খাগড়াছড়ির মাটিরাঙায় হল রুমে নিকাব পরে পরীক্ষায় বসতে না পারার ঘটনায় ক্ষমা চেয়েছেন মাটিরাঙা সরকারি ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ ও পরীক্ষার কেন্দ্র সচিব কামাল হোসেন মজুমদার। গতকাল রোববার সকালে মাটিরাঙায় সেনা জোনের আয়োজনে এক জরুরি সভায় তিনি শিক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্ট সবার কাছে ক্ষমা চান। এ সময় তিনি বলেন, ‘শুক্রবার পরীক্ষার হলে শিক্ষার্থী উম্মে আন্জুমানয়ারার সাথে যে ঘটনা ঘটেছে তার জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত। শিক্ষার্থীসহ অন্যান্য যারা রয়েছেন তাদের কাছে আমি ক্ষমা প্রার্থনা করছি। কথা
দিচ্ছি ভবিষ্যতে আমি ধর্মীয় মূল্যবোধকে বজায় রাখব। সরকার আমাকে যতদিন দায়িত্বে রাখবে ততদিন আমার দায়িত্ব পালন করার চেষ্টা করব। আপনারা আমাকে ক্ষমা করে দিবেন এটুকু আমার অনুরোধ।’
এসময় হল রুমে দায়িত্বে থাকা আরেক শিক্ষক সহযোগী অধ্যাপক আবুল হোসেনও নিজের দোষ স্বীকার করে সবার কাছে আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেন এবং ক্ষমা চান।’
উক্ত সভায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী উম্মে আন্জুমানয়ারা, মাটিরাঙা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মনজুর আলম, মাটিরাঙা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. তৌফিকুল ইসলামসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, আলেম সমাজের প্রতিনিধি, পার্বত্য নারী সংহতির আহ্বায়ক শাহেনা আক্তারসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।
শিক্ষার্থী উম্মে আন্জুমানয়ারা বলেন, ‘যেহেতু উনারা আমার শিক্ষক এবং ক্ষমা চেয়েছেন সেজন্য সবাইকে অনুরোধ করব বিষয়টি নিয়ে যেন আর কোনো ঝামেলা না হয়। আপনার সবাই আমার পাশে ছিলেন সেজন্য আপনাদের সবাইকে ধন্যবাদ।’
খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান বলেন, ‘অধ্যক্ষ সবার কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। একই সাথে তাকে বদলি করার জন্য সুপারিশও করা হয়েছে। আমরা এখনো লিখিত কোনো আবেদন পাইনি। তবে তাকে বদলি করার জন্য আমি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিবের সাথে কথা বলেছি।’
প্রসঙ্গত, শুক্রবার বিকেলে মাটিরাঙা সরকারি ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ( বাউবি) সমাজতত্ত্ব পরীক্ষার দিন নেকাব না খোলায় পরীক্ষা দিতে পারে নাই বলে অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থী উম্মে আন্জুমানয়ারা। শনিবার ওই শিক্ষার্থী ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিলে বিষয়টি দ্রুত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে এবং অনেকে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানান।