদ্ধ এ লাইব্রেরী। এছাড়া শিক্ষার্থীদের ও শিক্ষকমণ্ডলীর শিক্ষা ও গবেষণার সুযোগ বৃদ্ধির জন্য ইউজিসি ডিজিটাল লাইব্রেরীর সদস্যভূক্ত করা হয়েছে, যার মাধ্যমে দেশী বিদেশী অসংখ্যই জার্নাল ও ইবুক অনলাইন এঙেস করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের মেধাবিকাশ ও দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য কোর্স ক্যারিকুলামের বাইরেও বিভিন্ন কার্যক্রম উৎসাহিত করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়সূত্র জানায়, ২০১৮ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ক্যাম্পাসে বঙ্গবন্ধু ফ্রিডম স্কোয়ারে প্রথম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়। এতে ৭ হাজার ৩৭৭ জন শিক্ষার্থী সনদ অর্জন করে এবং মোট ১৩ জন গ্র্যাজুয়েটকে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে স্বর্ণ পদক প্রদান করা হয়। আগামী ৯ই সেপ্টেম্বর২০২৩ তারিখে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ক্যাম্পাসে বঙ্গবন্ধু ফ্রিডম স্কোয়ারে দ্বিতীয় সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রায় ৫ হাজার শিক্ষার্থীকে সনদ প্রদান করা হবে। যার মধ্যে ১৫ জন গ্র্যাজুয়েটকে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে স্বর্ণ পদক প্রদান করা হবে। দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রামে শিক্ষার প্রসারে অবদান রেখে চলা বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য পদে দায়িত্ব পালন করছেন প্রফেসর ড. এএফএম আওরঙ্গজেব।

লেখক : স্টাফ রিপোর্টার, দৈনিক আজাদী

পূর্ববর্তী নিবন্ধচট্টগ্রাম জেলা পরিষদ : চট্টগ্রামের উন্নয়নের অংশীদার
পরবর্তী নিবন্ধআবাসন খাতে আস্থা ও নির্ভরতায় সিপিডিএল