শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে হবে দুর্গাপূজা

আইন-শৃঙ্খলা সভায় জেলা প্রশাসক

| বুধবার , ৯ অক্টোবর, ২০২৪ at ৬:১২ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম বলেছেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজা অত্যন্ত সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে সম্পন্ন করা হবে। বর্তমান আন্তর্বর্তী সরকার এ বিষয়টিকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছে। এজন্য আমরা এ পূজাকে চ্যালেঞ্জ মনে করছি না, আমরা একটি ফেস্টিভ মুডে আছি। জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে আমরা যারা কোর কমিটিতে সদস্যবৃন্দ আছি, আমরা চাই আপনাদের সাথে সমান তালে আনন্দ উপভোগের মাধ্যমে শারদীয় দুর্গাপূজা সার্বজনীন উৎসবে পরিণত হোক।

শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১১টায় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন কর্তৃক সার্কিট হাউজের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত আইনশৃঙ্খলা রক্ষা সংক্রান্ত বিশেষ সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, শারদীয় দুর্গাপূজা অত্যন্ত সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে প্রশাসনের উপর অনেক দায়িত্ব রয়েছে। তাই আমরা অনেক সাবধানে থাকবো, সতর্ক থাকবো। আমাদের একটি চমৎকার টিম রয়েছে। দুর্গাপূজা ঘিরে কোথাও ছোট ছোট বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটলে বা ফেসবুক ও অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব ছড়ালে তা আমাদেরকে জানালে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। প্রত্যেক পূজা মণ্ডপে আজকের মধ্যেই সিসি ক্যামেরা স্থাপন নিশ্চিত করতে হবে। পূজা সংক্রান্তে যে কোন বিষয়ে অবহিত করতে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কন্ট্রোল রুম থাকবে।

ডিসি বলেন, সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী পূজায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর অবস্থানে থাকবে। পূজার ষষ্ঠী থেকে বিজয়া দশমী পর্যন্ত সময়ে সার্বিক নিরাপত্তায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়োজিত থাকবে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় পূজা চলাকালীন শুধুমাত্র আযান ও নামাজের সময় উচ্চস্বরে বাদ্যযন্ত্র বাজানো থেকে বিরত থাকতে হবে। প্রত্যেক পূজা মন্ডপে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে আনসার সদস্য নিয়োজিত থাকবে। সেনাবাহিনী, পুলিশ ও বিজিবি পূজা মন্ডপের নিরাপত্তায় টহল দেবে। পূজায় বিদ্যুতের বিকল্প হিসেবে জেনারেটর প্রস্তুত রাখতে হবে। নারীপুরুষ যাতে সুশৃঙ্খলভাবে পূজা মন্ডপে যাতায়াত করতে পারে সে বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে। সকলের মাঝে ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় থাকুক এটাই আমাদের সকলের প্রত্যাশা।

সভায় জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) রায়হান উদ্দিন খান বলেন, সার্বজনীন শারদীয় দুর্গাপূজা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সম্পন্ন করতে পুলিশের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। পূজার সার্বিক নিরাপত্তায় প্রত্যেক মন্ডপে সিসি ক্যামেরা স্থাপন বাধ্যতামূলক। এ ব্যাপারে নো কম্প্রোমাইজড্‌। কারণ সিসি ক্যামেরা সচল থাকলে যে কোন ধরণের অপরাধ সনাক্ত করা সম্ভব। প্রত্যেক মন্ডপে রেজিষ্টার খাতা রাখতে হবে, যাতে পূজায় আগতরা তাদের নিজস্ব মতামত তুলে ধরতে পারে। অধিক ঝুঁকিপূর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ পূজা মন্ডপগুলোতে নজরদারী বৃদ্ধি করা হবে। সার্বজনীন এ উৎসব যাতে নির্ভয়ে ও নির্বিঘ্নে পালন করতে পারে সে ব্যাপারে সময়োপযোগী উদ্যোগ নেয়া হয়েছে, কোন ভয় নেই। উপকূলীয় এলাকাগুলোর পূজা মন্ডপের সার্বিক নিরাপত্তায় পুলিশের পাশাপাশি কোস্টগার্ড নিয়োজিত থাকবে। শুরু থেকে পূজা মন্ডপগুলোর সার্বিক অবস্থা কী তা জানাতে প্রত্যেক থানার অফিসার ইনচার্জদেরকে এলাকা পরিদর্শনের নির্দেশ দেন পুলিশ সুপার।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এল.) একেএম গোলাম মোর্শেদ খান জানান, চট্টগ্রাম মহানগর ও জেলায় এবার ২ হাজার ৪৫৮টি মন্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। তন্মধ্যে মহানগরে ২৯৩টি ও জেলার ১৫ উপজেলায় ২ হাজার ১৬৫টি।

জেলা প্রশাসক ফরিদা খানমের সভাপতিত্বে ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এল.) .কে.এম গোলাম মোর্শেদের সঞ্চালনায় সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. শরীফ উদ্দিন, ডিজিএফআই’র উপপরিচারক কাজী রাজীব রুবায়েত, এনএসআই’র যুগ্ম পরিচালক শাহ সুফি নুর নবী সরকার, এনএসআই’র মেট্টোর উপপরিচালক নূর মোহাম্মদ, সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভশনের ক্যাপ্টেন গালিব, ১০ পদাতিক ডিভিশনের প্রতিনিধি মেজর ইখতিয়ার উদ্দীন, নৌ অঞ্চলের কমান্ডার এস.এম জাহিদ হোসেন, বিজিবি’র সহকারী পরিচালক মফিজুল ইসলাম, কোস্টগার্ড কমান্ডার মো. জাহিদ, আনসার ভিডিপির জেলা কমান্ড্যান্ট মো. আবু সোলায়মান, সিএমপি’র অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (অপস্‌) বাবুল চন্দ্র বণিক, র‌্যাবের এএসপি মো. ইকবাল, শ্রীশী পুন্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী, মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি লায়ন আশীষ কুমার ভট্টাচার্য্য, সাধারণ সম্পাদক হিল্লোল সেন উজ্জ্বল প্রমুখ। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধভারত সিরিজ দিয়েই টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ার শেষ মাহমুদউল্লাহর
পরবর্তী নিবন্ধশারদীয় দুর্গোৎসব শুরু আজ মহাষষ্ঠী