বাংলাদেশ এলিমেন্টারী স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা ও অধ্যক্ষ মিসেস নাদেরা বানু বেগম আর নেই। গতকাল বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) সকালে তিনি ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮১ বছর। তিনি ৩ কন্যা ও ১ পুত্রসন্তানসহ অসংখ্য আত্মীয় স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে যান।
পারিবারিক সূত্র জানিয়েছে, তিনি বেশ কিছুদিন যাবত বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন। আজ শুক্রবার বাদ আছর জমিয়তুল ফালাহ জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে মরহুমার নামাজে জানাজা এবং পরে হযরত গরীবুল্লাহ শাহ (র.) মাজার প্রাঙ্গণস্থ কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।
নাদেরা বানু বেগমের মৃত্যুর খবরে তাঁর গড়া বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবক এবং প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে আসে। শিক্ষকতা জীবনের শুরুতে তিনি দীর্ঘদিন বাংলাদেশ মহিলা সমিতি উচ্চ বিদ্যালয়ে (বাওয়া স্কুল) শিক্ষকতা করেন। বাওয়া স্কুলের শায়লা টিচার নামে ব্যাপক পরিচিতি এবং জনপ্রিয়তা ছিল এই শিক্ষাবিদের।
নাদেরা বানু বেগম ছিলেন দেশের প্রাথমিক শিক্ষায় এক নিবেদিত প্রাণ সংগঠক ও পথিকৃৎ। তিনি শুধু একজন স্কুল প্রতিষ্ঠাতা নন বরং একজন স্বপ্নদ্রষ্টা, যিনি বিশ্বাস করতেন মানবিক মূল্যবোধের ভিত্তিতে শিক্ষার মাধ্যমে সমাজে পরিবর্তন আনা সম্ভব। তাঁর হাত ধরেই ১৯৯৫ সালে চট্টগ্রামের প্রাণকেন্দ্রে প্রতিষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ এলিমেন্টারী স্কুল। এই ব্যতিক্রমধর্মী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, যেখানে পাঠ্যবইয়ের বাইরেও শিশুদের মধ্যে মানবিকতা, সৃজনশীলতা এবং নেতৃত্বের বীজ বপন করা হয়।
নাদেরা বানু বেগম ১৯৪৪ সালে কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। দেশের স্বাধীনতা লাভের পর তিনি চট্টগ্রামে চলে আসেন এবং পরবর্তীতে বাংলাদেশ মহিলা সমিতি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা পেশায় যোগ দেন। সেখানে অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে দীর্ঘ ২৮ বছর শিক্ষকতার চাকরি শেষে শিশুদের মানবিক ও নৈতিক চেতনায় গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ এলিমেন্টারী স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। যা আজ নগরীর অন্যতম শীর্ষস্থানীয় স্কুল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত।